সমাধান না পেয়ে আবারো রেলপথ অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের
Published: 13th, May 2025 GMT
কৃষিবিদদের পেশাগত অধিকার রক্ষা ও বৈষম্য নিরসনের ছয় দফা দাবিতে কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় সমাধান না পেয়ে আবারো রেললাইন অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে একটি প্রতিনিধি দল কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার দাবি তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন, ছাত্রীহল সংলগ্ন সড়ক, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে আবার প্রশাসন ভবনের সামনে ফিরে আসে।
আরো পড়ুন:
৩ দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু যমুনা’ বুধবার সকালে
‘রিটার্নিং টু লার্নিং’ প্রকল্প
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ফিরেছে প্রায় শতভাগ ঝরে পড়া শিক্ষার্থী
এরপর তারা সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত ৯টার দিকে রেললাইন অবরোধ তুলে নেন তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, বিকেল ৪টার দিকে কৃষিবিদদের ছয় দফা দাবিতে কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন প্রতিনিধি। আলোচনায় কৃষিবিদদের পেশাগত বৈষম্য দূরীকরণ এবং কৃষিখাতে ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেটের প্রভাব রোধসহ ছয় দফা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়।
আলোচনা চলাকালে কৃষি সচিব কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ দাবি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলতে থাকেন। দাবি নিয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত না দিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আরো জানান, কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনার পরে দাবি নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে যে গড়িমসি চলছে, তার অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবি কেনো মেনে নেওয়া হচ্ছে না এটাই তাদের বোধগম্য নয়।
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ফাহাদ হাসান বলেন, “কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ নম্বর দাবিকে ঘিরে কৃষি সচিব আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা জানিয়েছেন। বাকি চারটি দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করলেও প্রথম ও চতুর্থ দাবি মানতে তিনি রাজি হননি। এর প্রতিবাদস্বরূপ আমরা রেললাইন অবরোধ করেছি। আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, এই আন্দোলন থামবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথেই থাকব।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন আজ
আজ শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন। তিনি ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দেড় দশক ধরে তাঁর জন্মদিনকে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয় সামাজিক ব্যবসা দিবস হিসেবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সমকালকে জানিয়েছেন, ড. ইউনূসের জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি কোনো কর্মসূচি নেই। সরকারি পর্যায়ে জন্মদিন পালন করা হবে না।
গতকাল শুক্রবার ঢাকার সাভারের জিরাবো সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে দু’দিনের ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে’র উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. ইউনূস। তবে অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার জন্মদিনের উদযাপন সংক্রান্ত কোনো আয়োজন ছিল না।
অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী। দারিদ্র্য দূরীকরণে জামানতবিহীন ক্ষুদ্র ঋণের ব্যাংকিং তাঁকে দুনিয়াজুড়ে খ্যাতি দিয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকও নোবেল জয়ী।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানো হয়। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারপ্রধানের তির্যক সমালোচনা এবং মামলায় জর্জরিত ছিলেন অধ্যাপক ইউনূস। তাঁকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ঢাকার শ্রম আদালত।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের অনুরোধে ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অধ্যাপক ইউনূস। ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা, বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজ করছে তাঁর সরকার। সংবিধান, নির্বাচন, জনপ্রশাসনসহ নানা খাতে সংস্কারের চেষ্টা করছে।
অতীতে সরকারপ্রধানদের জন্মদিন ঘটা করে উদযাপন হতো। রাজনৈতিকভাবেও পালিত হতো। সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা উদযাপনের ঢল ছিল। বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীরা প্রধানমন্ত্রীর বন্দনা লিখতেন। রাজনীতিক, ব্যবসায়ীরা ছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারপ্রধানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করত। দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. ইউনূসের ছবি ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন প্রকাশে নিষেধ করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও লোকচক্ষুর আড়ালে রয়েছে।