কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। আজ বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫১ জন ডেঙ্গু রোগী উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে মোট ২৯৬ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান আজ সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ৫১ জনের। এর মধ্যে ১৮ জন দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একজনকে আজ সকাল ১০টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ জুন থেকে আজ ৯ জুলাই সকাল ১০টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় ১০ হাজার ৫৮ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৭৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ ৩৩ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চলতি বছর দাউদকান্দি পৌরসভার দোনারচর গ্রামের এক বাসিন্দা প্রথম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর পর থেকে উপজেলায় আক্রান্তের হার বাড়ছে। জুবাইদা আক্তার নামের এক স্কুলশিক্ষক জানান, তাঁর নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সাবিহা খন্দকার গত সোমবার থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না সে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ উদক ন দ সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।

ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।

আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫

বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।

প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।

ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ