ক্লাব বিশ্বকাপের উত্তাপের মধ্যেই ব্রাইটন থেকে তরুণ ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার জোয়াও পেদ্রোকে দলে ভেড়ায় চেলসি। বিনিময়ে দিতে হয় মোটা অঙ্কের অর্থ। যেন ভবিষ্যতের এক তারকার সম্ভাবনা আঁচ করেই আগাম বিনিয়োগ। কোয়ার্টার ফাইনালে পালমেইরাসের বিপক্ষে মাত্র কয়েক মিনিট মাঠে নেমেই নিজের ঝলক দেখান পেদ্রো, ঠিক যেন এক ঝলক বিদ্যুৎ।
তবে মঙ্গলবার রাতের মেটলাইফ স্টেডিয়াম যেন অপেক্ষায় ছিল পেদ্রোর পূর্ণ বিকাশ দেখার। সেমিফাইনালে, নিজের দেশ ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো একাদশে নামেন তিনি। আর সেই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে মঞ্চময় পারফরম্যান্স উপহার দেন। পুরো ম্যাচজুড়ে সাম্বার ছন্দে নেচে বেড়ান এই তরুণ স্ট্রাইকার। দুটি অনবদ্য গোল করে চেলসির জার্সিতে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দেন গর্ব আর আভিজাত্যে। তার জোড়া গোলে ২-০ ব্যবধানে জিতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে যায় ব্লুজরা।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছন্দে ছিল চেলসি, তবে আলো একাই কুড়িয়েছেন জোয়াও পেদ্রো। মাত্র ১৮ মিনিটেই ফ্লুমিনেন্সের ডিফেন্সের অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে বক্সের বাইরে থেকে চমৎকার বাঁকানো এক শটে বল জালে জড়ান তিনি। কিন্তু গোলের পর উদযাপনে যাননি। কারণ, এই ক্লাবেই তো একসময় শুরু হয়েছিল তার পেশাদার ফুটবলের পথচলা। শৈশবের সেই ক্লাবের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিজের উল্লাস সংবরণ করেন পেদ্রো।
তবে ম্যাচে ফ্লুমিনেন্সও ছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ২৬ মিনিটের সময় তারা সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ পায়। হারকিউলিসের নেওয়া শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন চেলসির ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেয়া, দেখান দুর্দান্ত রক্ষণশক্তি।
৩৪ মিনিটে এক উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত আসে। চেলসির ডিফেন্ডার ট্রেভর চালাবাহর হাতে বল লাগলে রেফারি প্রথমে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। তবে ভিএআর মনিটরে দেখে সেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন।
দ্বিতীয়ার্ধে আবারও দেখা মেলে চেলসির জাদুকরী ফুটবল। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে এনজো ফার্নান্দেসের নিখুঁত থ্রু বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে এক জোরালো শটে বল জালের ছাদে পাঠান পেদ্রো। এবারও তার উদযাপন ছিল শান্ত, দুই হাত তুলে আকাশের দিকে তাকানো— যেন বলছিলেন, সাফল্যের আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে কাজের গভীরতায়, উল্লাস-উচ্ছ্বাসে নয়।
শেষ দিকে ম্যাচে ফিরে আসার চেষ্টা করে ফ্লুমিনেন্স। আক্রমণেও বাড়ে চাপ। কিন্তু চেলসির জমাট রক্ষণভাগে ধাক্কা লাগিয়ে ব্যর্থ হয় তারা। কোনো নাটকীয়তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে পেদ্রোর উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে ফ্লুমিনেন্সকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে চেলসি।
এবার অপেক্ষা— চেলসির প্রতিপক্ষ কে? পিএসজি, না রিয়াল মাদ্রিদ? উত্তর মিলবে আজ বুধবার দিবাগত রাতে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ লস র ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
আরও পাঁচটি কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব সনদ
নতুন করে আরও পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে। এতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে পরিবেশবান্ধব সনদ পাওয়া কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৮।
পরিবেশবান্ধব সনদ পাওয়া নতুন কারখানাগুলো হচ্ছে সাভারের পাকিজা নিট কম্পোজিট, টঙ্গী বিসিকের ফ্যাশন প্লাস, ঢাকা ইপিজেডের গাভা প্রাইভেট লিমিটেড, চট্টগ্রামের ভিজুয়াল নিটওয়্যারস ও টালিসম্যান পারফরম্যান্স লিমিটেড।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে এই পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে পাঁচটি কারখানা। এ সনদ পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত পরিপালন করতে হয়। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে কোনো কারখানা ৮০-এর বেশি পেলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ পেলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ নম্বর পেলে ‘লিড সিলভার’ ও ৪০-৪৯ নম্বর পেলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ দেওয়া হয়।
নতুন সনদ পাওয়া পাঁচ কারখানার মধ্যে তিনটি লিড প্লাটিনাম আর দুটি লিড গোল্ড পেয়েছে। প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে পাকিজা নিট কম্পোজিট, ফ্যাশন প্লাস ও গাভা প্রাইভেট লিমিটেড। অন্যদিকে ভিজুয়াল নিটওয়্যারস ও টালিসম্যান পারফরম্যান্স লিমিটেড পেয়েছে লিড গোল্ড সনদ।
বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএসজিবিসি যে সনদ দেয়, তার নাম ‘লিড’। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে প্রতিটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে মান রক্ষা করতে হয়।
বাংলাদেশের যে ২৬৮টি কারখানা এখন পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে, তার মধ্যে ১১৪টি কারখানা প্লাটিনাম সনদ, ১৩৫টি গোল্ড সনদ পেয়েছে। বাকি ১৬টি কারখানার মধ্যে সিলভার সনদপ্রাপ্ত কারখানা ১২টি এবং সার্টিফায়েড সনদপ্রাপ্ত কারখানা ৪টি।