নতুন বই উপহার পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
Published: 10th, May 2025 GMT
কারও চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, কাউকে দেখতে ভাবুক। কেউ নতুন বই পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত। সব মিলিয়ে গতকাল শুক্রবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ মুখর ছিল এসব বই পড়ুয়া শিশুর পদচারণায়।
তারা এসেছিল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোনের যৌথ উদ্যোগে বই পড়া কর্মসূচিতে পুরস্কার বিতরণ উৎসবে। ঢাকা মহানগরের ৫ হাজার ৯৪ শিক্ষার্থীর হাতে এবার পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এজন্য আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে চলে অনুষ্ঠান। গতকাল জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দুই দিনব্যাপী এই পুরস্কার বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উৎসবে অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী ও সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী নকী, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ, জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ ও অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন সুমনের সঞ্চালনায় আয়োজনে অতিথিরা বিজয়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, পাঠ্যবই মানে চাকরির বৈষয়িক উন্নতি। এখানে আলো খুঁজে পাওয়া যায় না। কাজেই পাঠ্যবইয়ের বাইরে পৃথিবীর সেরা লেখকরা যা লিখেছেন, সেটা জানতে হবে। সেখানে আনন্দ খুঁজে বের করতে হবে।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বহু কমিশন গঠন করলেও শিক্ষা সংস্কারে কোনো কমিশন করেনি। সরকার শিক্ষা বৈষম্য দূর করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাই সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষা কাঠামো তৈরি করবে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী নকী বলেন, বই মানুষকে ব্যতিক্রম সব অভিজ্ঞতা ও মোহ উপহার দেয়। যারা বই নিয়ে ঘোরেন, তারা যেন সাজানো বাগান নিয়ে ঘুরে বেড়ান।
উৎসবের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, তরুণদের জ্ঞানের বিকাশ এবং মানসিক উৎকর্ষের জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। তাই আলোকিত মানুষ গড়ার অংশ হিসেবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র যে বই পড়া কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন একটি উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমরাও গর্বিত। তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
উল্লেখ্য, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গত ৪৭ বছর ধরে সারাদেশে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য নানাবিধ উৎকর্ষ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বই পড়া কার্যক্রম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে সারাদেশে এ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ১৪০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় আড়াই লাখ ছাত্রছাত্রী অন্তর্ভুক্ত। বই পড়াকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিপুলসংখ্যক পুরস্কারের ব্যবস্থা। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা মহানগরের ৭৫টি স্কুলের প্রায় ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী বই পড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। এসব স্কুলের ৫ হাজার ৯৪ শিক্ষার্থী মূল্যায়ন পর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে বিজয়ী হয়েছে। বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ হাজার ১৫৭ ছাত্র ও ৩ হাজার ৯৩৭ ছাত্রী। দুই দিনব্যাপী এ পুরস্কার বিতরণ উৎসবে গতকাল ঢাকা মহানগরের ৩১ স্কুলের ২ হাজার ৫৬৩ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে পুরস্কার গ্রহণ করে। আজ শনিবার ৩৪টি স্কুলের ২ হাজার ৫৩১ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে পুরস্কার গ্রহণ করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ প রস ক র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরের লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে চলছে
বন্দরের ঐতিহ্যবাহী লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে মেতে উঠেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। যে খাল দিয়ে এক সময় শীতলক্ষা-বহ্মপুত্র নদীতে সংযোগ ছিল।
সেই ঐতিহ্যবাহী খালটি অবৈধভাবে দখল করে পাঁকা স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছে ওই সকল ভূমিদস্যুরা।
খালটি দখল হয়ে যাওয়ার কারনে পয়নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয়রা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উল্লেখিত খাল দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা ।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদ ও সানাউল্লাহ সানু এবং বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিনের মদদপুষ্ট হয়ে আদর্শ বিদ্যানিকেতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে খাল দখল করে রাস্তা বানিয়েছে।
তেমনি ভাবে গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া খালটি ভরাট করার কারনে বন্দর ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের কদমতলীসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ড্রেজার দিয়ে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি ভরাট করতে গিয়ে সরকারি খাল দখল করে নিয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।
বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন সৈকত জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুদের কর্তৃক দখলকৃত খালটি উদ্ধার করে পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।