এপ্রিলে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলারে দুর্ঘটনায় নিহত সবচেয়ে বেশি: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
Published: 11th, May 2025 GMT
দেশে গত এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল ও থ্রি–হুইলারে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এপ্রিলে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৮ জন নিহত এবং ১ হাজার ১২৪ জন আহত হয়েছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এপ্রিল মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তারা জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে ৭টি নৌ দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন এবং ২২টি রেল দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৮৬ জন ও শিশু ৭৮ জন। এ ছাড়া নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এবং থ্রি-হুইলার দুর্ঘটনায় ২০ দশমিক ২৩ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সবচেয়ে বেশি ৩৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে। এরপর আছে জাতীয় সড়ক, গ্রামীণ সড়কসহ অন্যান্য স্থান।
দুর্ঘটনার ধরন সম্পর্কে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, মুখোমুখি সংঘর্ষে এবং চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে সকালে ও রাতে।
বিভাগ হিসেবে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেশি এবং রংপুর ও সিলেট বিভাগে কম। এ সময় রাজধানীতে ৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন। পেশাগত পরিচয়ে সবচেয়ে বেশি ৭৯ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে রোড সেফটি ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কথা বলা হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি এবং চালকদের ‘মোটিভেশনাল’ প্রশিক্ষণ দরকার। যানবাহনের বেপরোয়া গতি এবং পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।
দুর্ঘটনা কমাতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, পরিবহনশ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা এবং সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন য় ব পর য় সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মহত্যায় সহায়তার কথা বলে তরুণীসহ নয়জনকে খুন করেছিলেন ‘টুইটার কিলার’, অবশেষে ফাঁসি
জাপানে ৯ জনকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার তাকাহিরো শিরাইশি নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তিনি ‘টুইটার কিলার’ নামেও পরিচিত। এর মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের পর এই প্রথম জাপানে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।
‘টুইটার কিলার’ নামের কারণ—তাকাহিরো যাঁদের হত্যা করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে টুইটারে (বর্তমান এক্স) তাঁর পরিচয় হয়েছিল। ২০১৭ সালে ওই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। তখন তাকাহিরোর বয়স ছিল ৩০ বছর। হত্যাকাণ্ডের শিকার বেশির ভাগই ছিলেন ১৫ থেকে ২৬ বছর বয়সী তরুণী। নিজের বাসায় ডেকে নিয়ে তাঁদের হত্যা করেছিলেন তাকাহিরো।
এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে ২০১৭ সালের অক্টোবরে। সে সময় তাকাহিরোর হত্যার শিকার এক নারীর সন্ধান করতে গিয়ে টোকিওর কাছে জামা শহরের একটি বাসায় মানুষের শরীরের কিছু অংশ খুঁজে পায় পুলিশ। এরপর তাকাহিরোকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৯ জনকে হত্যার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
তাকাহিরোর জবানবন্দি অনুযায়ী, ওই ৯ জনের আত্মহত্যার প্রবণতা ছিল। টুইটারের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। তাঁদের তাকাহিরো বলেন, তিনি আত্মহত্যা করতে সহায়তা করতে পারবেন। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে হত্যার শিকার ব্যক্তিদের তিনি বলেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে তিনিও নিজেকে হত্যা করবেন।
তাকাহিরোর বিচারের সময় তাঁর আইনজীবীরা আদালতকে বলেছিলেন, ভুক্তভোগীদের সম্মতি নিয়েই তাঁদের হত্যা করেছিলেন তাঁদের মক্কেল। তাকাহিরোর মানসিক অবস্থা পর্যালোচনার আহ্বানও জানিয়েছিলেন তাঁরা। পরে আইনজীবীদের বক্তব্যের বিপরীতে গিয়ে তিনি বলেন, হত্যা করার সময় ভুক্তভোগীদের সম্মতি নেননি তিনি। এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাকাহিরোর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।