জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটসহ নানা সমস্যা সমাধানে চার দফা দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করেছেন। 

সোমবার (১২ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে 'জবি ঐক্য’ নামে নতুন একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘ইউজিসির কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘মন্ত্রণালয়ের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘বাজেটের বৈষম্য মানি না, মানব না’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জবিয়ানরা জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আরো পড়ুন:

৬ দফা আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না, পোড়া দেহ পড়েছিল পুকুরে

ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বলেন, “আমরা যখন শিক্ষকদের পাশে চাই, অনেক শিক্ষক অবজ্ঞা করেন। এতে আমাদের লজ্জা লাগে। অথচ শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বড় লিডার; এটি মনে রাখা উচিত।”

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার সভাপতি ইভান তাহসিভ বলেন, “আবাসনের দাবিতে আমি ৮ বছর ধরে লড়ছি। আমার আগের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করেছে। এটি কেবল জবির নয়, জাতীয় ইস্যু।”

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরনবী বলেন, “প্রতিটি স্তরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১১টি হলের কথা বলা হলেও বাস্তবে সেগুলো দখলে। প্রশাসন এখনো সেগুলো উদ্ধার করতে পারেনি। বলা হচ্ছে জমিগুলো ভেস্টেড প্রপার্টি (ভিপি)। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হলই ভিপি জমিতে গড়ে উঠেছে।”

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক বিলাল হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণার মতো কাজো বাস ধরার তাড়ায় বাদ দিতে হয়। ক্যাম্পাসে রাত ১০টা বা ১২টা পর্যন্ত কাজ চালানোর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন বলেন, “অতীতে বহু প্রশাসন বাইরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। আন্দোলনকারীদের দমন করতে চেয়েছে। আবাসন আমাদের ন্যায্য অধিকার। এখন আর কোনো বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শারমিন বলেন, “আমরা ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করছি, যাতে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা বাড়ানো যায়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।”

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো- বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং ড.

হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ ১০ মে এর মধ্যে শুরু করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হল ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন অন্তর মুক্তমঞ্চে এসে জানাতে হবে; আগামী ১৫ মে এর মধ্যে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নটর ডেম কলেজ ভবন থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রাজধানীর নটর ডেম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ধ্রুবব্রত দাস (১৮) মারা গেছেন। কলেজ ‘ভবনের বারান্দা থেকে পড়ে’ তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা শিক্ষার্থীদের। সোমবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ধ্রুব পরিবারের সঙ্গে গোপীবাগের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা সদর মধ্যপাড়ায়। 

মৃত শিক্ষার্থীর বাবা বাণীব্রত দাস জানান, ধ্রুব এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার প্রবেশপত্র আনার জন্য ছেলের সঙ্গে কলেজে যান তিনি। ছেলেকে ভেতরে পাঠিয়ে দিয়ে তিনি আর ধ্রুবর মা কলেজগেটের বাইরে অপেক্ষা করেন। কিন্তু একটু পর কয়েকজন শিক্ষার্থী ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ধরাধরি করে নিয়ে আসে বাইরে। তাকে প্রথমে কাছের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ