নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শামিম (৩৬) নামের যুবদলের এক নেতা বাড়ি থেকে বের হয়ে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ আছেন। ওই নেতার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি গত শনিবার রাতে স্থানীয় গইচাসিয়া সেতুর নিচে পানি থেকে উদ্ধার করা হলেও তাঁর সন্ধান মেলেনি।

পরিবারের ভাষ্য, প্রতিপক্ষের করা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে তিনি গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ। তাঁকে হয়তো গুম করা হয়েছে।

নিখোঁজ রফিকুল ইসলাম গন্ডা ইউনিয়নের মনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আক্কাস মিয়ার ছেলে। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। বর্তমানে ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।

স্থানীয় বাসিন্দা, থানা-পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় মনকান্দা এম ইউ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এম এন মহিবুল্লাহ এবং সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ আছে। সেই বিরোধের জেরে গ্রামে দুটি পক্ষ হয়। মহিবুল্লাহের পক্ষে যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম আর সাইফুল ইসলামের পক্ষে মোস্তফা কামাল নামে একজন।

রফিকুল ও মোস্তফা প্রতিবেশী এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিরোধের জেরে গত ৮ জুন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কয়েকজন আহত হন। দুই পক্ষই মামলা করে।

রফিকুলের স্ত্রী নাজমা আক্তার বলেন, ‘মাদ্রাসার বিরোধ নিয়া গ্রামে দুইডা পক্ষ হইছে। এ নিয়া হামলা-মামলা চলতাছে। গত পাঁচ দিন ধইরা আমার স্বামীর কোনো খোঁজ নেই। তাঁর মোটরসাইকেল ব্রিজের নিচে পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষ সপ্তাহখানেক আগে বাড়িত আইয়া অস্ত্রের মহড়া দিয়া কইয়া গেছে আমার স্বামীরে আর জীবিত রাখতো না। তাঁরে গুম কইরালবো। আমি আমার স্বামীরে ফেরত চাই।’

রফিকুলের বাবা আক্কাস মিয়ার অভিযোগ, প্রতিপক্ষ মোস্তফার লোকজন তাঁর ছেলেকে গুম করেছেন।

এ ব্যাপারে মোস্তফা কামালের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর বসতঘর তালাবন্ধ ছিল। প্রতিবেশীরা বলেন, রফিক নিখোঁজের পর থেকে তাঁরা বাড়ি ছেড়ে পলাতক।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নিখোঁজ রফিকুল ইসলামের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

কুবির ২ বিভাগে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিটি, ক্লাস-পরীক্ষা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নৃবিজ্ঞান ও বাংলা বিভাগের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যাচ দুইটির সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: আবদুল হাকিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিপ্লব মজুমদার। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন–নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসেনা বেগম ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান।

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর

ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র

বাংলা বিভাগের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুজ্জামান। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর ড. মুতাসিম বিল্লাহ।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে সুপারিশ পাঠিয়েছি। উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য স্বাক্ষর করলে এই কমিটি কার্যক্রমের জন্য অনুমোদন হবে। অনুমোদনের সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবে। এ সাতদিন অভিযুক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”

গত ৫ জুলাই রাতে কুবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থী বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বারা র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। এ সংক্রান্ত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পরে ভুক্তভোগী এবং তার সহপাঠীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নৃবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে রাখা, ধূমপান করার জন্য চাপ দেয়া এবং সিনিয়র আপুকে প্রপোজ করার জন্য চাপর দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া হলে ডেকে নিয়ে মানসিক নির্যাতন এবং রাতের আঁধারে ক্যাম্পাসের দূরবর্তী তালতলা নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীকে মানসিক নির্যাতন করাও অভিযোগও পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী ও তার সহপাঠীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী র‍্যাগিংয়ে অভিযুক্তরা হলেন- মুনতাসীর, ওলিউল্ল্যাহ, তিশা মনি, অরবিন্দু সরকার, রাফি ও হাসান।

অপরদিকে, বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে নিয়ে র‍্যাগিংয়ের সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হন। পরে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অস্বীকার করেন।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ