শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফায় আলোচনায় বসছে ইরান
Published: 23rd, May 2025 GMT
পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফায় বসছে ইরান। আজ শুক্রবার ইতালির রাজধানী রোমে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। গত বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তেহরান ও মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান।
গত ১২ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে চার দফা বৈঠক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এটাই দুপক্ষের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংলাপ।
এএফপি জানায়, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাঈদ এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, ‘ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম দফা বৈঠক শুক্রবার রোমে অনুষ্ঠিত হবে।’
তেহরানও বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাঈ এক বিবৃতিতে জানান, ‘ওমানের প্রস্তাবে তেহরান রোমে আরেক দফা আলোচনায় অংশ নিতে সম্মত হয়েছে।’
আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে লাগাম টানার বিনিময়ে তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে একটি নতুন সমঝোতায় পৌঁছানো।
তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে—যদিও তেহরান দাবি করছে তাদের কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পারমাণবিক বিষয় নিয়ে চলমান আলোচনায় সমঝোতার বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি না, এই আলোচনায় কোনো ফল আসবে। কী হবে, তা-ও নিশ্চিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার অস্বীকার করা ‘একটি বড় ভুল’।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক স্টিভ উইটকফ ৯ মে ডানপন্থি গণমাধ্যম ব্রেইটবার্ট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ‘ইরানে আর কখনও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থাকতে পারবে না। এটাই আমাদের ‘রেড লাইন’।’
উত্তরে ইরান বারবার বলেছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার ‘অপরিবর্তনীয়’ ও ‘অলোচনা-রহিত’।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রোববার বলেন, ‘চুক্তি হোক বা না হোক—ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে থাকবে।’
বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশের অনেক বেশি। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের নিচে।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের তেল রপ্তানি ও ব্যাংকিং খাতে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। পরের বছর থেকে ইরান চুক্তির আওতাধীন দায়িত্বগুলো পর্যায়ক্রমে কমাতে শুরু করে।
চুক্তির অংশ থাকা ইউরোপের তিন শক্তি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি—চুক্তিভঙ্গের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়ে ভাবছে। তবে এই সুযোগ অক্টোবরেই শেষ হয়ে যাবে।
এর আগে চলতি মাসে আরাগচি হুঁশিয়ার করেন, ইউরোপীয় শক্তিগুলো যদি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পথে এগোয়, তাহলে তা ‘অপূরণীয় পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইকোর্টে আবেদন খারিজ, সাইফের ১৫ হাজার কোটি রুপির সম্পত্তি কী হবে
২০২৫ সালটা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না অভিনেতা সাইফ আলি খানের। বছরের শুরুতেই নিজের বাড়িতে হামলার শিকার হতে হয়েছিল তাকে। সেই ঘটনার পর খুব একটা বাইরে দেখা যায়নি তাকে। এসবের মাঝে জামি সংক্রান্ত সমস্যায় পড়লো অভিনেতার পরিবার। এবার পতৌদি পরিবারের ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাইফের করা আবেদন খারিজ করে দিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।
ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে ভোপালের খান পরিবারের সম্পত্তি ‘শত্রু সম্পত্তি’ বলে ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালেই মুম্বাইয়ে অবস্থিত ‘শত্রু সম্পত্তি’ সংক্রান্ত দপ্তরের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় ভোপালের নবাবের জমি সরকারি সম্পত্তি। এরপরই পতৌদি পরিবার আইনের দ্বারস্থ হয়। দাবি করে, ভোপাল ও রাইসেনে অবস্থিত ফ্ল্যাগ স্টাফহাউস, আহমেদাবাদ প্যালেস থেকে রাইসেনের কোঠি ও কোঠি সংলগ্ন জঙ্গল ইত্যাদি সবই তাদের সম্পত্তি। কিন্তু এবার শত্রু সম্পত্তি আইনে সবই হাতছাড়া হতে চলেছে তাদের।
২০১৫ সালে ওই সম্পত্তি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই রাজ্যের হাইকোর্ট তা তুলে নেয়। এবার সাইফের আবেদন খারিজ করে দিল উচ্চ আদালত।
কী এই শত্রু সম্পত্তি আইন? ১৯৪৭ সালে ভোপাল ছিল এক প্রিন্সলি স্টেট। যার শেষ নবাব ছিলেন হামিদুল্লা খান। তিনিই সাইফের বাবা মনসুর আলি খান পতৌদির মাতামহ। তার তিন কন্যার মধ্যে যিনি বড়, সেই আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে পাকিস্তানে চলে যান। দ্বিতীয় কন্যা সাজিদা সুলতান ভারতেই থেকে যান। বিয়ে করেন সাইফের দাদা ইফতিকার আলি খান পতৌদিকে। ফলে সাইফের দাদা ওই সমস্ত সম্পত্তির আইনত উত্তরাধিকারী হয়ে যান। মনসুর আলি খান মারা যাওয়ার পর জন্মসূত্রে সেই সম্পত্তির মালিক হওয়ার কথা সাইফ ও তার ভাইবোনদের।
২০১৯ সালে আদালত জানিয়ে দেন, সাজিদা সুলতান ওই সম্পত্তির বৈধ উত্তরসূরি। তার নাতি সাইফ আলী খানের সেই সম্পত্তিতে অংশ রয়েছে। কিন্তু আবিদা পাকিস্তানে চলে যাওয়ায় ভারত সরকার এটিকে শত্রু সম্পত্তি বলে দাবি করে। আর এ সম্পত্তির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর থেকেই নতুন করে সমস্যা দেখা দেয়। এবার সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাইফের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।
আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সাইফের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।