সমঝোতার ভিত্তিতে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে: উপদেষ্টা ফরিদা
Published: 21st, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, সংস্কার বাস্তবায়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে।
আজ শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) ‘বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা অগ্রগতি এবং গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ন’শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় অংশ নেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ফরিদা আখতার।
মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মাছ আমিষের জোগানদাতা, প্রাণিজ আমিষ হিসেবে বাঙালির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ করে ছোট মাছ কীভাবে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যায়, এ জন্য বিএফআরআইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগ, বিএফআরআই ও মৎস্য অধিদপ্তরকে অভিন্ন লক্ষ্যে আন্তসমন্বয় করে কাজ করতে হবে, তবেই বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের গুণগত পরিবর্তন সম্ভব।
ফরিদা আখতার বলেন, কৃষি কার্যক্রমে ব্যবহৃত কীটনাশক হাওর এলাকার মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এসব কমিটির কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে হাওরাঞ্চলে কীটনাশক ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমবে। ফলে জলজ প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় ও হুমকির মুখে থাকা মাছ শনাক্তে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) প্রজাতিগুলোকে লাল (বিপন্ন), হলুদ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও সাধারণ (নিরাপদ) শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মাছের সংকট নিরসনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিএফআরআই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর তা সফল হলে, তা দেশের মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে একটি বড় মাইলফলক হবে।
বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে ওই কর্মশালায় ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, মৎস্য খামারিরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাদুপানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হারুন উর রশিদ গবেষণা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র মৎস য আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
ভার্চুয়ালি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ৪৪ উপজেলায় হচ্ছে পাবলিক লাইব্রেরি
দেশের ৪৪টি উপজেলায় উপজেলা পরিষদের অধীনে পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব লাইব্রেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সচিবালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণের কার্যক্রম নিয়েছেন বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্ধারিত ডিজাইন এবং প্রাক্কলন অনুযায়ী লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে।
আরো পড়ুন:
৫ আগস্ট সরকারি ছুটি: ফারুকী
২৫৩ জন গুমের প্রমাণ মিলেছে
‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ প্রচারণাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে: কমিশন
রংপুর বিভাগের রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা জেলার ৪১টি উপজেলায়, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা এবং খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলাসহ মোট ৪৪টি উপজেলায় এ পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি লাইব্রেরি নির্মাণের জন্য ব্যয় হবে ৫৩ লাখ টাকা। ৪৪ লাইব্রেরি স্থাপনের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের অনুকূলে এরই মধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, “আমি বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখেছি কোথাও কোথাও শিক্ষার হার ৪২ শতাংশেরও নিচে। যেটা আমাদের জাতীয় গড়ের অর্ধেকের কাছাকাছি। এটা থেকে বোঝা যায় সেখানে শিক্ষার কি অবস্থা! তাই আমাদের প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত ছিল যে উপজেলাগুলোতে শিক্ষার হার জাতীয় গড়ের চেয়ে কম, সেখানে আমরা পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপন করবো। এটার জন্য বাজেট বরাদ্দ না থাকায় আমাদের বিশেষ বরাদ্দ থেকে এই উদ্যোগটা নিয়েছি।”
তিনি বলেন, “আমরা মাত্র ২৩ কোটি টাকায় ৪৪টি উপজেলায় পাবলিক লাইব্রেরি করছি। প্রতিটি লাইব্রেরির জন্য ৫৩ লাখ টাকা খুব বেশি কিছু নয়। আমাদের লক্ষ্য থাকবে সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় যেখানে ডেডিকেটেড পাবলিক লাইব্রেরি নেই, সবগুলো উপজেলা আমরা এটা বাস্তবায়ন করব। ৪৪টা উপজেলা হচ্ছে আমাদের স্টার্টিং। সব এরিয়াতে আমরা এটা বাস্তবায়ন করব।”
উপদেষ্টা বলেন, “তবে আমাদের ফোকাস এরিয়া থাকবে একটা আধুনিক মানসম্মত লাইব্রেরি। যেখানে সবাই আসতে আগ্রহ বোধ করবেন। লাইব্রেরিটা আসলেই কাজে লাগবে। অন্যান্য সরকারি ভবনের মতো পড়ে না থাকে-সেটাই থাকবে আমাদের মূল লক্ষ্য।”
তিনি আরো বলেন, “রাজনৈতিক প্রিভিলেজের কারণে কোনো এলাকায় বেশি উন্নয়ন আর কোনো এলাকায় কম উন্নয়ন যাতে না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। এমনটা যাতে আর না হয়। আমরা দেখেছি গোপালগঞ্জের একটি উপজেলায় গেলে দেখা যাচ্ছে কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে, আর রংপুরের আরেকটি জেলায় কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ মিয়াসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ