মাদক চক্রে জড়িত গোটা পরিবার, আটক মূল হোতা
Published: 9th, July 2025 GMT
দীর্ঘদিন ধরেই মাদক কারবার, সেবন ও বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের কাজে স্থানীয় পর্যায়ে দাপট দেখিয়ে আসছিলেন নবীগঞ্জের জিয়াপুর এলাকার বাসিন্দা রায়েছ মিয়া। প্রশাসনের বার বার চেষ্টার পরও বাগে আনা সম্ভব হচ্ছিল না পরিবার নিয়ে গ্রামে মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলা রায়েছকে। অবশেষে অবৈধ মাদকের ডেরা ভাঙতে সেনাবাহিনীর চালানো বিশেষ অভিযানে ধরা পড়েছে চক্রের প্রধান।
মাদকের কারবার বিস্তৃত করতে ও স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্য ধরে রাখতে নিজের গোটা পরিবারকে মাদক কারবারে যুক্ত করেন রায়েছ।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বিভিন্ন সময় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও অসৎ প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সহায়তায় প্রশাসনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যেতেন তিনি। রায়েছ ও তার পরিবারের কারণে গোটা গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের ভয়াবহতা।
২ জুলাই সেনাবাহিনী রায়েছ আলীকে মাদকের চালানসহ আটকের পর বেরিয়ে আসে তার সপরিবারে মাদক কারবারে জড়ানোর বিস্তারিত তথ্য। এ ছাড়া তার মা খাদিজা বেগমের দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে তিনি জানান, তার ছেলে একা নয়; বাড়ির সবাই মাদক কারবারে জড়িত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) হবিগঞ্জের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রায়েছ ও তার পরিবারের নাম। অধিদপ্তর বলছে, রায়েছের বাবা ও এক ভাই বহুবার মাদক কারবারে জড়িত থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর তার স্থানে আসেন রায়েছ।
২ জুন রায়েছ সেনাবাহিনীর কাছে ২৯ কেজি গাঁজা ও নগদ ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ টাকাসহ আটক হওয়ার পর পরই তার পারিবারিক দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। ধারণা করা হয়, বার বার আইনের চোখে ধুলা দেওয়া রায়েছ সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে তারই ছোট ভাই কয়েছ আলী ইমনের সহায়তায়। এ ব্যাপারে ইমন বলেন, তিনি এসবের সঙ্গে জড়িত নন।
রায়েছের স্ত্রী রুপনা বলেন, রায়েছের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গাঁজা ইমনের। মুনাফার ভাগ না দেওয়ার জন্য কৌশলে সে ধরিয়ে দিয়েছে রায়েছকে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস