নির্বাচন, করিডোর, বন্দর ও মব নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান
Published: 21st, May 2025 GMT
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান এ কথা বলেন।
ঢাকায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনেক কর্মকর্তা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে নির্বাচন ছাড়াও করিডর, বন্দর, সংস্কারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
আরো পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
সেনানিবাস ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, বরখাস্ত সৈনিকসহ গ্রেপ্তার ৩
নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেছেন, এ বিষয়ে তার অবস্থান আগের মতোই। দেশের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণের অধিকার একটি নির্বাচিত সরকারেরই রয়েছে।
করিডর প্রসঙ্গ
সেনাপ্রধান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর-সংক্রান্ত আলোচনার বিষয়েও কথা বলেন। এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হতে হবে। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। যা করার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই করতে হবে। যা-ই করা হোক না কেন,পলিটিক্যাল কনসেনসাসের (রাজনৈতিক ঐকমত্য) মাধ্যমে সেটা হতে হবে।”
বন্দর প্রসঙ্গ
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে দেওয়া নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়েও কথা বলেছেন সেনাপ্রধান। এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এখানে স্থানীয় মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”
‘মব ভায়োলেন্স’
‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা আক্রমণের বিরুদ্ধেও কঠোর বার্তা দিয়েছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনী এখন আরো কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ জনতার নামে বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা আর সহ্য করা হবে না।”
সংস্কার ইস্যু
সংস্কার প্রসঙ্গে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, “কী সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।”
সামনে ঈদুল আজহা; মানুষ যেন নিরাপদে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদ্যাপন করতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে বলেছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনো কার্যকলাপে যুক্ত হবে না, যা জাতীয় সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর। তিনি সব পর্যায়ের সেনা সদস্যদের নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের জন্য সেনাপ্রধান সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব।”
ঢাকা/হাসান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রসঙ গ বল ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফের অপহরণকারীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলি, অপহৃত একজনকে উদ্ধার
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ের আস্তানায় ডাকাত ও অপহরণকারীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অপহরণের শিকার এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মাদক জব্দ করেছে যৌথ বাহিনী।
আজ রোববার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশীদ তানভীর। তিনি জানান, অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. সোহেল (২০)। তিনি টেকনাফ পৌরসভার নতুন পল্লান পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
লে. কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশীদ তানভীর বলেন, গতকাল শনিবার মধ্যরাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা–সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ অবস্থান করছে এমন সংবাদ পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে কোস্টগার্ড ও পুলিশের একটি যৌথ দল সেখানে অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অতর্কিতে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়েন। গোলাগুলির একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে গহিন পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
পরে দুর্বৃত্তদের গোপন আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে ১টি জি-৩ রাইফেল, ২টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি দেশে তৈরি বন্দুক, ৩ হাজার ১০০টি রাইফেলের গুলি, ১৪টি পিস্তলের গুলি, ১ কেজি আইস মাদক (ক্রিস্টাল মেথ) ও ৪ লিটার দেশি মদ উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুর্বৃত্ত চক্রের হাতে জিম্মি থাকা একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা অস্ত্র ও মাদক টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করে মামলার প্রস্তুতি চলছে।