জুলাই মানেই যেন লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে উৎসবের মাস। আর সেই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ–‘আনন্দমেলা’। প্রতি বছরের মতো এবারও যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের ‘লিটল বাংলাদেশ’ এলাকায় আয়োজিত হতে যাচ্ছে এই বর্ণাঢ্য আয়োজন। ১৯ ও ২০ জুলাই দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে প্রবাসী বাঙালিদের এই সবচেয়ে বড় উৎসবের নবম পর্ব।

দুই দিনজুড়ে গান, নাচ, আবেগ আর দেশীয় সংস্কৃতির উচ্ছ্বাসে ভরে উঠবে লস অ্যাঞ্জেলেসের আকাশ। বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছেন একঝাঁক তারকা– যাদের উপস্থিতিতে এবারের ‘আনন্দমেলা’ হয়ে উঠবে আরও প্রাণবন্ত, আরও জমজমাট। প্রবাসীদের সঙ্গে এই আয়োজনে নেচে-গেয়ে মেতে উঠবেন কণ্ঠশিল্পী প্রীতম হাসান, প্রতীক হাসান, কিশোর দাস, চিত্রনায়ক জায়েদ খান, অভিনেত্রী পারসা ইভানা, মৌসুমী মৌ, নীল হুরে জাহান ও নৃত্যশিল্পী আলিফ, গায়ক আর্নিক, আবু নাঈম, ইচ্ছাসহ অনেকেই। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন।

এর আগে আয়োজনটিতে হাজির হয়েছেন খ্যাতিমান অভিনেতা মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী ও আরিফিন শুভ, পূর্ণিমা ও অপু বিশ্বাসের মতো অভিনেত্রীরা। গান গেয়ে মাতিয়েছেন তাহসান ও এস আই টুটুলের মতো গায়করাও। এই আয়োজনে এবার প্রথমবারের মতো গাইছেন প্রীতম হাসান। এতে পারফর্ম করার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন প্রীতম হাসান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ধারাবাহিকভাবে কনসার্ট করছি। আনন্দমেলাতেও পারফর্ম করব। অনেক বছর ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই আনন্দঘন আয়োজন করে আসছে। তাদের সঙ্গে এবার আমিও আনন্দ ভাগাভাগি করতে গাইব।

আনন্দমেলার আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘এটি পুরোপুরি নন প্রফিট একটি উদ্যোগ। লস অ্যাঞ্জেলেসের বাংলাদেশিরা এই মেলার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন। এই আনন্দমেলাই প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় মিলনমেলায় পরিণত হয়। আমি মনে করি, বাংলাদেশের শিল্পীদের সরব উপস্থিতি এবারের উৎসবকে নতুন মাত্রা দেবে।’

আনন্দমেলা আয়োজনের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী এবং প্রেসিডেন্ট শরীফ হাসিবুল জানান, ‘এই আয়োজন কোনো লাভের জন্য নয়। আমাদের মূল লক্ষ্য, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আত্মিক বন্ধন তৈরি করা এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিসর তৈরি করা যেখানে তারা দু’দিন নিখাদ আনন্দে মেতে উঠতে পারেন।’ তারা জানান, দুই দিনের এই আয়োজনে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, থাকবে দেশীয় পণ্য, মুখরোচক খাবার, দেশীয় পোশাক এবং হস্তশিল্পের স্টল। বেলা ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

আরও জানা গেছে, এবারের আনন্দমেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন লেক প্যারিস সিটি ক্যালিফোর্নিয়ার মেয়র মাইকেল ভার্গা ও লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির কাউন্সিলর হেদার হার্ট। এ ছাড়াও আমন্ত্রিত থাকছেন প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সমাজসেবক, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

আয়োজনটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক নাসির খান মৌ এবং প্রধান উপদেষ্টা শিপার চৌধুরী, কনভেনর দাউদ বাফাদিয়া এবং প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে আছেন জিয়া ইসলাম। 
এবারের আনন্দমেলাও থাকবে সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই বলা যায়, প্রবাসে থেকেও এক টুকরো বাংলাদেশকে ছুঁয়ে দেখার, আপন সংস্কৃতিকে উপলব্ধি করার এক অনন্য সুযোগ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লস অ য ঞ জ ল স লস অ য ঞ জ ল স র জন য প রব স আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

সুনামগঞ্জে শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন, কলেজ কর্তৃপক্ষের দুঃখ প্রকাশ

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত জেলার প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। এদিকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

আজ মানববন্ধনে সুনামগঞ্জের লেখক-গবেষক সুখেন্দু সেন, সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল হক, পঙ্কজ কান্তি দে, মুহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মুজাহিদুল ইসলাম, সালেহীন চৌধুরী, মোহাম্মদ রাজু আহমেদ, নাসিম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা স্মারকস্তম্ভ কলেজের অন্য কোনো জায়গায় নির্মাণ এবং শহীদ মিনারের ভাঙা অংশ সংস্কারের দাবি জানান। পরে অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন বলেন, ‘এটি জেলার প্রথম শহীদ মিনার, ইতিহাসের অংশ। এটি ভাঙা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কথা বলার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। তাঁরা স্মারকস্তম্ভ কলেজের অন্য জায়গায় নির্মাণ ও শহীদ মিনার যেভাবে ছিল, সেভাবে আবার সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন।’

জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘সাবেক ছাত্রনেতারা আমাদের কাছে এসে তাঁদের দাবির বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি এখানে নতুন। আমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলীর সঙ্গে দ্রুত কথা বলে সমস্যার সমাধান করব।’

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৬৬ সালে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি সুনামগঞ্জে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার। প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো এই শহীদ মিনার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে কলেজের ৭৫ বছর পূর্তির একটি স্মারকস্তম্ভ।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর এলাকায় ১৯৪৪ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারীকরণ করা হয় ১৯৮০ সালে। কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২০ সালের ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব হয়। এই উৎসবের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তখন ক্যাম্পাসে একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। মাসখানেক আগে ওই স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ কোথায় এটি নির্মাণ করা হবে, সেই স্থানটি নির্ধারণ করেছে। স্থান নির্ধারণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা নেই।

আরও পড়ুনসুনামগঞ্জের প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ, সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-প্রতিবাদ৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিকট প্রতিবেশী উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণ
  • বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে খুলনায় বিজ্ঞান উৎসব
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শরৎ উৎসব উদ্‌যাপন
  • আওয়ামী দোসররা দাবি আদায়ের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে: শিক্ষক–কর্মচারী ঐক্যজোট
  • রাকসুর ভোটে ক্যাম্পাসে আনন্দ–উৎসব
  • রাকসু নির্বাচন: ভোটের আগের রাতে গান–স্লোগানে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা
  • সুনামগঞ্জে শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন, কলেজ কর্তৃপক্ষের দুঃখ প্রকাশ
  • ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচনে উৎসব
  • চাকসু নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
  • ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ বলায় কেন মুসলিমদের ওপর দমন–পীড়ন চলছে