বৃষ্টির আভাস ছিল পুরো ম্যাচে। অথচ এক ফোঁটাও বৃষ্টি ঝরল না। সেটা হলেই অন্তত মুখটা বাঁচাতে পারত বাংলাদেশ। ম্যাচটা পণ্ড হতো। সিরিজ হারের ‘লজ্জা’ পেতে হতো না। নয়নাভিরাম ক্যান্ডিতে যে হতশ্রী পারফরম্যান্স করলো, তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট ওয়ানডে ক্রিকেটও বাংলাদেশের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে!
ক্রিকেটারদেরই দাবি, পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট তাদের স্বাচ্ছন্দ্যের ফরম্যাট। খেলাটা তারা ভালো বোঝেন। খেলতে পারেন। অথচ এই সিরিজের আগে ফল হওয়া শেষ ছয়টিতে কোনো জয় ছিল না। কলম্বোতে ৭৭ রানের হারে সংখ্যাটা সাতে পৌঁছায়। এরপর কলম্বোতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে হারের মিছিল আটকায় মিরাজ অ্যান্ড কোং।
কলম্বো থেকে ১২২ কিমির দূরত্ব ক্যান্ডির। সিংহের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। রাজধানী ছেড়ে প্রাচীন রাজধানীতে ফিরে স্বাগতিকদের পারফরম্যান্সের জোর বেড়ে গেল। উল্টোচিত্র প্রতিপক্ষ শিবিরের। সফরকারী বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তলানিতে। পরাজয়ের ব্যবধানও বাড়ল। এবার গিয়ে ঠেকল ৯৯ রানে।
হারার আগেই হেরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোয়াল বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওয়ানডেতে বাংলাদেশ টস জিতে নিজেদের পছন্দের কাজটা করতে পেরেছিল। শ্রীলঙ্কা অখুশি ছিল না। আজ স্রষ্টা টস ভাগ্য পরীক্ষায় শ্রীলঙ্কার পাশে। চারিথ আসালাঙ্কা টস জিতে ব্যাটিং নিলেন।
ক্যান্ডির রান প্রসবা ও স্পোর্টিং উইকেটে ২৮০ রানের প্রত্যাশায় ছিলেন অধিনায়ক। তা-ই হয়েছে। সবকটি ওভার খেলে ৭ উইকেটে তাদের রান ২৮৫। রানটা তিনশ ছাড়িয়ে যেতে পারত। বাংলাদেশ ৪০ ওভারের পর দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে। তিনশ-ও হয়নি, সেটা ছিল আনন্দের বিষয়।
এজন্য বোলারদের এজন্য কৃতিত্বই দিতে হবে। অথচ একই উইকেটে ৪০ মিনিটের ব্যবধানে কী ভয়াবহ পারফরম্যান্স। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ৩৯.
ইনিংসের শুরু থেকেই হাল ছেড়ে দেওয়া শুরু। পরপর দুই ওভারে তানজিদ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত দুই লঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দো ও দুশমন্ত চামিরার গতি ও সুইংয়ে পরাস্ত। সেখান থেকে ইমন ও তাওহীদ লড়াই করে কিছুটা মাথা তোলার ব্যবস্থা করেছিলেন। তখন মনে হয়েছিল, কলম্বোর দ্বিতীয় জয়ের আত্মবিশ্বাস এখনও টগবগ করছে।
কিন্তু কিসের কী? দ্রুত রান তোলার তাড়ায় উইকেট বিলিয়ে আসেন ইমন (২৮) । ক্রিজে এসেই তিনটি চার ও একটি পুল শটে দারুণ শুরু করেছিলেন মিরাজ। কিন্তু হিসেব কষে খেলতে না পারা, অযথা তাড়াহুড়ো করে বিপদ ডেকে আনেন। স্পিনার ওয়েলালেগে এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে ২৮ রানে ক্যাচ দেন লং অন সীমানায়। হাল ধরতে পারেননি ১২ রান করা শামীম।
১২৪ রনে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ শেষ ৫ উইকেটে যোগ করতে পারে ৭৬ রান। তা-ও ভালো। কলম্বোর মতো ৫ রানে ৭ উইকেট তো হারায়নি! ইনিংসে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কেবল তাওহীদের ফিফটি। ৭৮ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রান করেন।
দুই পেসার ফার্নান্দো ও চামিরার ৩টি করে উইকেটের সঙ্গে দুই স্পিনার ওয়েলালেগে ও হাসারাঙ্গা ২টি করে উইকেট নেন। চার বোলারেই নিশ্চিত হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার সিরিজ।
এর আগে ৪০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ছিল ৩ উইকেটে ২২২। শেষ ১০ ওভারে হাতে উইকেট রেখে তারা ঝড় তুলবেন তা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু ৪১তম ওভার থেকেই ব্যাকফুটে যাওয়া শুরু তাদের। বিশেষ করে তাসকিন, মিরাজ ও শামীম উইকেট নেওয়ায় কিছুটা চাপে পড়ে তারা। শেষ দিকে অবশ্য আলগা বোলিংয়ে রানও পেয়েছেন।
সিরিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এসেছে কুলশ মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। ১১৪ বলে ১৮ চারে ১২৪ রান করেন তিনি। আউট হন শামীমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। সিরিজ সেরার পুরস্কারটাও যাচ্ছে তার শোকেসে। এছাড়া চারিথ আসালাঙ্কা ৬৮ বলে ৫৮ রান করেন ৯ চারে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মেন্ডিস ও আসালাঙ্কা ১১৭ বলে ১২৪ রান করেন। ওপেনিংয়ে ৩৫ রান আসে পাথুম নিশাঙ্কার ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সেরা ছিলেন তাসকিন ও মিরাজ। দুজন ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকটে পেয়েছেন তানজিম, তানভীর ও শামীম।
এই সিরিজের আগে দুই দলের র্যাংকিং নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। শ্রীলঙ্কা র্যাংকিংয়ে চার নম্বর দল। বাংলাদেশের অবস্থান দশে। নিশ্চিতভাবেই ফেভারিট শ্রীলঙ্কা। প্রত্যাশিত ফলই এসেছে বলা যায়। সঙ্গে প্রশ্নও উঠছে, বাংলাদেশের একমাত্র জয়টা কী অঘটন ছিল?
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রফরম য ন স র ন কর ন উইক ট কলম ব
এছাড়াও পড়ুন:
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি) ঘোষণা করেছে, ২৪তম সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের ঘোষণা দেন সিজেএফবির টাইটেল স্পন্সর একুশে টেলিভিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও এমডি তাসনোভা মাহবুব সালাম।
এ সময় ২৪তম পুরস্কারের লোগো উন্মোচন করেন খ্যাতিমান সংগীত তারকা বেবী নাজনীন এবং একুশে টিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম।
আরো পড়ুন:
ফারুকীর রহস্যঘেরা ওয়েব সিরিজ ‘৮৪০’ ওটিটিতে
রানিরা কাউকে অনুসরণ করে না: অপু বিশ্বাস
অনুষ্ঠানের শুরুতে সদ্য প্রয়াত লালনগীতির কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর সংগঠনের সভাপতি এনাম সরকার জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান।
সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা তামিম হাসান জানান, বরাবরের মতো এবারো বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠানটি হবে। সার্বিক পরিকল্পনা তুলে ধরেন সিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক এম এস রানা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সিজেএফবির ইভেন্ট পার্টনার অন্তর শোবিজের চেয়ারম্যান স্বপন চৌধুরী, একুশে টিভির পরিচালক ব্যারিস্টার তানজীব, এবং সিজেএফবির যুগ্ম-সম্পাদক শাকিলুর রহমান (শাকিল)। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শ্রাবণ্য তৌহিদা।
বরাবরের মতো এবারো সংগীত, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন মিডিয়ার বছর সেরা তারকারাই মনোনীত ও পুরস্কৃত হবেন। একইসঙ্গে থাকবে দেশের স্বনামখ্যাত শিল্পীদের ঝলমলে পারফরম্যান্স।
ঢাকা/শান্ত