বশের কীর্তিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় জয় প্রোটিয়াদের
Published: 1st, July 2025 GMT
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের পর প্রথম ম্যাচেই দাপট দেখাল প্রোটিয়ারা। ১১ বছর পর জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়ে প্রথম টেস্টেই কেশব মহারাজের দল স্বাগতিকদের হারিয়েছে ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানে। এটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদের সর্বোচ্চ রানের জয়। বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ৫৩৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিনেই ২০৮ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
এই ম্যাচে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছেন করবিন বশ। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ১০০ রানের পর বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে গড়েছেন অনন্য এক কীর্তি। ২০০২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে জ্যাক ক্যালিসের পর, তিনিই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান যিনি টেস্টের এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট ও সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখালেন। সব মিলিয়ে এই তালিকায় দেশটির চতুর্থ ক্রিকেটার বশ।
টেস্ট ইতিহাসে দীর্ঘ এই তালিকার প্রথম দুই ক্রিকেটারই দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৮৯৯ সালে কেপ টাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিমি সিনক্লেয়ার ও ১৯১০ সালে জোহানেসবার্গে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই অব্রে ফকনার গড়েন এই কীর্তি। ক্যালিস এই স্বাদ পান দুই দফায়।
বশের আগে সবশেষ বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ এই স্বাদ পান গত এপ্রিলে, চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। তবে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে মূল ভরসা ছিলেন প্রিটোরিয়াস। ২৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ১৫৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে ৪১৮ রানে পৌঁছে দেন তিনি। যার ফলে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
অন্যদিকে, অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা কোডি ইউসুফ দুই ইনিংসেই নেন ৩টি করে উইকেট। স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের পোস্টের পর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো গৃহহীনদের তাঁবু
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে গৃহহীনদের একটি বড় তাঁবু উচ্ছেদ করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রোববার তাঁর গলফ ক্লাবে যাওয়ার সময় গৃহহীনদের ওই শিবিরের ছবি তুলে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে লেখেন, ‘এই গৃহহীনদের অবিলম্বে এখান থেকে সরে যেতে হবে।’
ট্রাম্পের এ পোস্টের চার দিন পরই বুলডোজার দিয়ে গৃহহীনদের ওই তাঁবু উচ্ছেদ করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় এক দিনেই অন্তত ১১ জন গৃহহীন তাঁদের আশ্রয় হারিয়েছেন।
ট্রাম্পের পোস্ট করা একটি ছবিতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি নিজের তাঁবুর পাশে একটি ভাঁজ করা চেয়ারে বসে আছেন। পরে জানা যায়, তাঁর নাম বিল থিওডি। থিওডির তাঁবুও উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন তিনি আশ্রয়হীন।
নিজের ছবি দেখে বিল থিওডি বলেন, ‘ওটা আমি। তিনি (ট্রাম্প) গাড়ির জানালা দিয়ে আমার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করেছেন। এটিকে তাঁর রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এটা তাঁর কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ।’
হোয়াইট হাউসের প্রেস কনফারেন্স কক্ষে গত সোমবার ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন সব পার্ক থেকে গৃহহীনদের শিবিরগুলো সরিয়ে ফেলবে।
এ ঘোষণার পর বিবিসি ভেরিফাই ট্রাম্পের পোস্ট করা ছবিগুলো যাচাই করে। তাঁবুগুলোর ছবিতে দৃশ্যমান সূত্র, যেমন বাঁকানো রাস্তার ধারে ঘাসের জায়গা ব্যবহার করে বিবিসি গুগল স্ট্রিটভিউতে একটি স্থানের সঙ্গে মিলিয়েছে।
গৃহহীনদের শিবিরটি হোয়াইট হাউস থেকে গাড়িতে প্রায় ১০ মিনিটের দূরত্বে আর বিবিসি কার্যালয় থেকেও খুব কাছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় কর্মকর্তারা গৃহহীনদের সতর্ক করছেন যে তাঁদের শিগগির সরে যেতে হতে পারে।
মিজৌরি অঙ্গরাজ্য থেকে আসা ৬৬ বছর বয়সী বিল থিওডি এখানে অনেক বছর ধরে থাকেন। নির্মাণশিল্পে কাজ করতেন। ২০১৮ সাল থেকে তাঁর স্থায়ী কোনো চাকরি নেই। বর্তমানে মাসে কিছুদিনের কাজ জোটে। গত বৃহস্পতিবার থিওডিসহ অন্য বাসিন্দাদের জানানো হয় অবিলম্বে তাঁবু গুঁটিয়ে চলে যেতে হবে।
বিল থিওডি বলেন, ‘আমি বুঝি, উনি (ট্রাম্প) এলোমেলো কিছু দেখতে চান না। তাই আমরা জায়গাটা যতটা সম্ভব পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। আমরা প্রেসিডেন্ট বা অন্য কাউকে অসম্মান করতে চাই না।’
ওয়াশিংটন ডিসির স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের ডেপুটি মেয়র ওয়েন টারনেজ বলেন, শহর কর্তৃপক্ষ আগেও এভাবে গৃহহীনদের শিবির উচ্ছেদ করেছে। সাধারণত অন্তত এক সপ্তাহ আগে নোটিশ দেওয়া হয়, তবে ট্রাম্পের ঘোষণার পর এবার প্রক্রিয়াটি দ্রুত করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাবে, ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বের হওয়ার প্রধান একটি সড়কের পাশে উচ্ছেদ করা শিবিরটি শহরের সবচেয়ে বড় গৃহহীন শিবির ছিল। সেখানে ১১ জন থাকতেন।
তথ্য বলছে, চলতি বছরের শুরুতে রাজধানীর গৃহহীন শিবিরে ৯৭ জন ছিলেন। ২০২৩ সালে এখানে ২৯৪ জন ছিলেন।
শহরের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছর বাস্তুচ্যুতির শিকার মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ১৩৮। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৬১৩। এর মধ্যে প্রায় ৮০০ জন সম্পূর্ণ খোলা আকাশের নিচে আর বাকি ৪ হাজার ৩০০ জন কোনো না কোনো অস্থায়ী আশ্রয়ে আছেন।
বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে গৃহহীনদের তাঁবু