নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত প্রস্তাব বা‌তিলের দা‌বি জা‌নি‌য়ে মান‌বিক ক‌রি‌ডো‌র ও চট্টগ্রাম বন্দর বি‌দে‌শি‌দের হা‌তে তু‌লে দেওয়ার অপতৎপরতা থে‌কে সরকার‌কে স‌রে আসার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ ইসলামী ফ্রন্ট।

এ ধর‌ণের সিদ্ধান্ত আত্মঘা‌তী ও দে‌শের স্বাধীনতা সার্ব‌ভৌম‌ত্ব বিপন্ন হ‌বে ব‌লেও ম‌নে ক‌রে দল‌টি।

সোমবার (২৬ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইসলামী ফ্রন্ট এর গোলটেবিল বৈঠকে দল‌টির চেয়ারম্যান এম এ ম‌তিন এসব কথা ব‌লেন।

তি‌নি ব‌লেন, ‘‘নারী বিষয়ক সংস্থার কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন পরে আমরা খুবই বিস্মিত ও মর্মাহত হয়েছি। এতে নারী স্বাধীনতার নামে খোদা দ্রোহিতা, নাস্তিকতা, কুরআন সুন্নাহ বিরোধী প্রস্তাব এসেছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এদেশে আল্লাহর বিধান ও রাসূলের সুন্নাহ বলবৎ থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু প্রতিবেদনে এসবের কোন তোয়াক্কা করা হয়নি। আজকের গোলটেবিল বৈঠকে থেকে আমরা বাস্তবতা বিবর্জিত এ প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ‌টি বা‌তি‌লের দা‌বি জানা‌চ্ছি।’’ 

তি‌নি ব‌লেন, ‘‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত প্রস্তাবগুলো দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। শরীর আমার সিদ্ধান্ত আমার, আমরা সবাই বেশ্যা, বুঝে নিবো হিস্যা-এ ধরণের স্লোগান হিংসাত্মক তৎপরতার বহিঃপ্রকাশ। ৩১৮ ও অন্যান্য পৃষ্ঠায় অসঙ্গতি সম্বলিত কমিশন রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়-প্রায় ডজন খানেক বিষয়ে এমন প্রস্তাব এসেছে যা কুরআন-সুন্নাহ্ বিরোধী। বিবাহ ও বিচ্ছেদে ধর্মীয় আইন বাধ্যতামূলক হওয়ায় নারীরা-বৈষম্যের শিকার বলে যে কথা উল্লেখ আছে তা কোনভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন গর্হিত অনেকগুলো অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে।’’ 

এম এ ম‌তিন ব‌লেন, ‘‘মান‌বিক ক‌রিডো‌রের না‌মে দে‌শের স্বাধীনতা সার্ব‌ভৌমত্ব বিপন্ন করা যা‌বে না। বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্ট দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বিরোধী নয়, বিনিয়োগের নামে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পুনর্বাসন মার্কা বিনিয়োগের বিপক্ষে। স্বয়ংসম্পূর্ণ নিউ মুরিং বন্দর তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করবে। যাতে বন্দরের নিজস্ব বিনিয়োগ সুরক্ষা থাকে।’’ 

সংগঠনের মহাসচিব স উ ম আব্দুস সামাদের লিখিত বক্তব্যে উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদ খান, গণফোরামের মহাসচিব ডা.

মিজানুর রহমান, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক ডেসটিনির (ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী, জাতীয় নাগরিক পাটির যুুগ্ম সদস্য সচিব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, কেন্দ্রীয় সংগঠক ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য মুহাম্মদ সানাউল্লাহ খাঁন, ফ্রন্ট নেতা আল্লামা আবু সুফিয়ান খান আবেদী আলকাদেরী, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এম ইব্রাহিম আখতারী, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শাহেদুল আলম রেজভী, অ্যাডভোকেট ইসলাম উদ্দিন দুলাল, কাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিদ্দিকী আশরাফী, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাসান, ক্যান্সার গবেষক অধ্যক্ষ ডা. এস এম সরওয়ার, এনামুল হক সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, মাস্টার আবুল হোসাইন, নাসির উদ্দীন মাহমুদ, সৈয়দ এয়ার মুহাম্মদ পেয়ারু, মাসদুল আলম মাসুদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম কাজল, অধ্যক্ষ আবু নাসের মুহাম্মদ মুসা, কাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নুরী, মিজানুর রহমান, মুহিব্বুল্লাহ সিদ্দীকি, বুলবুল আহমদ মোমেনশাহী প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ প রস ত ব ফ রন ট ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘নৌকা’ প্রতীক বাদ দিতে ইসিতে এনসিপির আবেদন, ‘শাপলা’ না পেলে লড়াইয়ের ঘোষণা

নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকা থেকে ‘নৌকা’ বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলেছে, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় তাদের দলীয় প্রতীক নৌকা তালিকায় থাকার কোনো সুযোগ নেই। একই সঙ্গে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া না হলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির নেতারা।

রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এনসিপির নেতারা। এ সময় এনপিপির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়ার ব্যাপারে তারা ইসিতে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবেদনটি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ সময় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, দলীয় প্রতীক হিসেবে এনসিপির শাপলা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই। যদি বাধা দেওয়া হয় তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব।

এক প্রশ্নের জবাবে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। ইসি এখন একটি দলের মুখপাত্র হয়ে কাজ করছে। এ ইসিতে যারা ভালো কাজ করছেন তাদের রেখে নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাচন ভবনে যান এনসিপির পাঁচ সদস্যের দল। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে ১১টার দিকে এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি বৈঠকে বসেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধনের লক্ষ্যে প্রতীকের তফসিলে শাপলা ছাড়াই ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি, যা ওইদিনই আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। ইসির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এনসিপি।

২২ জুন এনসিপি নিবন্ধন আবেদন দাখিলের সময় শাপলা প্রতীক চায়। আবার মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য ১৭ এপ্রিল একই প্রতীক চায়। এছাড়া দুটি দলই শাপলা নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও করে ইসির সঙ্গে। শাপলা নিয়ে এই পাল্টাপাল্টি দাবির মধ্যেই প্রতীকটি তফসিল অন্তর্ভুক্তই করেনি ইসি।

বর্তমানে ৫০টি দল নিবন্ধিত দল আছে। বাকি প্রতীকগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও অন্যান্য নতুন দলগুলোকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ