জার্মানি ৭-১ ব্রাজিল: যে বেদনা চিরন্তন, যে যন্ত্রণার শেষ নেই
Published: 8th, July 2025 GMT
‘প্রতিটি দেশের অপূরণীয় জাতীয় বিপর্যয় আছে। এমন কিছু, যাকে আপনি তুলনা করতে পারেন হিরোশিমার সঙ্গে। আমাদের সেই বিপর্যয়, সেই হিরোশিমা হচ্ছে ১৯৫০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে হার’—মারাকানা ট্র্যাজেডি ব্রাজিলিয়ানদের জীবনকে কতটা প্রভাবিত করেছিল, সে বিষয়ে কথাগুলো বলেছিলেন বিখ্যাত ব্রাজিলিয়ান সাহিত্যিক নেলসন রদ্রিগেজ।
২০১৪ সালে দ্বিতীয় ‘মারাকানাজো’ আসার আগপর্যন্ত সেটিই ছিল ব্রাজিলিয়ানদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি। কে জানত, ৬৪ বছর পর সেই একই অনুভূতি ভিন্ন মোড়কে হাজির হবে ব্রাজিলিয়ানদের জীবনে। আর নতুন এই ক্ষত বহু অর্জনে প্রলেপ পড়তে থাকা সেই পুরোনো ক্ষতকে আবার নতুন করে খুঁচিয়ে তুলবে!
আরও পড়ুনক্লাব বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এগিয়ে যে দুজন১৭ ঘণ্টা আগেশুধু ব্রাজিলিয়ানদেরই নয়, বিশ্বজুড়ে ব্রাজিলের ভক্ত-সমর্থকদের জন্যও সেই ঘটনা এখনো বিভীষিকার মতো। এখনো অনেকে সেই ঘটনার ভয়াবহতা ভুলতে পারেননি। এখনো অনেকের ঘুমে দুঃস্বপ্নের মতো হয়তো হানা দেয় সেই দিনটি। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর ভক্তরাও বারবার এই দুর্বল জায়গায় আঘাত করে ক্ষতস্থানকে সব সময় তাজা রাখে। এ যেন বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী ভ্যান গঘের মৃত্যুর আগমুহূর্তে উচ্চারিত সেই কথাটির মতো, ‘স্যাডনেস উইল লাস্ট ফরএভার।’ হ্যাঁ, ব্রাজিল সমর্থকদের জন্যও এই হারের বেদনা চিরন্তন।
কী ঘটেছিল সেই দিন২০১৪ সালের ৮ জুলাই। বেলো হরিজেন্তের স্তাদিও মিনেইরাও ঘিরে সাজসাজ রব। বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি ব্রাজিল-জার্মানি। স্বাগতিক হওয়ায় সেদিন অনেকেই ব্রাজিলকে জার্মানির চেয়ে এগিয়ে রেখেছিল। তার ওপর ঘরের মাঠে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে তখন ৩৯ বছর ধরে অপরাজিত ব্রাজিল। ফলে ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাসের পারদটা ঊর্ধ্বগামী। তবে সংশয়ও কম ছিল না। বিশেষ করে নেইমার ও থিয়াগো সিলভাবিহীন ব্রাজিল আদৌ জার্মান-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে কি না, তা নিয়ে ভয় ছিল অনেক ব্রাজিল সমর্থকেরই।
গোটা ম্যাচেই এমন পরিস্থিতি হয়েছিল ব্রাজিলের। গোলের পর গোল হজম করে মাঠে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি ব্রাজিল দল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র জ ল য় নদ র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী