অপ্রকৃতস্থ
সরলতা, একা থাকতে দাও। গুম্ফার রাত্রির মতো এখনই
দ্রুত নেমে এসো না। আমার সময় আছে
ত্রুটি যা ছিল, সেসব জুয়ায়ই প্রকৃত সুন্দর। ক্ষীণ আলোর
সাথে যোগাযোগ আজ বহুদিন হলো নেই। আলস্য বিক্রি
করে স্মৃতির সাথে এখনো চলছি ক্ষত নিয়ে, মেরামতে
পড়ে আছে, হে অনাদি
পরস্ত্রীর মুখোমুখি এখন কালক্রমে ডানাধীন রাখো কাকে
পঙ্ক্তি ভালোবাসত কতিপয় শব্দকে, আজ এরা নিবিড় হলো
সলিলসমাধি ঘটে গেছে, আক্রান্ত তুমি এখন এসেছ—
যখন আমাদেরই ওঠবার সময়, আমরা কি আর
বসে থাকতে পারি? সুচতুরভাবে দুটি পক্ষে ভিড়ে গেলে
এখন এসব বিপথগামী সুপরিকল্পিত পথে
দ্রুত চলে যাওয়া ছাড়া তেমন কাজ নেই।
যুক্তিতর্কের কাছাকাছি পৌঁছবার প্রয়াস দেখে মনে হয়
তুমি প্রচণ্ড স্বাধীন। আমরা
বয়ঃসন্ধিতে যখন পৌঁছেছি, তখন তুমি রীতিমতো
প্রথাবিরোধী। তোমার হাতের লেখা আমাদের কাছে
অতি পবিত্র। অস্মিতার ভারে এতকাল যতখানি করেছি ফলাহার
শাকাশী প্রাণীর কোষে যেসব নরম লুকিয়ে আছে, তাকেও কিছুটা খাও
সরলতা, এবার একটু একা থাকতে দাও।
অরুচি শরীরে, আসন্ন স্নিগ্ধের গান শুনে মনে হয়
আরও কিছুটা বাঁচি, কত কাজ বাকি আছে
কত নারীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি মায়ের মতো
কত পুরুষের কাছে আমার সাবালক যৌবন
বড়োর মতো এগিয়ে দিয়েছি, কত শিশুর
সাথে তাদের ভাষায় করেছি যোগাযোগ—এ আর কবে লিখি বলো
মুষড়ে পড়া হয় না বহুকাল, জীবনের ধ্বনি শুনে
সিগারেট খেতে খেতে ভাবি, এখনই মরে যাওয়া হবে প্রচণ্ড গিমিক
সফলতার খোঁজে কিছু তো হলো না, সংজ্ঞা ভুলেছি, তাও—
সরলতা পিছু কেন ছাড়ছ না? একটু একা থাকতে দাও
একা থাকি, বড় ভালো লাগে।
শঙ্কিত হলে সঙ্গ দিতে আবার এসো।
অবিভক্তিসুন্দরের মন খারাপ, মাধুর্যের জ্বর—
এমন সুন্দরের পাশে বসে ছিলাম একদিন। করতলে
মাথাপিছু একটি সূর্য নিয়ে ঘুরছি, আহা, এমন প্রতিভা
সচেতন বহুমুখী একটি হৃদয়, তাকে ডাকো
ক্রন্দনে ত্বরণ ঘটুক কিছুকাল, তবুও তো শীতল
থাকবে দেহ। প্রচুর জল শরীর থেকে নেবে
মৃদুস্বরে চলে যাবে, পেছনে তাকানোর কি আর জরুরত
এই বিঘ্নিত রাত্তিরে? অতএব
চূর্ণিকা, এসো—কোলাহল করো। বুকের সাথে
বুক মিশিয়ে সামগ্রিক জ্বরের অমুদ্রিত তাপ
খানিকটা দাও। কোথায় হারিয়েছি বোঝা যেত। পরস্পর,
এ সুন্দরের মন খারাপ, মাধুর্যের জ্বর।
নৈকট্যকক্ষে রয়েছ, অবিকল যেমনই আছ
তেমনই দেখেছি, তোমাকে। একদিন এসেছিলে
বিম্বের ভেতর থেকে ক্রমাগত একাধিক, আরও বেশি
কবিতা পড়ে আছে, সাহিত্যের আমিষ গন্ধে শরীরের
সবটুকু মেদ ঝরে পড়ে আছে নিরঙ্কুশ এস্প্লানেডে
আহা, বিতরণ কত ক্লান্তি, কত অস্পষ্ট চোখের ভেতর
সুন্দরের ভয়াবহ ক্লান্তি আজ, মাধুর্যের তীব্র জ্বর।
হ্যালোজেনের কাছাকাছিআমরা কোথাও বসতে পারি বিমর্ষতার মাঝামাঝি।
করতে পারি রাত্রিযাপন শহর থেকে দূরে
গানবাজনার শরৎকালে টিপয় থেকে ব্যাগটা কাঁধে হাতটা তুলে উঁচুস্বরে।
আমরা কোথাও যেতে পারি
বসতে পারি দেয়ালগায়ে। পলেস্তারার মাংস খেয়ে
পেটটা তখন টুলু টুলু। শব্দ করে চলবে গাড়ি ডান কবাটে কিংবা বাঁয়ে।
আমরা কোথাও দাঁড়াতে পারি হ্যালোজেনের কাছাকাছি
বিষ বিষয়ে কতক কথা, সবার কথায় কান দেব না
শহরে থেকে খানিক দূরে, যুদ্ধ তখন কেবল শুরু
মানুষ পোড়ার সাঁ সাঁ ধ্বনি কানের কাছে শুধুই বাজে
আমরা কোথাও থামব নাকি? দেখব কারা ব্যস্ত কাজে—
দেখব কারা যাচ্ছে ছুটে সড়কপথে নোংরা বেগে
পুকুরপাড়ে ডাইনি থাকে, ঘাড় মটকায় বেদম রাগে
আমরা এখন ভুতুম থাকি, রাত্রিবেলায় বাঘারপাড়া
আমরা কোথাও থামব কি না—আমরা এখন শক্তিছাড়া
আমরা কোথাও বসতে পারি, বিষণ্নতার কাছাকাছি।
তোমরা থাকো যুদ্ধ নিয়ে। আমরা এখন শহর থেকে অনেক দূরে
অলাতচক্রনিকটতম মানুষের হাতে হাত ধরা থাক
ক্রমাগত, আমাদের ইনফেরিওর ভবিষ্যৎ
জাগ্রত হতে শুরু করে, শতদ্রু যতদ্রুত বাক
সংক্ষেপ রচিত হয়, মস্তিষ্কের অকস্মাৎ
সৃজনীচতুর নিয়মনিচয় একনিষ্ঠ ভক্তের মতো
নির্বিঘ্নে বৃষ্টির দিনে আপতিত হয়, ক্ষতগুলোও
একই প্রকার, সুললিত কণ্ঠে ধরা পড়ে
শরতের শেষকালে বৈশিষ্ট্যহীন শীতের যত
এলোমেলো বেদনা—আমাদের হাতের ফাঁকে ঝরে
সারা মহাকাশ আলোকিত, সকলই বোঝার বাইরে
স্পষ্ট, ক্ষেত্রবিশেষে গাণিতিক বাক্যের বিলীয়মান
ধ্রুব রাশির বরকত–বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় স্থান
ও অলাতচক্রে পরিধিরেখা ভাগ করে, এমন ব্যাস ভালোবাসি।
পগাড়পারে যাইপগাড়পারে যাই—বসে থেকে ভাবি
কখন আসবে নিঃসঙ্গ নৌকোর একখানা মন্দাগ্রস্ত ট্রেলার
স্রোতের আসন্ন কনফিউশন দূর হোক দ্রুত, এ–ও ভাবি
ভাবনার স্মারকগ্রন্থ খুলে দেখি বারবার
যা আছে লেখা, পাঠযোগ্য কি না
সমার্থক এই প্রশ্নের বিরুদ্ধে একটি ভ্রান্ত অভিযোগ
রাখা আছে। সুতরাং এসো শুরু করি বিনা
বাক্যব্যয়ে। বর্তমান কাজে অতীতের সংযোগ
মিলিয়ে দেখা এখনই জরুরি।
‘তবুও তো ক্লান্ত করো’—সিসিলিয়ানের বিরূপ
একটি তাগড়া ঘোড়া চলে আড়াই পায়ে
কখন আসবে চেকমেটের একান্ত তছরুপ
বোর্ড পেতে বসে থাকি সম্ভাবনার উন্মুক্ত নায়ে—
কে কাকে করে আউটপ্লে, কার দৌড় শেষ হলো কোথায়
উদ্ভট সাবজেক্টের ভিড়ে এ-ই একমাত্র ধ্যান
পর্যুদস্ত আবহাওয়াবিদ হয়ে যাওয়া বাকি, ছায়ায়
যেহেতু লুকোনো থাকে রেকলেস বর্ষার ট্রেন
উত্তম মদের পাখি—নেশাতুর সুলভ দুটি ডানা
উড়ুক্কু চিলের সকাল—বাসভূমে লিপিবদ্ধ থাকো তাই
স্রোতের আসন্ন কনফিউশন দূরীকরণ শেষে
এই দেখো, দুর্লভ তোমাকে কেমন ভাবাই!
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার
দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।
পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।