ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দেড় শ বছর উদ্‌যাপনের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে দেড় শ বছর উদ্‌যাপনের থিম লোগো উন্মোচন, বৃক্ষরোপণসহ উন্মুক্ত পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে জেলার অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

জেলার এই প্রাচীন বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৭৫ সালে। আগামী ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর প্রাচীন এই বিদ্যালয়ের দেড় শ বছর উদ্‌যাপনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন অ্যালামনাই অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্নদা এক্স-স্টুডেন্টস সোসাইটি (আবেশ)। এ উপলক্ষে আজ শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উদ্‌যাপন উপলক্ষে নিবন্ধন কার্যক্রমের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতরে থাকা স্কুলবাগানে দুটি বৃক্ষ রোপণ করেন আবেশের প্রধান পৃষ্ঠপোষক অবসরপ্রাপ্ত লে.

জেনারেল সাজ্জাদুল হক ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন সরকার। পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দেড় শ বছর উদ্‌যাপনের নোটিশ বোর্ড স্থাপন ও উন্মুক্ত পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়। বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে রক্তাক্ত জুলাই স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। অনুষ্ঠানে ‘সুন্দর পৃথিবীর জন্য আমরা’ স্লোগানে দেড় শ বছর উদ্‌যাপনের থিম লোগো উন্মোচন করেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ অতিথিরা। পরে আবেশের সভাপতি সগীর আহমেদ অনুষ্ঠানের নিবন্ধন কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা খালেদ হোসেন, আবেশের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সাজ্জাদুল হক ও সভাপতি বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন সগীর আহমেদ, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জহিরুল হক, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা, সহসভাপতি মো. ইমাম শাহীন ও খায়রুল ইমাম, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল হক, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন সরকার প্রমুখ। অতিথিরা কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের সভা: বন্দরের বর্ধিত মাশুল স্থগিত করে আলোচনার আহ্বান

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে মাশুল বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি করেছেন তাঁরা।

তবে সরকার বর্ধিত মাশুল কার্যকরের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। গতকাল নৌপরিবহনসচিব বলেছেন, মাশুল কমানোর সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম বন্দরে অস্বাভাবিক ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রতিবাদে ‘চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীবৃন্দ’–এর ব্যানারে গতকাল রোববার সভার আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রামের র‍্যাডিসন ব্লু হোটেলে এ সভায় বিভিন্ন খাত ও সংগঠনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী।

ব্যবসায়ীদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের নতুন মাশুলের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এই মাশুল আগামীকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। আগের তুলনায় গড়ে প্রায় ৪১ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানো হয়েছে। বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতে নতুন মাশুল কার্যকর করা হচ্ছে বলে সমালোচনা রয়েছে।

গতকালের সভায় আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিদেশি অপারেটররা চায় ট্যারিফ বাড়িয়ে দেওয়া হোক। মাশুল বৃদ্ধির নেপথ্যে যারা আছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। বর্ধিত মাশুল স্থগিত রেখে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক বলেন, মোংলা ও পায়রায় মাশুল বাড়ানো হয়নি, বাড়ানো হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। কোনো খাতে ছয় গুণ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। এই বাড়তি মাশুল পরিশোধ করবেন দিনমজুর, শ্রমিক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জনগণ। বিদেশি অপারেটরদের সুবিধার জন্য মাশুল বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড, মায়ের্সক লাইনের পেছনে কারা, এজেন্ট কারা, অফিসে কারা যায়, আমাদের কাছে খবর আছে। বলে দেব কিন্তু। তখন লজ্জা পাবেন। আপনারা যাকে ইচ্ছা তাকে টার্মিনাল দিয়ে দেবেন, সেটা হবে না। পতেঙ্গা টার্মিনাল যারা ছেড়ে দিয়েছে, তাদের পরিণতি আমরা দেখেছি।’

বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সেলিম রহমান বলেন, ‘২৯ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতায় বন্দরকে কখনো লোকসান করতে দেখিনি। তাহলে বন্দরে ৪১ শতাংশ ট্যারিফ কেন বাড়াতে হবে? ব্যবসায়ীরা বাড়তি খরচ কতটুকু নিতে পারবে, সেটা বিবেচনা করা হয়নি। আমরা তো নিউমার্কেটে পণ্য বিক্রি করি না, ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্য বিক্রি করি। আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম, ভারত ও মালয়েশিয়ার চেয়ে আমাদের ব্যবসার খরচ এমনিতেই বেশি। এই বাড়তি মাশুল স্থগিত করুন।’

এশিয়ান-ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, ‘বন্দরের মাশুল বাড়ানোর বড় ভুক্তভোগী হবে ভোক্তা ও রপ্তানিকারকেরা। মাশুল বাড়িয়ে আমরা যেন প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে না পড়ি।’ মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী বলেন, নতুন বর্ধিত মাশুল কার্যকর হলে ক্রেতারা পোশাক নেবে না। তারা ভিয়েতনাম ও ভারতে চলে যাবে।

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, বন্দর ও ডিপোর মাশুল বাড়ানোর পর একটি ২০ ফুটের কনটেইনারে কাঁচামাল এনে আবার রপ্তানি করতে হলে এখন ১০০ ডলারের বেশি বাড়তি খরচ হবে। এ অবস্থায় ছোট রপ্তানিকারকদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মাশুল কার্যকর হলে ভিয়েতনামের চেয়ে খরচ তিন গুণ বাড়বে। এটা সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক এস এম আবু তৈয়ব বলেন, বন্দরের নতুন ট্যারিফ কার্যকর হলে এ অঞ্চলের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বন্দরে পরিণত হবে চট্টগ্রাম বন্দর।

বাংলাদেশ ইপিজেড ইনভেস্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (বেপজিয়া) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম, চীন, ভারত ও কম্বোডিয়া ব্যবসার খরচ কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। আর আমরা খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছি। এটা হতাশাজনক।’

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কাউকে লাভ করানোর জন্য অর্থনীতি ধ্বংস করা যাবে না। আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারবে না।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বলেন, মার্কিন ট্যারিফ কমাতে বিদেশে গিয়ে তদবির করেছেন, কিন্তু দেশে ট্যারিফ না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়ে দিলেন, এটা কীভাবে হয়?

সচিব বললেন, মাশুল কমানোর সুযোগ নেই

নৌপরিবহনসচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেছেন, গত প্রায় ৪০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে মাশুল বাড়ানো হয়নি। ১৯৮৬ সালের পর এবার প্রথম মাশুল বাড়ানো হয়েছে। তাই এই মাশুল কমানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পরপর এটা বাড়ানো উচিত ছিল।

গতকাল রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ হয়ে যাবে। তাদেরও মুনাফার বিষয় আছে। তাই মাশুল কমানোর সুযোগ নেই। সমীক্ষার ভিত্তিতে এই মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বিদেশি অপারেটর নিয়োগের বিষয়ে নৌপরিবহনসচিব বললেন, চট্টগ্রাম বন্দরের দুটিসহ দেশের মোট তিনটি কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ২০ থেকে ৩০ বছরের জন্য এই অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব টার্মিনালের সক্ষমতা বাড়িয়ে লিড টাইম কমিয়ে আনতে বিদেশি অপারেটর ছাড়া উপায় নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণে প্রস্তুত কেন্দ্র, সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে কমিটি গঠন
  • রাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ১০ সদস্যের কমিটি
  • রাকসু: আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতা আমান
  • ‘রাকসু নির্বাচনে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে সাইবার ইউনিট’
  • প্যানেলের বাইরের প্রার্থীকে সমর্থন, ছাত্রদল নেতাকে আজীবন বহিষ্কার
  • চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের সভা: বন্দরের বর্ধিত মাশুল স্থগিত করে আলোচনার আহ্বান
  • ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে সংশোধন হচ্ছে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা