নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ১৬ টন সরকারি চাল জব্দ করেছে সেনাবাহিনীর টহল দল।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে জব্দ করা চালগুলো সিংড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার রাতে সিংড়া উপজেলার হাট এলাকা থেকে খাদ্য অধিদপ্তর লেখাযুক্ত দুই ট্রলি চাল জব্দ করা হয়।
সেনাবাহিনীর সিংড়া ক্যাম্প সূত্র জানিয়েছে, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ করা চাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের কাছে এলাকাভিত্তিক পাঠানো হয়। শ্রমিকদের কাজের বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী কাবিখার চাল বিক্রি করলে সরকারি বস্তা পরিবর্তন করে দরপত্রের মাধ্যমে করতে হয়। কিন্তু, সেই নিয়ম না মেনে কলম ইউনিয়নের প্যানেল মেম্বার হারুনুর রশিদ, ইটালি ইউনিয়নের মোকলেসুর রহমান, চৌগ্রাম ইউনিয়নের মোজাফফর রহমান, রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের রেবেকা বেগম সরকারি চাল রাজু ও বাবু নামের দুই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন। রাতের আঁধারে দুটি ট্রলিযোগে পরিবহনের সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসব চাল জব্দ করে। সেনা সদস্যরা চাল বিক্রির বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে জনপ্রতিনিধিরা তা দেখাতে ব্যর্থ হন।
চালের ক্রেতা বাবু কমিশনার জানিয়েছেন, তিনি জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিয়ম মেনেই চাল কিনেছেন। তার কাছে চাল কেনার বৈধ কাগজপত্র আছে।
সিংড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সরকারি চাল জব্দের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে কিছু জানানো হয়নি।
ঢাকা/আরিফুল/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৮-১৯ বর্ষের অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বছরখানেক আগেই স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু নম্বরপত্র না পেয়ে উচ্চশিক্ষার আবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
সফটওয়্যার সিস্টেমে সমস্যা থাকার কারণে নম্বরপত্র উত্তোলনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কবে নাগাদ সমাধান হবে সে বিষয়েও নিশ্চিত বলতে পারেননি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সনদ ও নম্বরপত্র প্রদান করা হত। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে অনলাইনের মাধ্যমে এসব ডকুমেন্টস প্রদানে প্রিন্ট সেবা মাধ্যম চালু হয়। স্নাতক ২০১৮-১৯ বর্ষ থেকে পরবর্তী বর্ষের শিক্ষার্থীরা এই সেবা পাবেন বলে জানানো হয়। তবে বাস্তবে কেবল সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদান করা হলেও নম্বরপত্র পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
কুবি উপাচার্যের মেয়ের পোষ্য কোটায় ভর্তি নিয়ে বিতর্ক
গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠালেন জবি শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, “২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্নাতক শেষ করি। তবে ১ বছর পরও নম্বরপত্র হাতে পাইনি। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে মাস্টার্স শেষ করে ক্যাম্পাস ছেড়েছি। অন্য সব কাগজপত্র তুলতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস নম্বরপত্র না নিয়েই ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে। কবে নাগাদ প্রদান করা হবে সেটাও আমাদের নিশ্চিত করা হয়নি।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান বলেন, “আমাদের শিক্ষাবর্ষের অনেকেই ইতোমধ্যে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, এখনো অনেকেই নম্বরপত্র পাননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “সফটওয়্যার সিস্টেমের অজুহাতে কাগজপত্র উত্তোলনে বারবার ভুল ও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরও নম্বরপত্র দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা জরুরি।”
বৈষম্যবিরোধী ইবির সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, “কাগজপত্র উত্তোলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আগের মতোই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নতুন বাংলাদেশে এমন আচরণ লজ্জাজনক। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে এবং দ্রুত নম্বরপত্র প্রাপ্তিতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখছি।”
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর পরিচালক ওয়ালিউর রহমান বলেন, “সফটওয়্যারের সিস্টেমের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে মূলত পূর্বের কোম্পানির সঙ্গে কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুনভাবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। তারপর তারা কাজ শুরু করবে। কিন্তু এখনো চুক্তিপত্র হয়নি কিংবা কোম্পানিও ঠিক হয়নি বলে জানি। কবে নাগাদ সমাধান হতে পারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. শাহজাহান আলী বলেন, “বিষয়টি অবগত আছি। শুধু নম্বরপত্র নিয়েই সমস্যা হচ্ছে, বাকিগুলো ঠিকমতো আসছে। যে কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরি করেছে, তারা সমাধান না করলে এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভিন্নভাবে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
তিনি বলেন, “নতুনভাবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। নতুন করে সফটওয়্যার ডেভেলপ ও ডিজাইন করতে হবে। এটা সময় সাপেক্ষ এবং এর সঙ্গে আর্থিক বিষয়াদিও জড়িত। বিষয়টির সমাধানে অফিসিয়ালি কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুতই সমাধান আসবে।”
ঢাকা/মেহেদী