আমের মৌসুম চলছে এখন। সারাবছর আমের স্বাদ পেতে বাড়িতে তৈরি করে রাখতে পারেন কাঁচা আম দিয়ে নানা পদের আচার। রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা খানম মুক্তা
ঝালঝাল আচার
উপকরণ: আম ১ কেজি, বোম্বাই মরিচ ২০-২৫ পিস, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ করে, সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ২ টেবিল চামচ, চিনি ২ টেবিল চামচ, সিরকা আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ২ কাপ, রসুনের কোয়া ৮-১০ পিস, সোডিয়াম বেনজুয়েট আধা চা চামচ, বিট লবণ আধা চা চামচ, তেজপাতা ২-৩ পিস।
প্রস্তুত প্রণালি: খোসাসহ আম ৮ টুকরা করে নিন। পরে ফুটন্ত পানিতে ৩-৪ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। এবার চালনিতে ঝরা দিন। ২-৩ ঘণ্টা বাতাসে বা রোদে শুকিয়ে নিন। কড়াইতে সরিষার তেল দিয়ে তেজপাতা ও রসুনের ফোড়ন দিন। পরে সিরকা, আদা ও রসুন বাটা, লবণ, বিট, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া, চিনি দিয়ে ভালো কার কষিয়ে নিন। পরে বোম্বাই মরিচ, পাঁচফোড়ন দিয়ে সামান্য ঢেকে আম দিয়ে নেড়েচেড়ে রান্না করুন প্রায় ১০ মিনিট। শেষে সোডিয়াম বেনজুয়েট দিয়ে আবারও নেড়ে নামিয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেল আমের ঝালঝাল আচার।
চেরির কাশ্মীরি আচার
উপকরণ: আম ১ কেজি, আদা ফুল শেপ কাটা ৮ পিস, চিনি ৬ কাপ, সিরকা আধা কাপ, ফিটকারি সামান্য, সোডিয়াম বেনজুয়েট আধা চা চামচ, চেরির মোরব্বা আধা কাপ, পানি ১ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি: আমের খোসা ফেলে ৮ টুকরো করে কেটে, কাশ্মীরি আচারের শেপ করে কেটে, ফিটকারি দিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এভাবে পানি দু’বার পরিবর্তন করতে হবে। হাঁড়িতে পানি ফোটাতে হবে। পরে ২-৪ মিনিট সেদ্ধ করে চালনিতে ঝরা দিন। এবার আরেকটি হাঁড়িতে সিরকা, চিনি, পানি ও সব উপকরণ একসঙ্গে দিয়ে চুলায় চিনির সিরা করে তার ভেতর আমগুলো ঢেলে দেন। ১০-১৫ মিনিট জ্বাল দেন। এভাবে আরও দু’বার রান্না করুন। তৃতীয় বার রান্না করার সময় চেরির মোরব্বা, আদা ও শুকনামরিচের বিচি ফেলে গোল বা লম্বা করে কেটে দিন। চার দিন গরম করার পর ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রাখুন। তৈরি হয়ে গেল দারুণ স্বাদের আম চেরির কাশ্মীরি আচার।
টক আচার
উপকরণ: আম ১ কেজি, চিনি ১/৪ কাপ, সিরকা চিনি ১/৪ কাপ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ১ কাপ, পাঁচফোড়ন ২ টেবিল চামচ, রসুনের কোয়া ৬-৭টা, সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, লালমরিচ ৬-৭টি, তেজপাতা ২টি, সোডিয়াম বেনজুয়েট ১/৪ চা চামচ, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ, আদা ও রসুন বাটা ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: আম খোসাসহ চার টুকরা করে কেটে নিন। পরে সামান্য কোচ নিন। এবার পানি ফুটে উঠলে আমগুলো ছেড়ে ২-৩ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। ৩-৪ ঘণ্টা রোদে শুকিয়ে নিন। কড়াইতে সরিষার তেল গরম হলে তেজপাতা, রসুন দিয়ে ফোড়ন দিন। এবার আদা ও রসুন বাটা, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া গুঁড়া, লবণ, চিনি, সিরকা, সরিষা বাটা, পাঁচফোড়ন দিয়ে কষিয়ে নিন। পরে লালমরিচ, আম দিয়ে নেড়েচেড়ে রান্না করুন ১০ মিনিট। নামানোর আগে চুলার তাপ কমিয়ে সোডিয়াম বেনজুয়েট দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন। এরপর তৈরি হয়ে গেল আমের টক আচার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ও রস ন ব ট
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাজেয় রপ্তানি করছে টেকসই পণ্য
২০১৩ সালের ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের পরে ‘নারীপক্ষ’ নামে একটি এনজিওর জন্য ৫০টি পাটের ব্যাগ তৈরির মাধ্যমে শুরু হয় ‘অপরাজেয়’–এর পথচলা। শুরু করার মাত্র চার মাসের মধ্যে দেশি ক্রয়াদেশের পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণে শুরু হয় রপ্তানি। পরের বছর প্রতিষ্ঠানের আয় দিয়ে চালু করা হয় ‘সংকলন পাঠশালা’ নামের একটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সংকলন পাঠশালার ২৪৫ শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই ছিল রানা প্লাজায় আহত ও অন্য পোশাকশ্রমিকদের সন্তান।
২০১৫ সালে এক অগ্নিদুর্ঘটনায় কারখানা পুড়ে ২৭ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। তহবিল–সংকট ও অন্যান্য কারণে ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালে ব্যক্তি বিনিয়োগে ‘অপরাজেয় লিমিটেড’ নামে শতভাগ রপ্তানিমুখী পাটপণ্য ও হস্তশিল্প উৎপাদন কারখানা চালু করেন কাজী মো. মনির হোসেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান পাটের তৈরি ব্যাগ, হোগলাপাতা ও শণের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিশ্বের ২৬টি দেশে রপ্তানি করছে। বর্তমানে দুটি উৎপাদন ইউনিটে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ২৪০। এর বাইরেও হস্তপণ্য তৈরির জন্য বগুড়া, রংপুর, নোয়াখালীতে চুক্তিভিত্তিতে কাজ করছেন অসংখ্য নারী।
বর্তমানে ইউরোপের নামকরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য পণ্য তৈরি করছে অপরাজেয়। বৈশ্বিক ক্রেতাদের শর্ত, কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা ও শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে অপরাজেয় ‘সেডেক্স’সহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে। একই সঙ্গে দেশের বাজারে মানসম্পন্ন পাটপণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাতের ঘাটতির কথা বিবেচনায় নেন কাজী মো. মনির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মুনিয়া জামান। ২০২১ সালে ‘কালিন্দী’ নামে একটি দেশি ব্যাগের ব্র্যান্ড চালু করেন মুনিয়া জামান। কালিন্দীর সব পণ্য অপরাজেয় কারখানার অব্যবহৃত উপকরণ থেকে তৈরি হয়। কালিন্দী পপআপ স্টোর ও অনলাইন থেকে বর্তমানে মাসে দেড় হাজারের বেশি ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে।
শুরুতে শুধু পাটের ব্যাগ তৈরি করলেও বর্তমানে কালিন্দী চামড়ার ব্যাগও বানাচ্ছে। টেকসই পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি দেশীয় ফ্যাশন ও নিত্যপণ্যের নানান উপকরণ তৈরি হচ্ছে। এমনই উদ্যোগ অপরাজেয় ও কালিন্দী। রপ্তানি শ্রেণিতে আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২৩ পেয়েছে অপরাজেয় লিমিটেড।