প্রেম করছেন বর্তমান সময়ের ব্যস্ত টেলিভিশন অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি। তার প্রেমিকের নাম সাদাত শাফি নাবিল। ২০২৩ সালের ৪ জুলাই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে কয়েকটি স্থিরচিত্র ও ভিডিও ক্লিপ প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রেমিককে সামনে আনেন এই অভিনেত্রী। শুধু তাই নয়, দুই পরিবারকে তাদের সম্পর্কের কথাও জানিয়েছেন তারা।

এরপর প্রায় দুই বছর কেটে গেছে। তবে মাহির প্রেম-বিয়ে নিয়ে তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রেমের সম্পর্ককে পরিণয় দেওয়ার বিষয়ে কী ভাবছেন এই অভিনেত্রী? তার পরিষ্কার জবাব— “সময় নিচ্ছি। তবে বিয়ে করলে সবাইকে জানিয়েই করব।”

ব্যাখ্যা করে সামিরা মাহি বলেন, “আপনার একটা মানুষের সঙ্গে যখন সম্পর্ক হয়, বিশেষ করে মেয়েরা ভাবে, এই মানুষটার সঙ্গেই থাকব এবং থাকতে চাই। আমি সব দিয়ে একসঙ্গে থাকার ট্রাই করব। কিন্তু কখনো কখনো পরিস্থিতি ভিন্ন থাকে, সম্পর্ক টিকে না। সেটা প্রেমের সম্পর্ক হোক বা বিয়ে। সুতরাং আমাদের পরিকল্পনা রাখা উচিত। কিন্তু সেটা নির্ভর করে ভাগ্যে কী আছে তার উপরে।”

আরো পড়ুন:

খুর মার্কা নিয়ে ভোটযুদ্ধে ব্যাচেলর পয়েন্টের শিমুল, পোস্টার ভাইরাল

থাইল্যান্ডে মা হলেন স্বাগতা

তিন বছরের বন্ধুত্ব, পরবর্তীতে প্রেমে রূপ নেয় মাহি-শাফির সম্পর্ক। এর আগে মাহি বলেছিলেন, “শাফি আমার ভীষণ ভালো একজন বন্ধু। একটা সময় আমরা ভালোবাসার সম্পর্কে জড়াই।”

২০১৪ সালে ‘রঙ আরটিভি টোয়েন্টি টোয়েন্টি কালারস মডেল হান্ট’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন সামিরা খান মাহি। এরপর একস্ট্যাসি, জিপি, টেক্সমার্ট, প্রাইড গার্লস, বাংলালিংক, স্যাইলরহ বিভিন্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মডেল হয়ে কাজ করেন মাহি। ওই সময়ে অভিনয়ে নাম লেখালেও তার ফোকাস ছিল শুধুই মডেলিং। তারপর কাজ থেকে কয়েক বছরের বিরতি নেন মাহি।

‘তরুণ তুর্কি’ ধারাবাহিক নাটকে প্রথম অভিনয় করেন সামিরা খান মাহি। পরবর্তীতে ‘পারিবারিক গোলযোগ’, ‘নীড় খোঁজে গাঙচিল’, ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’, ‘শুভ্রার ওয়্যারড্রব’, ‘আকাশ বাড়িয়ে দাও’, ‘ম্যাচিং ব্রাদার’, ‘এক পা দু’পা’ প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। তবে ‘গার্লস স্কোয়াড’ নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক

এছাড়াও পড়ুন:

অপ্রত্যাশিত আতিথেয়তা

সময়টা ২০২২ সালের মাঝামাঝি। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। বেলা দেড়টার দিকে মগবাজার থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পুরান ঢাকার একটি প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে ছুটে চলা। উদ্দেশ্য, একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে পরীক্ষায় সহধর্মিণীর অংশগ্রহণ। সঙ্গে আছে ছয় মাসের কম বয়সী সন্তান। রোদে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা। অবশ্য অটোরিকশা চলতে শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়েছে সে।

পরীক্ষার সময় ছিল বেলা তিনটা। পুরান ঢাকার সরু গলির যানজটের কথা ভেবে সময় হাতে রেখে বের হওয়ার চেষ্টা ছিল। যা ভেবেছিলাম, তা–ই হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সড়কে ঢুকতেই গাড়ির জট। ধীরে এগোচ্ছে অটোরিকশা। দুশ্চিন্তাও বাড়ছে। অটোরিকশার দরজার ফাঁক দিয়ে পরীক্ষার্থীদের অনেককে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সঙ্গে শিশুসন্তান থাকায় আমাদের সে সুযোগ ছিল না।

ভিড় ঠেলে শেষ পর্যন্ত মিনিট দশেক আগে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে পৌঁছাল অটোরিকশা। স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। তখনো ঘুমিয়ে খুদে যাত্রী। প্রথম সন্তান; এত ছোট শিশু কোলে নিতে অভ্যস্ত নই আমি। তাই আসার সময় বেড়াতে আসা আমার ছোট বোনকেও নিয়ে এলাম। সন্তানকে বোনের কোলে রাখলাম। ফিডারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশে ছুটল ওর মা। তখনো খুদে অভিভাবক ঘুমাচ্ছে। মন থেকে চাচ্ছিলাম, যতটুকু বেশি ঘুম পাড়িয়ে রাখা যায়।

কিন্তু বিপত্তি বাধাল কড়া রোদ। আশপাশে সেভাবে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। সূর্যের আলো পড়তেই ঘুমের মধ্যে সে নড়াচড়া করছে। গরমে ঘেমেও যাচ্ছে। বাসা থেকে নেওয়া হাতপাখাও তেমন কাজে দিচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে বললাম, ভেতরে ঢোকা যাবে কি না। তিনি জানালেন, ভেতরে ঢোকার সুযোগ নেই।

কিছুটা অসহায় লাগছিল। কিছুক্ষণ পর আবার ওই কর্মচারীকে বললাম, ছোট শিশু। গরমে বেকায়দা অবস্থা। শুধু ওকে নিয়ে সীমানাদেয়ালের ভেতরে আড়ালে একটু দাঁড়াতে দিলে ভালো হতো। কিছুটা ভেবেচিন্তে তিনি বললেন, ‘ঠিক আছে; তবে ভেতরে যাওয়া যাবে না। বুঝেনই তো, আমাদেরও কিছু করার থাকে না।’ যাক বাবা, আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম।

পকেট গেট (মূল ফটক লাগোয়া ছোট একটি ফটক) পেরিয়ে ছোট বোন আমার শিশুসন্তানকে নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের একটি ভবন আর সীমানাদেয়ালের মাঝের গলিতে গিয়ে দাঁড়াল। আমিও ওর জিনিসপত্র আনা ব্যাগটি নিয়ে ঢুকলাম। এর মধ্যে পাশের দাপ্তরিক কক্ষ থেকে একটি চেয়ার এনে আমার বোনকে বসতে দিলেন ওই কর্মচারী। আমি দাঁড়িয়ে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছি। তবে গরমের মধ্যে কোলে রাখায় তেমন কাজ হচ্ছিল না। মনে হচ্ছে, যেকোনো সময় বাচ্চার ঘুম ভেঙে যাবে।

একপর্যায়ে ওই কর্মচারী জানতে চাইলেন আমি কী করি। সাংবাদিকতা নিয়ে সমাজের একটি অংশের নেতিবাচক ধারণা আছে। তাই আগ বাড়িয়ে আমি পেশার পরিচয় দিই না। কেউ জানতে চাইলে, সাংবাদিকতা করি—এতটুকু বলেই থামতে স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করি। তবে ওই কর্মচারী থামলেন না। বললেন, ‘কোন পেপারে (পত্রিকায়)?’ তখন আমি বললাম, প্রথম আলোতে। এ কথা শুনতেই ওই কর্মচারীর অভিব্যক্তি পাল্টে গেল। হাসিমুখে বললেন, ‘আমি প্রথম আলো পত্রিকা পড়ি।’

এরপর ওই কর্মচারী বললেন, ‘একটি চেয়ার এনে দিই, বসুন।’ বিনয়ের সঙ্গে না করলাম। বললাম, না, লাগবে না। কিছুক্ষণ পর এসে বললেন, ‘বাবুকে নিয়ে অফিসের রুমে বসেন, ফ্যানের নিচে।’ এবার আর ‘না’ করলাম না। আমার বোন গিয়ে অফিসের বড়সড় একটি টেবিলের এক পাশে একটি চেয়ারে বসল। যাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা, সে কোলে তখনো ঘুমে। দেয়ালে লাগানো ফ্যানটির বাতাস গায়ে লাগতেই ঘুম আরও গভীর হলো। আর দূর থেকে দেখেই ফ্যানের বাতাসের প্রশান্তি যেন আমাকেই ছুঁয়ে গেল।

আমি গা এলিয়ে দিয়ে গলিতে রাখা চেয়ারটাতে গিয়ে বসলাম। ওই কর্মচারী এসে বললেন, ভেতরে বসুন ফ্যানের নিচে। বললাম, সেখানে ভিড় বাড়ানোর দরকার নেই। এবার বললেন, চা খাবেন? বিনয়ের সঙ্গে বললাম, না থাক; গরমের মধ্যে চা খাব না। মনে মনে বলছি, এমনিতে আমার সন্তানের জন্য যতটুকু করেছেন, তাতেই অনেক কৃতজ্ঞ।

এদিকে দেড় ঘণ্টার পরীক্ষার সময় যেন ফুরাতেই চায় না। বারবার মুঠোফোনে সময় দেখি। ঘুম থেকে জেগে বাচ্চা যদি কান্না শুরু করে, থামাতে না পারলে মুশকিল হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার মিনিট বিশেক আগে ও জেগে গেল। ফ্যানের নিচে বসেই তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে আমার বোন। পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে এলে আমরা ফটকের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। শেষের ঘণ্টা বাজতেই কয়েক মিনিটের মধ্যে রীতিমতো দৌড়ে এসে হাজির সন্তানের মা; হাঁপাচ্ছিল সে। বলল, চারতলায় সিট পড়েছে, এ জন্য আসতে দেরি হয়েছে। পরীক্ষা মিনিট দশেক আগেই শেষ করে অপেক্ষা করছিল কখন ঘণ্টা বাজবে। জানতে চাইছে, ও কান্না করেছে কি না, কোনো সমস্যা হয়েছে কি না। আমি বললাম, কোনো সমস্যা হয়নি। পরে কথা বলব, আগে অটোরিকশা ধরো। মানুষ বেশি, অটোরিকশা পাব না। পরে এক চালক ভাড়া কিছুটা বেশি চাইলেও অটোরিকশা নিয়ে নিলাম।

সন্তান মায়ের কোলে, আমি নির্ভার। এরপর অটোরিকশায় বসে এতক্ষণ যা যা ঘটেছে বললাম। সহধর্মিণী সব শুনে বলল, লোকটা (কর্মচারী) অনেক ভালো মানুষ; আল্লাহ ওনার ভালো করুন। এরপর অটোরিকশা চলছিল আর আমি ভাবছিলাম, মাত্র কয়েক মাস আগে যোগ দেওয়া কর্মস্থলের পরিচয় দিতেই লোকটার বদলে যাওয়া অভিব্যক্তি, সেই অপ্রত্যাশিত আতিথেয়তার কথা। এই আস্থা ও ভালোবাসা প্রথম আলো রাতারাতি অর্জন করেনি, এত সহজে অর্জিত হয়নি।

মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমন্বিত বার্তা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী
  • গভীর রাতে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি
  • জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা
  • পাঁচ ব্যাংকের প্রশাসক কার্যালয়ে আসা শুরু করেছেন, গ্রাহকের চাপ নেই
  • হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার অপসারিত
  • হজরত আদম (আ.) এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রথম আবাস
  • ডেমোক্র্যাটদের জয়, অর্থনৈতিক সমস্যা—ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা
  • সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি, পদ ১০ হাজার ২১৯, প্রথম ধাপে ৬ বিভাগে
  • অপ্রত্যাশিত আতিথেয়তা
  • হাসিনার বিচারের রায় হচ্ছে আগামী সপ্তাহে: মাহফুজ