কৃষিবিদদের পেশাগত অধিকার রক্ষা ও বৈষম্য নিরসনের ছয় দফা দাবিতে কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় সমাধান না পেয়ে আবারো রেললাইন অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে একটি প্রতিনিধি দল কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার দাবি তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন, ছাত্রীহল সংলগ্ন সড়ক, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে আবার প্রশাসন ভবনের সামনে ফিরে আসে।

আরো পড়ুন:

৩ দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু যমুনা’ বুধবার সকালে

‘রিটার্নিং টু লার্নিং’ প্রকল্প
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ফিরেছে প্রায় শতভাগ ঝরে পড়া শিক্ষার্থী

এরপর তারা সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত ৯টার দিকে রেললাইন অবরোধ তুলে নেন তারা।

আন্দোলনকারীরা জানান, বিকেল ৪টার দিকে কৃষিবিদদের ছয় দফা দাবিতে কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন প্রতিনিধি। আলোচনায় কৃষিবিদদের পেশাগত বৈষম্য দূরীকরণ এবং কৃষিখাতে ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেটের প্রভাব রোধসহ ছয় দফা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়। 

আলোচনা চলাকালে কৃষি সচিব কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ দাবি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলতে থাকেন। দাবি নিয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত না দিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আরো জানান, কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনার পরে দাবি নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে যে গড়িমসি চলছে, তার অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবি কেনো মেনে নেওয়া হচ্ছে না এটাই তাদের বোধগম্য নয়।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ফাহাদ হাসান বলেন, “কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ নম্বর দাবিকে ঘিরে কৃষি সচিব আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা জানিয়েছেন। বাকি চারটি দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করলেও প্রথম ও চতুর্থ দাবি মানতে তিনি রাজি হননি। এর প্রতিবাদস্বরূপ আমরা রেললাইন অবরোধ করেছি। আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, এই আন্দোলন থামবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথেই থাকব।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫

ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।

সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।

জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।

সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।

সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ