গত ছয় মাসে চারবার সংবাদ সম্মেলন করে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন।

এবার সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামিমুল হাসান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের বাদ দিয়ে কুষ্টিয়ায় কেউ বিএনপি করতে পারবে না। কারও সাহসও নেই। ত্যাগী নেতাদের নিয়ে নতুন কমিটি করতে হবে। কোনো ছাড় নাই।’ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ায় ২০১৯ সালের ৮ মে সৈয়দ মেহেদী আহমেদকে সভাপতি ও সোহরাব উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল রেখে জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। তার আগে ২০১২ সালে গঠিত কমিটিতে এই দুজন একই পদে ছিলেন। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় গত ১২ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি বাতিল করা হয়। এরপর গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকারকে সদস্যসচিব করে জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এরপর ৪ নভেম্বর ৩১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘বর্তমান কুতুব-জাকির কমিটি সারা জেলায় সার্চ কমিটির নামে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দলে টানছে। যেসব ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি তৈরি করছে, সেগুলো দলের সাংগঠনিক নির্দেশ না মেনে ইচ্ছেমতো গঠন করছে। এতে প্রকৃত ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন। আগামী ডিসেম্বরে যে জাতীয় নির্বাচন আসছে, তাতে কুষ্টিয়া বিএনপির ভরাডুবি হবে। সবগুলো আসন হারাতে হবে। দলের মধ্যে কোন্দল বাড়বে। তাই অবৈধ মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত নেতারা বলেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির বিতর্কিত ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দীন ও সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার যেভাবে বিএনপিকে কুষ্টিয়া জেলায় ধ্বংস করার জন্য নীলনকশা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছেন, তা নিন্দনীয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের নেতৃত্বে ও ইন্ধনে সমগ্র জেলাব্যাপী চাঁদাবাজি, দখলদারি প্রবল আকার ধারণ করেছে। এভাবে চলতে থাকলে এবং বিতর্কিত কমিটি না পরিবর্তন হলে বিএনপির ঘাঁটি কুষ্টিয়ায় আরও দুর্বল হয়ে যাবে।

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার বলেন, ‘প্রতিকার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। সংঘাতেও রূপান্তরিত হতে পারে। তাঁরা করলে একবিন্দুও ছাড় দেব না। দাঁতভাঙা জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত।’

জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মেজবাউর রহমান বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর রাজপথে ছিলাম। এখনো আছি। কমিটি বাতিলের দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বশিরুল আলম (চাঁদ), জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাকসহ ২০ থেকে ২৫ জন পদবঞ্চিত নেতা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ব ক পদবঞ চ ত ন ত ক কম ট গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম

ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে এক তরুণ তাঁর বোনকে খুন করে লাশ একটি বস্তায় ভরে রেখেছিলেন। ওই বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে ভেতরে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে গম আছে।’

উত্তর প্রদেশের ৩২ বছর বয়সী রাম আশিস নিষাদ তাঁর ১৯ বছর বয়সী বোন নীলমকে খুন করেন।

ওই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আশিসের বাবা চিংকু নিষাদ সেখানে সরকারের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ছয় লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।

পুলিশ জানায়, ওই ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রুপি বোনের বিয়েতে খরচ করা হবে জেনে রাম আশিস ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাম আশিস একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে বোন নীলমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নীলমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে ফেলে দেহটি একটি বস্তায় ভরেন। পরে বাইকের সঙ্গে বেঁধে তিনি গোরখপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কুশীনগরের একটি আখখেতে বস্তাটি ফেলে আসেন।

সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে অভিযুক্ত

সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে রাম আশিসকে একটি বস্তা নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই বস্তার মধ্যে ছিল তাঁর বোনের লাশ। কুশীনগর যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁকে থামিয়ে বস্তায় কী আছে জানতে চেয়েছিল।

রাম আশিস পুলিশকে জানান, বস্তায় গম আছে। পরে আবার তিনি কুশীনগরের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। সেখানে তিনি আখখেতে নীলমের লাশ ফেলে দেন।

এরপর নীলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বাবা প্রথমে ধরে নেন, মেয়ে ছটপূজার জন্য কোথাও গেছে। তবে প্রতিবেশীরা যখন জানান, সোমবার রাম আশিস একটি বস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সন্দেহ হয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।

পুলিশ প্রথমে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ও তদন্ত শুরু করে। গত মঙ্গলবার নীলমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, রাম আশিসই নীলমকে খুন করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাম আশিস প্রথমে কিছু না জানার ভান করেন। তবে পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে আখখেত থেকে নীলমের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

আগামী জানুয়ারি মাসেই নীলমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাকও হয়ে গিয়েছিল।

রাম আশিসের বাবা চিংকু অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই ছয় লাখ রুপি মেয়ের বিয়েতে খরচ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাম ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কারণ, তিনি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই রুপির ভাগ চেয়েছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
  • বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম