জনগণের পছন্দের একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সুষ্ঠ ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। 

তিনি বলেন, ‍“নির্বাচন কমিশন এবং সংস্কারের লক্ষ্যে যেসব উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যে নির্ধারিত তারিখ ঘোষিত হয়েছে; তার মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।”

শনিবার (২১ জুন) সকালে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা ও গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

বিবিসিকে অধ্যাপক ইউনূসের সাক্ষাৎকার
আওয়ামী লীগ ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা 

উন্নয়ন প্রকল্প যেন প্রকৃতির ক্ষতি না করে: প্রধান উপদেষ্টা

ফরিদা আখতার বলেন, “নিরাপদ ফিড করা গেলে অনিরাপদ মাছের সংখ্যা কমে যাবে। সে লক্ষ্যেই মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।” 

বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড.

অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. রফিকুল ইসলাম সরদার, মৎস্য অধিদপ্তর ময়মনসিংহের বিভাগীয় পরিচালক নৃপেন্দ্র নাধ বিশ্বাস। এর আগে অতিথিরা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

ফুল নয়, যেন চিংড়ি

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রতীরে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন। বিভিন্ন ধরনের পুষ্প, বৃক্ষ, লতাগুল্মে সমৃদ্ধ এই উদ্যান। মাঝেমধ্যেই যাই এই উদ্যানে। সর্বশেষ গিয়েছিলাম গত ১০ মে ২০২৫ বিকেলে। প্রচণ্ড গরম পড়েছিল সেদিন। তাড়াতাড়ি মূল গেট দিয়ে ঢুকে সোজা চলে যাই পুকুরপাড়ে। এই পুকুরের উত্তর পাড়ে পেয়ে যাই লাল ‘চিংড়িগাছের’ ঝোপ। মনে হলো যেন গাছের শাখার আগায় আগায় অনেক চিংড়ি বসে আছে। ফুলের মঞ্জরিপত্রের রং লাল, দেখতে চিংড়ির খোলসের মতো। তাই এটি চিংড়িগাছ নামে পরিচিত। ইংরেজিতে প্রধানত পরিচিত Mexican shrimp plant নামে। এ ছাড়া ইংরেজিতে এই উদ্ভিদ শ্রিম্প বুশ, ফলস হপ, ব্রাজিলিয়ান শাওয়ার প্ল্যান্ট, ফাউন্টেইন প্ল্যান্ট ইত্যাদি নামে পরিচিত। এর আদিনিবাস মেক্সিকো থেকে সেন্ট্রাল আমেরিকা। যেসব উদ্ভিদ বিগত কয়েক বছরে নার্সারিওয়ালা ও শৌখিন উদ্ভিদপ্রেমীদের হাত ধরে আমাদের দেশে এসেছে, বাগানে জায়গা করে নিয়েছে, তার মধ্যে চিংড়িগাছ অন্যতম।

এর বৈজ্ঞানিক নাম Justicia brandegeeana, এটি Acanthaceae পরিবারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বাসক, জগৎ–মদন এই গোত্রের উদ্ভিদ। আমেরিকান সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও উদ্ভিদবিদ টাউনশেন্ড স্টিথ ব্র্যান্ডেগির (১৮৪৩-১৯২৫) নামানুসারে এর প্রজাতির নামকরণ করা হয়েছে।

এই চিংড়িগাছ ১ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। উদ্ভিদের কাণ্ড এবং পাতাগুলো নমনীয়। পাতা ডিম্বাকৃতির, সবুজ। পাতাগুলো বিভিন্ন ধরনের হয় এবং সাধারণত শাখা-প্রশাখাসহ গুচ্ছাকারে বৃদ্ধি পায়। গাছটি যত বেশি রোদ পায়, দাগযুক্ত পাতায় সাদা রঙের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং বিপরীতভাবে কাণ্ড থেকে তৈরি মঞ্জরিপত্র থেকে ফুল বের হয়। মঞ্জরিপত্রগুলো প্রথমে সাদা থাকে কিন্তু বেশি রোদের সংস্পর্শে এলে এগুলো ফ্যাকাশে গোলাপি থেকে গাঢ় হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মঞ্জরিদণ্ডের গায়ে একের পর এক মঞ্জরিপত্র বা ব্রাক্ট তৈরি হয়, যতক্ষণ না ঝরে পড়ে। এভাবে তৈরি হয় ব্রাক্টের শিকল। এই শিকল কয়েক সেন্টিমিটার থেকে শুরু করে প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ফুলগুলো সাদা, লম্বা ও পাতলা এবং মেরুন রঙের গ্রীবাযুক্ত। ফুল লাল মঞ্জরিপত্রের কক্ষ থেকে উৎপন্ন হয়।

ফুল ফোটা শুরু হওয়ার পর কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে। এরপর আবার শুরু হওয়ার আগে অল্প সময়ের জন্য থেমে যায়। ফুলের লাল রঙের ব্রাক্ট হামিংবার্ড এবং প্রজাপতিকে আকর্ষণ করে। পরাগায়ন সাধারণত হামিংবার্ডের মাধ্যমে হয়।

এই চিংড়িগাছ পূর্ণ রোদ গ্রহণ করে। এর ফুল বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। এটি ছাঁটাই করে একটি খাড়া গুল্ম হিসেবে জন্মানো যেতে পারে। কাটিং এবং বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার করা হয়। এর চাষের জন্য প্রয়োজন উর্বর মাটি এবং পর্যাপ্ত পানি। গাছ পর্যাপ্ত পানি না পেলে পাতা ঝরে পড়ে। হাউসপ্ল্যান্ট হিসেবে এই গাছ মানানসই। বর্তমানে এর অনেক আবাদি জাত বা কালটিভার পাওয়া যায়, যাদের ব্রাক্টের রয়েছে হলুদ, গোলাপি বা ইটের মতো ঘন রং। প্রতিবছর একে ছেঁটে দেওয়া উচিত। এই উদ্ভিদ রয়্যাল হর্টিকালচারাল সোসাইটির ‘গার্ডেন মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছে। ১০-২০ বছর টিকে থাকে এই উদ্ভিদ।

ঐতিহ্যগতভাবে মেক্সিকোর হুয়াস্টেক জনগণ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, আমাশয় এবং ক্ষতের চিকিৎসার জন্য এই গাছ ব্যবহার করে। জাস্টিসিয়া গণের অন্যান্য প্রজাতির মতো এর টিউমারবিরোধী, অ্যান্টিভাইরাল এবং ডায়াবেটিসরোধী গুণ রয়েছে।

চয়ন বিকাশ ভদ্র, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাস-মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে নিহত ৫
  • ময়মনসিংহে অ্যাম্বুলেন্স-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২
  • ময়মনসিংহে অ্যাম্বুলেন্স-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ২
  • স্কুলব্যাগে মানুষের কঙ্কাল নিয়ে বাসে উঠছিলেন, ধরা পড়লেন তল্লাশিতে
  • গোল্ডকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন রংপুর ও রাজশাহী
  • ভার্চুয়ালি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ৪৪ উপজেলায় হচ্ছে পাবলিক লাইব্রেরি
  • কার কথায় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাঙা হচ্ছে, প্রশ্ন শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতাদের
  • শিশু সন্তানকে হত্যার পর মেঝেতে পুঁতে রাখে বাবা
  • ফুল নয়, যেন চিংড়ি