স্নাতক কৃষিবিদদের পেশাগত অধিকার রক্ষা ও বৈষম্য দূর করার দাবিতে কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে সোমবার (১২ মে) সকাল ১০টায় তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশ থেকে আন্দোলনকারীরা জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় কৃষি সচিবের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। কৃষি সচিবের সঙ্গে ওই বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হলো। কর্মসূচি অংশ হিসেবে সোমবার সকাল ১০টা থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অনুষদের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

আলোচনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। আলোচনার ফলাফল না আসা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা দেন তারা।

আরো পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না, পোড়া দেহ পড়েছিল পুকুরে

টাঙ্গাইলে সাপের কামড়ে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২

এর আগে, ছয় দফা দাবি আদায়ে সকাল ১০টায় কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি কৃষি অনুষদের করিডোর, ছাত্রী হল সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেআর মার্কেটে পৌঁছায়। সেখান থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসি ও অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১০ম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) পদে কেবলমাত্র স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের নিয়োগ নিশ্চিত করা; ডিএই ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নবম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদবৃদ্ধির নিশ্চয়তা; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে কোটা ব্যবস্থায় বিএডিসিতে নবম গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ বাতিল করা; ১০ম গ্রেডের পদগুলোকে গেজেটবহির্ভূত স্বতন্ত্র পদসোপান কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা; কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে তাদেরকে কেবল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় সীমাবদ্ধ রাখা এবং 'কৃষিবিদ' উপাধি ব্যবহারের বৈধতা কেবলমাত্র স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করা।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “দাবিগুলো নিয়ে আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় কৃষি সচিবের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হবে। আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছি। ফল আমাদের অনুকূলে না এলে সারাবাংলা কৃষিবিদ ব্লকেডের ডাক দেওয়া হবে।”

দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়নি। আমাদের এই ন্যায্য দাবি-আন্দোলনও সফল হবেই। প্রশাসনের কেউ যদি এই আন্দোলন দমন করতে চায়, তাদের জানিয়ে দিচ্ছি, একটি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে হাজারটা অন্যায়ের মুখোমুখি হতে হয়। এখনো সময় আছে, ন্যায়ের পক্ষে আসুন। না হলে জবাবদিহিতার মঞ্চে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন না।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫

ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।

সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।

জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।

সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।

সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ