পাহাড়ের পথে পথে অ্যাডভেঞ্চার। বর্ষায় পাহাড় মানেই রোমাঞ্চের রাজ্য। তারুণ্যের উদ্দীপনায় পাহাড়চূড়া কিংবা ঝিরিপথ জয়ের আনন্দটা অসাধারণ। তবে পাহাড়ি পথে নিরাপদে চলতে হলে নিজেকেও ভালোবাসা চাই। আপনার প্রাণের স্পন্দনেই তো ভ্রমণের নেশা। সেই নেশাকে সার্থক করে তুলতে শরীর আর মনের প্রস্তুতিটাও হতে হবে ঠিকঠাক। নইলে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হতে পারে নিমেষেই। এ সম্পর্কে বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা.

সাইফ হোসেন খান

শরীরটা হোক ফিট

পাহাড়ি পথে চলা খুব সহজ নয়। তাই পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা করলে অন্তত দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকেই অনেকটা পথ হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। সমতলে নিয়মিত হাঁটার এই চর্চা পাহাড়ি পথে আপনার পাথেয় হবে। দুর্গম এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে জেনে নিন সেখানে যাওয়ার ঝক্কি আদতে কতটা। মনে রাখবেন, সবার দেহ সব রকমের চ্যালেঞ্জ সইতে সক্ষম না-ও হতে পারে। এ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। আপনি যতটা ধকল সইতে পারবেন, তার চেয়ে কঠিন কোনো পরিকল্পনা করবেন না। ‘সহজ ট্যুর’-এ অভ্যস্ত হয়ে উঠলে পরবর্তী সময়ে তুমুল অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ পাবেন।

সুস্থতা ও নিরাপত্তার অনুষঙ্গ

পিচ্ছিল পাহাড়ি পথে চলার উপযোগী জুতা চাই অবশ্যই। এ ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না। অতিরিক্ত আঁটসাঁট বা অতিরিক্ত ঢিলেঢালা পোশাক—কোনোটিই অ্যাডভেঞ্চারের উপযোগী নয়। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে লাইফ জ্যাকেট প্রয়োজন হলে অবশ্যই সঙ্গে নেবেন। রাতে যেখানে থাকবেন, সেখানে মশারির ব্যবস্থা আছে কি না, নিশ্চিত হয়ে নিন। প্রয়োজনমাফিক মসকিউটো রিপেল্যান্ট ব্যবহার করুন। বর্ষায় পাহাড়ে জোঁকের উপদ্রব বেশি। মোজার ভেতর পায়জামা বা প্যান্ট গুঁজে নিতে পারলে জোঁকে ধরার ঝুঁকি কম থাকে। তবে ঝিরিপথে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা সম্ভব না-ও হতে পারে। তাই জোঁকে ধরার ঝুঁকি থেকেই যায়। জোঁকে ধরলে তা সরানোর জন্য কাজে লাগাতে পারেন শক্ত কাগজ।

আরও পড়ুনভ্রমণে সুস্থ থাকতে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন০৫ নভেম্বর ২০২২জোঁক ধরলে কী করবেন

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোঁক রক্ত খেয়ে নিজে থেকে খসে যায়। জোঁক ছাড়ানোর জন্য লবণ ছিটিয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। তবে পদ্ধতিটি ভুল। জোঁক ছাড়ানোর জন্য লবণ দিলে জোঁক মারা যায় আর তার দেহ থেকে কিছু জলীয় অংশ মানুষের দেহের ওই ক্ষত দিয়ে প্রবেশ করে। ফলে বাড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি। তাই জোঁক ছাড়াতে হবে জীবিত অবস্থায়। যেখানে জোঁক ধরেছে, সেই অংশের ত্বক টেনে ধরে রাখতে হবে। এই অবস্থায় জোঁকের মাথার দুপাশ থেকে কাগজের সাহায্যে ধরে জোঁকটিকে টেনে সরিয়ে দূরে ফেলে দিতে হবে। তুলনামূলক চিকন অংশটাই জোঁকের মাথার দিক।

মনের প্রস্তুতিই বেশি জরুরি

পাহাড় ভ্রমণে মন হবে ফুরফুরে। সেই ভ্রমণ নিয়ে রোমাঞ্চকর গল্প হবে, অ্যাডভেঞ্চারের ছবি-ভিডিও আপলোড হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আনন্দের রেশ থাকবে বহুদিন। তবে তার জন্য আপনাকে এবং আপনার দলের সদস্যদের থাকতে হবে নিরাপদ। ভ্রমণের আগেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন, কোনো পরিস্থিতিতেই ভ্রমণবিষয়ক কোনো নির্দেশনা অমান্য করবেন না। মনে রাখুন এসব বিষয়—

এমন বহু দুর্গম এলাকা আছে, যেখানে যাওয়া নিষেধ। রোমাঞ্চের নেশায় সেসব জায়গায় যাওয়া যাবে না। ঝরনার উৎস খুঁজতে উৎসাহী হয়ে পিচ্ছিল পাহাড় বেয়ে ওঠার চেষ্টা করবেন না।

সাঁতার জানলেও পানিতে না নামাই ভালো।

ঝরনায় ভিজতে গেলেও স্রোতের নিচে সরাসরি মাথা বা ঘাড় না রাখাই ভালো। কখনো কখনো ওপর থেকে শক্ত নুড়ি পড়ে আহত হওয়ার ভয় থাকে।

পাহাড়ি কোনো পথে একা চলবেন না।

দুর্গম পথে নিজের দলের সঙ্গে অবশ্যই গাইড নেবেন।

ছবি বা ভিডিও ধারণের সময়ও নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখুন।

আবহাওয়া খারাপ থাকলে, পাহাড়ি ঢল নামলে ভ্রমণ পরিকল্পনা বদলাতে হতে পারে, সেই মানসিক প্রস্তুতিও রাখুন।

আরও পড়ুনজলপ্রপাত দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে যে ১০টি কথা মনে রাখতেই হবে০৬ জুলাই ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: করব ন ন রমণ র ভ রমণ

এছাড়াও পড়ুন:

নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন

অনুমিত চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করল মুম্বাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের জার্সি গায়ে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি রূপ নিল নীল সমুদ্রে। ২২ গজে আরও একবার ভারতের আধিপত‌্য, শাসন। যেন শিরোপার পায়চারি অনেক আগের থেকেই। 

ব‌্যাটিংয়ে পর্বত ছুঁই-ছুঁই রান। এরপর স্পিনে ফুল ফোটালেন স্পিনাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করল সাধ‌্যের সবটুকু দিয়ে। ব্যাটে-বলে সহজে হাল ছাড়ল না তারাও। হৃদয় জিতলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না। ভারতের শক্তি-সামর্থ‌্যের গভীরতার কাছে হার মানতেই হলো প্রোটিয়া নারীদের।

আরো পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

মুম্বাইয়ের নাভি স্টেডিয়ামের নীল সমুদ্রে সব আতশবাজি আজ রাতে ফুটল ভারতের বিশ্বকাপ  উদ্‌যাপনে। প্রথমবার ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডেতে বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন। ৫২ রানের বিশাল জয় বুঝিয়ে দেয় হারমানপ্রীত কৌর, জেমিমা রদ্রিগেজ, দীপ্তি শর্মা কিংবা শেফালি বার্মা, স্মৃতি মান্ধানা, রিচা ঘোষরা ২২ গজকে কতটা আপন করে নিয়েছেন। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছাড় দেননি একটুও। ২০০৫ ও ২০১৭ বিশ্বকাপে যে ভুলগুলো হয়েছিল...সেগুলো আজ ফুল হয়ে ঝরল। 

বৃষ্টি বাঁধায় বিঘ্ন ম‌্যাচে আগে ব‌্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের স্কোর পায় ভারত। ৪৫.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান করতে পারে প্রোটিয়া নারীরা। নাডিন ডি ক্লার্ক শেষ ব‌্যাটসম‌্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, স্টেডিয়ামের প্রায় ষাট হাজার ভারতীয় সমর্থকদের মুখে একটাই স্লোগান, চাক দে ইন্ডিয়া।

ওই জনসমুদ্রের স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’। 

বিস্তারিত আসছে …

 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ