প্রেমিককে পরিচয় করালেও মাহি কেন বিয়ে করছেন না?
Published: 23rd, June 2025 GMT
প্রেম করছেন বর্তমান সময়ের ব্যস্ত টেলিভিশন অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি। তার প্রেমিকের নাম সাদাত শাফি নাবিল। ২০২৩ সালের ৪ জুলাই ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে কয়েকটি স্থিরচিত্র ও ভিডিও ক্লিপ প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রেমিককে সামনে আনেন এই অভিনেত্রী। শুধু তাই নয়, দুই পরিবারকে তাদের সম্পর্কের কথাও জানিয়েছেন তারা।
এরপর প্রায় দুই বছর কেটে গেছে। তবে মাহির প্রেম-বিয়ে নিয়ে তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রেমের সম্পর্ককে পরিণয় দেওয়ার বিষয়ে কী ভাবছেন এই অভিনেত্রী? তার পরিষ্কার জবাব— “সময় নিচ্ছি। তবে বিয়ে করলে সবাইকে জানিয়েই করব।”
ব্যাখ্যা করে সামিরা মাহি বলেন, “আপনার একটা মানুষের সঙ্গে যখন সম্পর্ক হয়, বিশেষ করে মেয়েরা ভাবে, এই মানুষটার সঙ্গেই থাকব এবং থাকতে চাই। আমি সব দিয়ে একসঙ্গে থাকার ট্রাই করব। কিন্তু কখনো কখনো পরিস্থিতি ভিন্ন থাকে, সম্পর্ক টিকে না। সেটা প্রেমের সম্পর্ক হোক বা বিয়ে। সুতরাং আমাদের পরিকল্পনা রাখা উচিত। কিন্তু সেটা নির্ভর করে ভাগ্যে কী আছে তার উপরে।”
আরো পড়ুন:
খুর মার্কা নিয়ে ভোটযুদ্ধে ব্যাচেলর পয়েন্টের শিমুল, পোস্টার ভাইরাল
থাইল্যান্ডে মা হলেন স্বাগতা
তিন বছরের বন্ধুত্ব, পরবর্তীতে প্রেমে রূপ নেয় মাহি-শাফির সম্পর্ক। এর আগে মাহি বলেছিলেন, “শাফি আমার ভীষণ ভালো একজন বন্ধু। একটা সময় আমরা ভালোবাসার সম্পর্কে জড়াই।”
২০১৪ সালে ‘রঙ আরটিভি টোয়েন্টি টোয়েন্টি কালারস মডেল হান্ট’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন সামিরা খান মাহি। এরপর একস্ট্যাসি, জিপি, টেক্সমার্ট, প্রাইড গার্লস, বাংলালিংক, স্যাইলরহ বিভিন্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মডেল হয়ে কাজ করেন মাহি। ওই সময়ে অভিনয়ে নাম লেখালেও তার ফোকাস ছিল শুধুই মডেলিং। তারপর কাজ থেকে কয়েক বছরের বিরতি নেন মাহি।
‘তরুণ তুর্কি’ ধারাবাহিক নাটকে প্রথম অভিনয় করেন সামিরা খান মাহি। পরবর্তীতে ‘পারিবারিক গোলযোগ’, ‘নীড় খোঁজে গাঙচিল’, ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’, ‘শুভ্রার ওয়্যারড্রব’, ‘আকাশ বাড়িয়ে দাও’, ‘ম্যাচিং ব্রাদার’, ‘এক পা দু’পা’ প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। তবে ‘গার্লস স্কোয়াড’ নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে মাদ্রাসায় দফায় দফায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন
রাজশাহীতে একটি মাদ্রাসায় দফায় দফায় এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার একটি কক্ষে জুহায়ের তাজিম (১৬) নামে ওই কিশোর শিক্ষার্থীকে পর পর দুই দিন কয়েক দফায় বেধড়ক পেটানো হয়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জুহায়ের তাজিম রাজশাহী মহানগরের কয়েরদাঁড়া খ্রিস্টানপাড়া মোড় এলাকার মাইনজ ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হিফজ মাদ্রাসা শাখার শিক্ষার্থী। মাদ্রাসার স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমানের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত শিক্ষার্থী তাজিম জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর সদরের মুগনি শাহের ছেলে।
আরো পড়ুন:
নবীনদের বরণ করে নিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপসহ অক্সফোর্ডে পিএইচডির সুযোগ জাবি ছাত্রীর
এ ঘটনায় তাজিমের মা জাকিয়া সুলতানা রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মাদ্রাসার পরিচালক আইরিস পারভীন এবং স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে এজাহার দায়ের করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘গত ১৩ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। তিনি আমার ছেলের দুই হাত এবং দুই পায়ের উরু ও নিতম্বে বেত, পর্দার পাইপ ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এর ফলে আমার ছেলে মারাত্মকভাবে শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।
‘‘এই ঘটনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আইরিশ পারভীনকে জানানো হয়। তবে তিনি পদক্ষেপ নেননি। বরং তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান শুধু আমার ছেলেকেই নয়, মাদ্রাসার আরো অনেক শিক্ষার্থীকে প্রতিনিয়ত শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করে চলেছেন।’’ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইশতিয়াক, ইসমাইল এবং আবু সাঈদসহ অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্যাতিত শিক্ষার্থী তাজিমকে নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘‘স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান আমার বিরুদ্ধে একটি নোংরা অভিযোগ আনেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে শ্রেণিকক্ষ থেকে তিনি আমাকে ডেকে নেন। এরপর একটি ছোট নির্জন কক্ষে নিয়ে যান। বেত, পর্দার পাইপ এবং লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক পেটান। পরের দিনও তিনি আমাকে একইভাবে মারধর করেছেন। কক্ষটি মাদ্রাসার টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত। এখানেই অন্য শিক্ষার্থীদেরও প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মসানসিকভাবে নির্যাতন করেন স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর।’’
তাজিমের মা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘১৪ সেপ্টেম্বর আমরা বার বার ফোন দিলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেনি। পরের দিন সন্ধ্যায় আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে গোপনে চলে আসে। এ সময় তাকে আসতে বাধা দেন পরিচালক আইরিস পারভীন এবং স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ। পরে একরকম জোর করে আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে আসে। ছেলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা। খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কম কথা বলছে। তাকে নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছি। তার ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছেন, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় জোর দাবি জানাচ্ছি।’’
নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমানকে ফোন দেওয়া হয়। না ধরলে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা এবং থানার এজাহার দায়েরের বিষয়টি জানিয়ে মেসেজ দিলে তিনি সাড়া দেন। তিনি লেখেন, ‘‘অভিযোগ কবে, কে করেছে, একটু বিস্তারিত বলবেন প্লিজ।’’ এরপর তিনি আর কোনো উত্তর দেননি। ফোন দেওয়া হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে অভিযোগ সম্পর্কে তার পরিপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কিশোর তাজিমকে নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আইরিস পারভীন বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আমার বাবা-মা অসুস্থ থাকার কারণে আমি বাসায় ছিলাম। এ সময় স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ শিক্ষার্থী তাজিমকে মারধর করেছেন। এর আগেও তিনি শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেছেন। তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আমার কথা না মেনে আবারও নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ইমতিয়াজকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছি। আমি অনুততপ্ত এবং লজ্জিত। যেসব শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি।’’
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/কেয়া/বকুল