বাংলাদেশে ৬০ লাখ টন গম আমদানির প্রয়োজন: খাদ্য উপদেষ্টা
Published: 14th, May 2025 GMT
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মেট্রিক টন গমের চাহিদা থাকলেও দেশে উৎপাদন হয় মাত্র ১০ লাখ টন। বাকি ৬০ লাখ টনেরও বেশি গম আমদানির মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করতে হয়।
বুধবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খোজিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা, রাশিয়া থেকে গম আমদানি এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘বাংলাদেশে খাদ্যশস্য বিশেষ করে গম ও সারের বড় অংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। তবে ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাশিয়া বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। আমাদের সম্পর্ক শুধু বাণিজ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতেও এই সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে।’’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য সচিব মো.
উভয় দেশ ভবিষ্যতে খাদ্য সরবরাহ ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ঢাকা/এএএম//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।