আমরা গাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেব: নেতানিয়াহু
Published: 20th, May 2025 GMT
ইসরায়েল গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়েছে তারা গাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেবে। গাজাজুড়ে হামলা আরও জোরদার করে এমন ঘোষণা দিয়েছে তারা। এদিকে দুই মাসের বেশি সময় পর অবরোধ কিছুটা শিথিল হওয়ায় গতকাল গাজা উপত্যকায় সীমিত আকারে ত্রাণ ঢুকতে শুরু করেছে।
গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরায়েল। এতে উপত্যকার ‘২০ লাখ মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে’ বলে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
মানবিক সংকট নিয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল সীমিত পরিসরে গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। গতকাল প্রথম পাঁচটি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে। এসব ত্রাণের মধ্যে ছিল শিশুদের খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্য।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ৯টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে.
তবে গাজার ভেতরে ঠিক কতগুলো ট্রাক ঢুকেছে, তা জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি বলেন, নির্ধারিত এলাকায় কোনো ত্রাণসামগ্রীই বিতরণ করা হয়নি। কারণ, তখন রাত হয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে তাঁরা সেই পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারেননি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ব্যাপক রকমের অনাহারের ছবিগুলো’ ইসরায়েলের যুদ্ধ তৎপরতার বৈধতা ক্ষুণ্ন করতে পারে।
এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিস শহরের আশপাশে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েল ‘নজিরবিহীন হামলা’ শুরু করতে করতে যাচ্ছে জানিয়ে এমন সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজায় সীমিত পরিমাণে খাদ্য প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরায়েল২২ ঘণ্টা আগেগাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুসারে, সোমবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৯১ জন নিহত হয়েছে।
নেতানিয়াহু টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘তীব্র লড়াই চলছে এবং আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে।’
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘আমরা উপত্যকাটির পুরো ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেব।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার বলেছে, তারা ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১৬০টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের এসব কর্মকাণ্ডকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং জাতিগত নিধনের সমতুল্য’ বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইসরায়েল হাল ছাড়বে না। কিন্তু সফল হতে হলে আমাদের এমনভাবে কাজ করতে হবে, যা থামানো যাবে না।’
আরও পড়ুনগাজায় হাসপাতালে থাকা রোগীর ওপর ইসরায়েলি হামলা, আইসিইউতে গুলি১৯ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যৌতুকের মামলায় মধ্যস্থতার বিধান পুনর্বিবেচনা দাবি
যৌতুক দাবি এবং যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলা দায়েরের আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটি এই বিধানকে নারীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর মাধ্যমে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০-এ নতুন ২১(খ) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, যৌতুক দাবি বা যৌতুকজনিত সাধারণ জখমের অভিযোগে মামলা দায়েরের আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রথমে লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে। মধ্যস্থতা ব্যর্থ হলে, তবেই আদালতে মামলা করা যাবে।
মহিলা পরিষদ মনে করে, এই বিধান নারীর বিচার প্রাপ্তির পথকে দীর্ঘায়িত ও জটিল করে তুলবে। বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার ফলে ভুক্তভোগী নারী আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করাও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এতে হয়রানির আশঙ্কা বাড়বে, অপরাধীরা উপকৃত হবে এবং সমাজে যৌতুকের মতো অপরাধের প্রতি সহনশীলতা তৈরি হবে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, যৌতুক প্রতিরোধে দেশে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন হয়েছে এবং এটি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে আইন স্বীকৃতি দিয়েছে। এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না, যা অপরাধকে লঘু করে তোলে বা এর বিরুদ্ধে সামাজিক অবস্থান দুর্বল করে। এ অবস্থায় মহিলা পরিষদ সরকারের কাছে সংশোধিত ২১(খ) ধারা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।