বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরির পেছনে নয়, তিনি হাঁটলেন উল্টো পথে। ফিরলেন গ্রামের মাটিতে। গড়ে তুললেন গরুর খামার। এখন এই খামার থেকেই তাঁর বছরে আয় ১১ লাখ টাকার বেশি। শুধু দুধ বিক্রি করেই মাসে আয় করছেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

গল্পটা মোহাম্মদ ফয়সালের। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম কোনাখালী বাজারপাড়া গ্রামে। বাবা মোহাম্মদ রশিদ পেশায় কৃষক। চার ভাইবোনের মধ্যে ফয়সাল তৃতীয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে ২০২১ সালে স্নাতক ও ২০২২ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন তিনি। পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই গ্রামে গড়ে তোলেন খামার। দুটি গাভি দিয়ে শুরু করা তাঁর খামারে এখন গরু রয়েছে ২০টি। এসব পরিচালনার জন্য রয়েছেন তিনজন কর্মচারী।

প্রতিদিন গাভিগুলো থেকে ৯০ থেকে ১০০ লিটার দুধ সংগ্রহ করি। নিয়মিত পেকুয়া ও বদরখালী বাজারে এই দুধ বিক্রি করি। আমার উদ্দেশ্য বাজারে দুধ বা পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা, মাংসের নয়। অনেকে মাংসের জন্য খামার করেন। আমি করি দুধের জন্য।মোহাম্মদ ফয়সাল, খামারি

চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা বাজারপাড়া গ্রামের ইট বিছানো সড়ক দিয়ে ৩০০ ফুট দক্ষিণে গেলেই ফয়সালের বসতঘর। গত শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির উঠানেই তৈরি করেছেন ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১৮ ফুট প্রস্থের একটি ছাউনি। এতে রাখা ১১টি গাভি। আর বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে রেখেছেন ৯টি বাছুর। ফয়সাল তখন গাভিকে কাঁচা ঘাস দিতে ব্যস্ত। পাশেই এক কর্মচারী দুধ দোহন করছিলেন। আরেক কর্মচারী ঘাস কেটে ছাউনিতে আনছেন।

কাজ করার এক ফাঁকে ফয়সাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকার সময়ই তিন বন্ধু মিলে অনলাইনে গাছের চারা বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ওই ব্যবসা দিয়েই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতেন। সেই থেকে চাকরি না করে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন জাগে তাঁর। এরপর পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভি ও বকনা কিনে যাত্রা শুরু করেন ‘ফয়সাল অ্যাগ্রো ফার্ম’ নামের খামারের। বেসরকারি একটি সংস্থা থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে খামারের ছাউনি নির্মাণ এবং ঘাসের জন্য ১৬০ শতাংশ জমি বর্গা নেন।

ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিদিন গাভিগুলো থেকে ৯০ থেকে ১০০ লিটার দুধ সংগ্রহ করি। নিয়মিত পেকুয়া ও বদরখালী বাজারে এই দুধ বিক্রি করি। আমার উদ্দেশ্য বাজারে দুধ বা পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা, মাংসের নয়। অনেকে মাংসের জন্য খামার করেন। আমি করি দুধের জন্য।’

দুটো গাভি দিয়ে খামার শুরু করেন ফয়সাল। এখন তাঁর খামারে গরু রয়েছে ২০টি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ফয়স ল

এছাড়াও পড়ুন:

জীবনেও এত আনন্দ পাইনি: শিবিরের ভিপি প্রার্থী 

রাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় জুবেরী ভবনের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ভোটকেন্দ্রের অবস্থা এখন পর্যন্ত ভাল দেখছি। আমরা কারো প্রতি কোন অভিযোগ দিচ্ছি না। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোন অনিয়ম দেখলে আমরা সাথে সাথে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করব।”

আরো পড়ুন:

রাকসু নির্বাচনে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী আসবে: পুলিশ কমিশনার

অত্যন্ত চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে: রাবি প্রক্টর

মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে। এটাকে দীর্ঘ সময় বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের ভোটের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। আজ ভোট দিয়ে যে আনন্দ পেয়েছি, তা আর জীবনে কখনও পাইনি।”

তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি শিক্ষার্থীরা আমাদের ভোট দেবে। তারা আমাদের গ্রহণ করবে। তারা আমাদের নির্বাচিত করলে আমরা যে ইশতেহার দিয়েছি, সেটা আমরা বাস্তবায়ন করব।

‘নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, তারা যেন সারাদিন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে। তারা যেন বিমাতাসুলভ আচরণ না করে। ডাকসু ও জাকসুতে কিছু ত্রুটি সামনে এসেছে। সেটা যেন এখানে না হয়।”

এসময় ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবিরের মতো ক্যাম্পাসে বহিরাগত না ঢোকার ব্যাপারে নিজের অবস্থান জানিয়ে জাহিদ বলেন, “আমাদের অবস্থানও একই। ক্যাম্পাসে যেন কোনভাবেই বহিরাগত না প্রবেশ করে। ভোট গ্রহণ শেষে যেন সুন্দরভাবে ফল প্রকাশ করা হয়।”

এর আগে মোস্তাকুর রহমান জাহিদ জুবেরী ভবনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ