রমনা বটমূলে বোমা হামলা: ২ জনের যাবজ্জীবন, অন্যদের ১০ বছর সাজা
Published: 13th, May 2025 GMT
২০০১ সালে বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা তাজ উদ্দিন ও জুয়েলকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অন্য আসামিদেরও সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ৮ মে রায় ঘোষণা শুরু করেন হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার প্রথম দিনে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের অংশবিশেষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের বক্তব্যের সারসংক্ষেপ ঘোষণা করা হয়। এরপর আজ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন। এ ঘটনায় রাজধানীর নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। এরপর ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলায় রায় দেন ঢাকার আদালত। রায়ে বিচারিক আদালত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান। এর মধ্যে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ের পর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে জেল আপিল হয়। হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হলেও বিস্ফোরক মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এখনও বিচারাধীন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবক দিনাজপুরে, মুসলিম হয়ে করলেন বিয়ে
প্রেম মানেনা জাতি, কুল বা কোন বাঁধা। এমনই আরো একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশি প্রেমিকা এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন সুদুর চীন থেকে আসা প্রেমিক যুবক ইয়ং সং সং (২৬)।
এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ১০ নম্বর রাণীপুকুর ইউপির কাজিপাড়া শিমুলতলা গ্রামে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় প্রেমিক চীনা যুবককে এক নজর দেখার জন্য প্রেমিকার বাড়িতে উৎসুক জনতা ভিড় করছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রেমিকা সুরভী আক্তারের বাড়িতে এসে পৌঁছান ওই চীনা যুবক।
আরো পড়ুন:
চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উন্নয়ন প্রদর্শনীর উদ্বোধন
‘আলোকিত স্বার্থবোধের’ ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি নিয়েছি আমরা: তৌহিদ হোসেন
স্থানীয়রা জানান, চীনা যুবক ইয়ং সং সং পেশায় একজন নির্মাণকর্মী। তার বাড়ি চীনের তাইকো জিয়াংসু এলাকায়। তার বাবা মৃত ইউয়ান সিকি এবং মা লিউ ফেনহং। প্রায় ১ বছর আগে কাজিপাড়া শিমুলতলা গ্রামের অটোচালক নুর হোসেনের (বাবু) মেয়ে সুরভী আক্তারের (১৯) সঙ্গে ভার্চুয়াল হ্যালো ট্যাগ অ্যাপসের মাধ্যমে তাদের দুইজনের পরিচয় হয়।
এরপর ভার্চুয়াল যোগাযোগের মাধ্যমে দুইজনের মধ্যে শুরু হয় বন্ধুত্ব, যা গড়ায় ভালোবাসায়। একপর্যায়ে প্রেমিক ইয়ং সং সং গত ৪ আগস্ট সুদুর চীন থেকে প্রেমিকা সুরভী আক্তারের টানে বাংলাদেশে ছুটে আসেন। এরপর তাদের বিয়ে হয়।
সুরভীরা দুই বোন। মা সাথী আক্তার গৃহিনী। সুরভী আক্তার বলেন, “হ্যালো ট্যাগ নামে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে আমাদের পরিচয় হয়। সেখানে আস্তে আস্তে আমাদের কথা চলে, পরিচয় রূপ নেয় ভালোবাসায়। আমাদের এই সম্পর্ক ১ বছরের। পরে সে বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করতে চায়। আমি তাকে জানাই, যদি আমার ধর্ম গ্রহণ করতে পারলে আমি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি আছি। পরে সে বাংলাদেশে আসে এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এখন আমি তাকে বিয়ে করেছি। আমার পরিবার ও এলাকাবাসী অত্যন্ত খুশি।”
সুরভীর বাবা নুর হোসেন বাবু বলেন, “আমার দুই মেয়ে। তারা মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকে। আমার বড় মেয়ের সঙ্গে চীনা নাগরিকের পরিচয় হয়েছে মোবাইলের মাধ্যমে। তারা একে অপরকে পছন্দ করেছে। বাংলাদেশে এসে চীনা জামাই আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে। ৯ আগস্ট আমি তাদেরকে ঢাকার গাজীপুর থেকে দিনাজপুরে নিয়ে এসেছি।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী