শেরপুরের নকলায় কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করা পা হাতে নিয়ে বিচার দাবিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বারান্দায় ঘুরছে এক অসহায় পরিবার। ঠুনকো কথাকাটাকাটির জেরে নির্মমভাবে কুপিয়ে তার পা কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে চিকিৎসকরা তার পা কেটে ফেলেন। এর পর থেকেই বিচার দাবিতে কাটা পা নিয়ে ঘুরছেন তার পরিবারের সদস্যরা। 

ভুক্তভোগী ওই যুবকের নাম মো.

শাকিল মিয়া (১৮)। সে নকলা থানার গণপদ্দী ইউনিয়নের বারইকান্দি দক্ষিণ পাড়া এলাকার মো. আমির হোসেনের ছেলে। ১৫ জুন রবিবার সন্ধ্যা রাতে ওই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পরের দিন সোমবার (১৬ জুন) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা মো. আমির হোসেন (৬৫) বাদি হয়ে নকলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৪৩/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ২০৬/ ১১৪/ ১৩৪ ধারায় মামলা গ্রহণ করেন। মামলা নম্বর ১০। 

এদিকে হামলাকারীদের সবাই পলাতক থাকলেও একটি প্রভাবশালী মহল মামলার তদবিরে ব্যস্ত আছেন এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ইতিমধ্যে তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখনও কোন আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কাটা পা নিয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বিচার চাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ নানা ধরনের কমেন্ট করছেন। 

তবে পুলিশ বলছে, মামলাটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আসামিরা হলেন- উপজেলার আদমপুর এলাকার মো. লালু বাদশা দুই ছেলে মো. হাসিবুল (২০), মো. অন্তিম (২২), মৃত ইউনুছ আলী দুই ছেলে মো. ইস্রাফিল (৪৯) ও মো. লালু বাদশা (৪৫) এবং বারকান্দি দক্ষিনপাড়া এলাকার মৃত বসু মামুতের ছেলে মো. দুলাল মিয়া (৬০)-সহ অজ্ঞাত আরও চার জন। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক শত্রুতায় কথাকাটাকাটি জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রামদা, লোহার রড, বাঁশের লাঠি, এককাইল্যাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ৫-৬ জন মিলে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করে শাকিলকে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা প্রথমে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার অবস্থার অবনতি হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বাবা মো. আমির হোসেন বলেন, “আসামিরা আমাদের প্রতিবেশী। সামান্য কথাকাটাকাটির জেরে আমার ছেলের পা বিচ্ছিন্ন করে দিলো। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে না। আমরা বারবার বললেও তারা এখনো একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে স্থানীয় একটা পক্ষ আমাদেরকে মামলা তুলে নিতে নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমি আমার ছেলের সাথে ঘটা অন্যায়ের বিচার চাই।”

এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আশাকরছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ মোহনের অধ্যক্ষকে ওএসডি, অভিযোগ—তিনি আওয়ামী লীগের ‘দোসর’

ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল ৪টায় দায়িত্ব হস্তান্তর করে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন তিনি। এ সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন উপাধ্যক্ষ সাকির হোসেন।

এর আগে ৩১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে উপসচিব (সরকারি কলেজ-২) আ. কুদদুসের সই করা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে রোববার বিকেলের আগে উপাধ্যক্ষকে অধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়। আমান উল্লাহকে ২০২১ সালের ৮ আগস্ট অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিল। তিনি একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করে আসছিলেন।

গতকাল বিকেলে দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (কমিটি স্থগিত) নেতারা। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়। তাঁদের একজন আনোয়ার হোসেন (যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার আহ্বায়ক) দাবি করেন, ‘সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন।’ তাঁরা লিখিতভাবে সচিবালয়ে ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

আমান উল্লাহকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন বলেন, ‘গতকাল বিকেল ৪টার দিকে আমি দায়িত্ব বুঝে পেয়েছি। কলেজে যেন সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারি, এ জন্য সবার সহযোগিতা চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক দিন রিকশা চালান, আরেক দিন কারুপণ্য বানান ময়মনসিংহের জাহাঙ্গীর
  • বৃষ্টির দাপট চলবে আরো কয়েকদিন, কমবে পরের সপ্তাহে
  • চার জেলায় বন্যার সতর্কতা
  • আনন্দ মোহনের অধ্যক্ষকে ওএসডি, অভিযোগ—তিনি আওয়ামী লীগের ‘দোসর’
  • চার বিভাগে বৃষ্টি বাড়তে পারে