বাজেট বৈষম্যের প্রতিবাদে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্য সমাবেশ
Published: 12th, May 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটসহ নানা সমস্যা সমাধানে চার দফা দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করেছেন।
সোমবার (১২ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে 'জবি ঐক্য’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘ইউজিসির কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘মন্ত্রণালয়ের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘বাজেটের বৈষম্য মানি না, মানব না’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ানরা জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
৬ দফা আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন বাকৃবি শিক্ষার্থীদের
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না, পোড়া দেহ পড়েছিল পুকুরে
ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বলেন, “আমরা যখন শিক্ষকদের পাশে চাই, অনেক শিক্ষক অবজ্ঞা করেন। এতে আমাদের লজ্জা লাগে। অথচ শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বড় লিডার; এটি মনে রাখা উচিত।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার সভাপতি ইভান তাহসিভ বলেন, “আবাসনের দাবিতে আমি ৮ বছর ধরে লড়ছি। আমার আগের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করেছে। এটি কেবল জবির নয়, জাতীয় ইস্যু।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরনবী বলেন, “প্রতিটি স্তরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১১টি হলের কথা বলা হলেও বাস্তবে সেগুলো দখলে। প্রশাসন এখনো সেগুলো উদ্ধার করতে পারেনি। বলা হচ্ছে জমিগুলো ভেস্টেড প্রপার্টি (ভিপি)। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হলই ভিপি জমিতে গড়ে উঠেছে।”
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক বিলাল হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণার মতো কাজো বাস ধরার তাড়ায় বাদ দিতে হয়। ক্যাম্পাসে রাত ১০টা বা ১২টা পর্যন্ত কাজ চালানোর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”
জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন বলেন, “অতীতে বহু প্রশাসন বাইরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। আন্দোলনকারীদের দমন করতে চেয়েছে। আবাসন আমাদের ন্যায্য অধিকার। এখন আর কোনো বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শারমিন বলেন, “আমরা ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করছি, যাতে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা বাড়ানো যায়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।”
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো- বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং ড.
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতু থেকে খুলে ফেলা হচ্ছে রেললাইন
যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেললাইন খুলে ফেলা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ বৃহস্পতিবার নাট-বোল্টসহ যন্ত্রাংশ খোলার কাজ শুরু করেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, গত ১৮ মার্চ যমুনা রেলসেতু চালু হয়েছে। এরপর থেকে সড়ক সেতু দিয়ে ট্রেন চলছে না। যমুনা সেতুর ওপর রেললাইনের প্রয়োজন নেই। এ কারণে সেতু বিভাগ ও রেল বিভাগের মাধ্যমে যৌথ পরিকল্পনায় সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে।
যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, রেললাইন খোলা শুরু হয়েছে। উপরিভাগে যানবাহনের জটলা ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আগামীতে সেতুর দুটি লেন প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রেললাইন খুলে নেওয়া হলে সড়ক সেতুতে আরও প্রায় সাড়ে তিন মিটার জায়গা বাড়বে। এটা মূল সড়ক সেতুর সঙ্গে সংযোগ করতে পারব। এতে উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার বাড়বে। এ ধরনের সেতু আন্তর্জাতিকভাবে ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত হয়। বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতি লেন ৬ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থ। এ কারণে দুর্ঘটনা বা যানজট হয়। রেললাইন অপসারণের পর প্রতি লেন প্রস্থ হবে প্রায় ৮ মিটার। এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগে। প্রশস্তকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।
টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন রাস্তা প্রশস্তকরণ প্রকল্প সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল কো-অপারেশনের (সাসেক-২) পরিচালক ড. ওয়ালীউর রহমান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, এবারের ঈদে সেতু দিয়ে এক দিনে ৬৫ হাজারের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণে সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঈদের আগে-পরে বিপাকে পড়ে। সেতুর ওপর কয়েকটি দুর্ঘটনায় এলেঙ্গা ও সিরাজগঞ্জসহ দুই পারে থেমে থেমে যানজট হয়। সেতুর উপরিভাগ প্রশস্ত করা হলে দুর্ঘটনা ও যানজট কমতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতু উদ্বোধন হয়। এর নকশায় রেলপথ ছিল না। পরে সেতুর ওপর উত্তর পাশে লোহার খাঁচা, বার ও অ্যাঙ্গেল যুক্ত করে রেললাইন বসানো হয়। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। নির্দেশনা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলার কারণে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতি বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ। সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি তৈরি হয়।