তরুণ সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মীরা। গতকাল রোববার শহরের চাষাঢ়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে এমন দাবি তোলেন তারা। এ সময় বক্তারা জিসানের বিরুদ্ধে করা মামলাকে হয়রানিমূলক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এমন মামলা সাংবাদিকদের নামে আগেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা.

সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে ৮ মে নগরীর দেওভোগে অবস্থিত তাঁর পৈতৃক বাড়িতে যায় পুলিশ। এ সময় তাঁর সমর্থক ও স্থানীয় লোকজন বাধা দেয়। পরদিন সকালে স্বেচ্ছায় পুলিশের গাড়িতে ওঠেন আইভী। তাঁকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়ার সময় কালিরবাজার মোড়ে গাড়িবহরে হামলা হয়।
এ ঘটনায় ১২ মে রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই রিপন মৃধা বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়। এদিন রাতেই শহীদনগরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’র প্রতিবেদক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১), তাঁর বাবা মো. হানিফ (৫০) ও হানিফের চাচাতো ভাই ফুড ব্লগার শওকত মিথুন (৩৬)।
রোববারের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঘটনার দিন তারা সেখানে ছিলেন না। গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত শহীদনগরের শাকিল নামে এক ব্যক্তি মামলা-বাণিজ্য করার জন্য ওই তিনজনের নাম মামলায় যুক্ত করেছে। ঠিক এমন বাণিজ্য এই শহরে আগে ওসমান পরিবার করেছে। তারা এখন বিতাড়িত, কিন্তু তাদের অভাব পূরণে ব্যস্ত অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা।
সাংবাদিক নেতারা হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, এইসব হয়রানিমূলক মামলা আগেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যায়নি। 
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিক জিসান ও ফুড ব্লগার শওকত মিথুনের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মিছিলগুলোতে ছিলেন জিসান। এ অভ্যুত্থানে অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ব্লগাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বাংলাদেশ ও ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জিসানের চাচা শওকত মিথুন আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন, ভিডিও বানিয়েছেন, খাবার-পানি বিতরণ করেছেন।
প্রেস নারায়ণগঞ্জ সম্পাদক ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হোসেন চিশতি সিপলু, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সাবিত আল হাসান।
এতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, প্রথম আলো বন্ধুসভার নারায়ণগঞ্জের সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম, গবেষক মাহবুব সুমন, ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের একজন নারী একটি ফেস্টুন হাতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাতে লেখা ছিল ‘নদী আমাদের মা, মায়ের বুক ভাঙা চাই না।’ এ রকম আরও বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষেরা।

জেলার চারঘাট উপজেলা সদরে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার ভাঙনকবলিত পাঁচটি গ্রামের মানুষের উদ্যোগে আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এই আয়োজন হয়।

গ্রামবাসীর ভাষ্য, চারঘাট উপজেলার গোপালপুর, রাউথা, পিরোজপুর, সাহাপুর এবং বাঘা উপজেলার চক রাজাপুর, আতারপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করা হলে আগামীতে ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এই আশঙ্কায় ভাঙনকবলিত গ্রামবাসী এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন চারঘাটের পিরোজপুর গ্রামের শাহানাজ বেগম (৪০। তিনি বললেন, ‘আমার বাড়ি নদীর পাড়ের ওপরে ঝুলি আছে। যকুন তকুন ভাইঙ্গি পড়বি।’

একই এলাকা থেকে এসেছেন পারভীনা খাতুন (৩৫)। সঙ্গে তাঁর শিশু ও বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, নদী একেবারে পায়ের তলায় এসে গেছে। তাঁদের আর পেছনে সরার জায়গা নেই।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ। তিনি বলেন, পিরোজপুর, গোপালপুর, সাহাপুর এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে নদীভাঙন অব্যাহত আছে। এলাকার অন্তত ৫০০ মানুষের ঘরবাড়ি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকার বাস্তুহারা মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা এলাকায় ফিরতে পারছেন না। এই ভাঙনকবলিত এলাকায় এবার যদি বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে জনগণ আবার রাজপথে নামবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অচল করে দেওয়া হবে। তাঁদের অফিস করতে দেওয়া হবে না।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহীন আলী, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির রহমান, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সালেক আদিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শাহীনুর রহমান, ভাঙনকবলিত এলাকার শিক্ষক মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদ্রাসা সভাপতির বিরুদ্ধে চোরাচালান মামলা, প্রত্যাহারের দাবিতে শিশুশিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন
  • নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হবে না, অর্থনীতিতে গতি আসবে না
  • বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন
  • ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বামরাইল সেতু সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
  • সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
  • আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি, সালমান শাহ ভক্তদের মানববন্ধন