হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে কণ্ঠরোধ করা যাবে না
Published: 18th, May 2025 GMT
তরুণ সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মীরা। গতকাল রোববার শহরের চাষাঢ়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে এমন দাবি তোলেন তারা। এ সময় বক্তারা জিসানের বিরুদ্ধে করা মামলাকে হয়রানিমূলক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এমন মামলা সাংবাদিকদের নামে আগেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা.
এ ঘটনায় ১২ মে রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই রিপন মৃধা বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়। এদিন রাতেই শহীদনগরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’র প্রতিবেদক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১), তাঁর বাবা মো. হানিফ (৫০) ও হানিফের চাচাতো ভাই ফুড ব্লগার শওকত মিথুন (৩৬)।
রোববারের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঘটনার দিন তারা সেখানে ছিলেন না। গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত শহীদনগরের শাকিল নামে এক ব্যক্তি মামলা-বাণিজ্য করার জন্য ওই তিনজনের নাম মামলায় যুক্ত করেছে। ঠিক এমন বাণিজ্য এই শহরে আগে ওসমান পরিবার করেছে। তারা এখন বিতাড়িত, কিন্তু তাদের অভাব পূরণে ব্যস্ত অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা।
সাংবাদিক নেতারা হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, এইসব হয়রানিমূলক মামলা আগেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা যায়নি।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রনেতারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিক জিসান ও ফুড ব্লগার শওকত মিথুনের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মিছিলগুলোতে ছিলেন জিসান। এ অভ্যুত্থানে অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ব্লগাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বাংলাদেশ ও ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জিসানের চাচা শওকত মিথুন আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন, ভিডিও বানিয়েছেন, খাবার-পানি বিতরণ করেছেন।
প্রেস নারায়ণগঞ্জ সম্পাদক ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হোসেন চিশতি সিপলু, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সাবিত আল হাসান।
এতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, প্রথম আলো বন্ধুসভার নারায়ণগঞ্জের সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম, গবেষক মাহবুব সুমন, ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
সাম্য হত্যার ‘প্রকৃত’ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় ‘প্রকৃত’ অপরাধীদের ধরতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম বেঁধে দিয়েছে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
আজ রোববার দুপুর ১২টা দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশে এ সময় বেঁধে দেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান। ‘সাম্যের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার দাবিতে' সাদা দল এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ‘প্রকৃত’ হত্যাকারীকে বের করা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। আমরা কারও ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করবো না। সাম্য হত্যার মোটিভকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে একটা গ্রুপ। আগে সাম্য হত্যার খুনিদের বিচার হবে। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক হত্যার ঘটনা ঘটেছে, আপনি সাম্য হত্যার বিচার থেকে শুরু করুন।’
তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিটিংয়ে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে আলটিমেটাম দিয়ে আসবেন, আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। সরকারের কাছে স্ট্যান্ড নেন, আমরা সরকারের কাছে বলবো; প্রকৃত হত্যাকারীকে ধরতে হবে। সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে আজকে পাঁচদিন পূর্ণ হলো, এই পাঁচদিনে আমরা সো কল্ড আইওয়াশ এরেস্ট দেখেছি, আমরা এটা মানতে রাজি না। প্রকৃত হত্যাকারীকে ধরতে হবে।
মানববন্ধনে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষকের কাছে ছাত্রের লাশ অত্যন্ত ভারী। ক্যাম্পাসে আমার ছাত্র দুবৃর্ত্তের ছুরিকাঘাতে মৃত্যুবরণ করছে, আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপদে বিচরণ করতে পারছি না। ক্যাম্পাস নিরাপদ না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দিতে হবে। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল ক্যাম্পাস কখন কে ঘাপ্টি মেরে থাকবে; আমরা জানি না। ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করুন।
সাদা দলের সদস্যসচিব অধ্যাপক মহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ নাজমুল হোসাইন বক্তব্য দেন। এ সময় সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকারসহ সাদা দলের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।