বর্ষা মৌসুমে পুরো দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। চলতি বছরে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকা এবং বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ হলেও এর অ্যান্টিভাইরাল কোনো চিকিৎসা নেই। এই রোগ যেহেতু মশার কামড়ে হয়- তাই এই রোগ থেকে বাঁচার সবচেয়ে বড় উপায় হলো মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য ব্যক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা মেনে চলা।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়, আর এই মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। কেউ যদি দিনে ঘুমায় তাহলে অবশ্যই মশারি দিয়ে ঘুমাতে হবে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিশুদের খালি গায়ে রাখা যাবে না। বাথরুমে যেন পাঁচদিনের বেশি জমা পানি না থাকে। ’’

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রোফেসর এ.

বি. এম আবদুল্লাহ একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘ডেঙ্গুর স্পেসিফিক কোনো চিকিৎসা নেই। এই রোগ হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে। শরীর বার বার স্পন্স করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। শরবত, গ্লুকোজ, ডাবের পানি পান করতে হবে। যদি এসব খাবার খেতে না পারি তাহলে আমরা বিভিন্ন রকমের ইন্টারভেনাস ফুড ‘ইন্ট্রাভেনাস বা শিরা পথে সরাসরি পুষ্টি সরবরাহ করা’ দিয়ে থাকি এতেই অধিকাংশ রোগী ভালো হয়ে যায়। 

আরো পড়ুন:

যে কারণে শরীরের ৫-৭ অঙ্গে একসঙ্গে ব্যথা হয়

দশ সেকেন্ডে একবার চোখের পলক ফেলা জরুরি কেন?

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘অনেকেই মনে করেন, ডেঙ্গু হলেই ব্লাড দিতে হবে। এটা কিন্তু ভুল ধারণা। রক্ত অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে কোনো দরকারই নাই। যদি রক্তক্ষরণ বেশি হয় তাহলে রক্ত দেওয়া লাগতে পারে। প্লাটিলেট একটু কমলেই অনেকেই রোগীকে প্লাটিলেট দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্লাটিলেট দেওয়ার দরকার পড়ে না। এটা পাঁচ-ছয় দিন পড়ে কমে যায় আবার সাত-আট দিন পরে এমনতেই বাড়ে। তবে রোগীর শরীর যদি বেশি খারাপ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে প্লাটিলেট দেওয়া যেতে পারে।’’

প্রোফেসর এ.বি. এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘অনেকেই মনে করে, ডেঙ্গু হলে রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যাবে না, অ্যান্টিবায়োটিক রোগীর ক্ষতি করবে। এখানে একটি ক্লিয়ার কথা-ডেঙ্গুতো ভাইরাস। এখানে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো রোলই নাই। সেক্ষেত্রে সেকেন্ডারি ইনফেকশন হলে যেমন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া হতে পারে, বয়ষ্কদের নিউমনিয়া হতে পারে। কারও টাইফয়েড দেখা দিতে পারে, ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে- সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।’’

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে কিশোরকে বিষপান ও এসিড ঢেলে হত্যার অভিযোগ

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় মর্মান্তিক ও নৃশংস এক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. হোসেইনকে (১৩) রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে বিষপান করিয়ে এবং অণ্ডকোষে এসিড ঢেলে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। 

বুধবার (১৮ জুন) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ওই কিশোর। নিহত হোসেইন উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। সে শিকারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল।

স্থানীয় সূত্র ও পারিবারিক দাবি অনুযায়ী, দুই মাস আগে শিকারপুর গ্রামের মইনুল হোসেনের মুদি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গ্রামে সালিশ বসে। সালিশে অভিযুক্ত সাইমুন নামের এক তরুণের বিরুদ্ধে চুরির প্রমাণ পাওয়া গেলে গ্রামের সালিশে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সালিশে সাক্ষ্য দেন হোসেইনের বাবা আবু তাহের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে সাইমুন।

হোসেইনের বাবা আবু তাহের বলেন, “৩১ মে আমার ছেলেকে রাস্তা থেকে তুলে নেয় সাইমুন ও তার ভাই আলাউদ্দিন। পরে জোর করে তাকে বিষপান করায় এবং তার অণ্ডকোষে এসিড ঢেলে দেয়। ছেলেটা কয়েকদিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছে। শেষ পর্যন্ত আর বাঁচল না।”

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. অরূপ কুমার রায় বলেন, “শিশুটির গলা ফুলে গিয়েছিল, সে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। তার অণ্ডকোষ পুড়ে গিয়েছিল। অবস্থা ছিল অত্যন্ত জটিল।”

এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলা করেছেন। আসামি করা হয়েছে সাইমুন ও তার ভাই আলাউদ্দিনকে। 

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, “আমরা মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/রুবেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ