‘কাটা পা’ নিয়ে বিচার চেয়ে সরকারি দপ্তরে ধর্না!
Published: 19th, June 2025 GMT
শেরপুরের নকলায় কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করা পা হাতে নিয়ে বিচার দাবিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বারান্দায় ঘুরছে এক অসহায় পরিবার। ঠুনকো কথাকাটাকাটির জেরে নির্মমভাবে কুপিয়ে তার পা কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে চিকিৎসকরা তার পা কেটে ফেলেন। এর পর থেকেই বিচার দাবিতে কাটা পা নিয়ে ঘুরছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী ওই যুবকের নাম মো.
এ ঘটনায় পরের দিন সোমবার (১৬ জুন) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা মো. আমির হোসেন (৬৫) বাদি হয়ে নকলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৪৩/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ২০৬/ ১১৪/ ১৩৪ ধারায় মামলা গ্রহণ করেন। মামলা নম্বর ১০।
এদিকে হামলাকারীদের সবাই পলাতক থাকলেও একটি প্রভাবশালী মহল মামলার তদবিরে ব্যস্ত আছেন এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইতিমধ্যে তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখনও কোন আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কাটা পা নিয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বিচার চাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ নানা ধরনের কমেন্ট করছেন।
তবে পুলিশ বলছে, মামলাটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আসামিরা হলেন- উপজেলার আদমপুর এলাকার মো. লালু বাদশা দুই ছেলে মো. হাসিবুল (২০), মো. অন্তিম (২২), মৃত ইউনুছ আলী দুই ছেলে মো. ইস্রাফিল (৪৯) ও মো. লালু বাদশা (৪৫) এবং বারকান্দি দক্ষিনপাড়া এলাকার মৃত বসু মামুতের ছেলে মো. দুলাল মিয়া (৬০)-সহ অজ্ঞাত আরও চার জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক শত্রুতায় কথাকাটাকাটি জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রামদা, লোহার রড, বাঁশের লাঠি, এককাইল্যাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ৫-৬ জন মিলে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করে শাকিলকে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা প্রথমে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার অবস্থার অবনতি হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর বাবা মো. আমির হোসেন বলেন, “আসামিরা আমাদের প্রতিবেশী। সামান্য কথাকাটাকাটির জেরে আমার ছেলের পা বিচ্ছিন্ন করে দিলো। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে না। আমরা বারবার বললেও তারা এখনো একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে স্থানীয় একটা পক্ষ আমাদেরকে মামলা তুলে নিতে নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমি আমার ছেলের সাথে ঘটা অন্যায়ের বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আশাকরছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
ঢাকা/তারিকুল/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদ্য সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ওঠা ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন
উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা গত ২৮ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে তখন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে সারমিনা সাত্তার যোগ দেন। এরপর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা, পাথর কেলেঙ্কারি, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ, নামজারিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, ভুয়া প্রকল্প থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানা দুর্নীতি করেছেন।
বক্তব্যে ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ বলেন, ‘‘সারমিনা সাত্তার শুধু অনিয়ম-দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণসহ মিথ্যা মামলার হুমকিও দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি।’’
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন খারুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস কদ্দুস মুন্সি, বাচ্চু মিয়া, শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে সারমিনা সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/মিলন/বকুল