বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পা ভাঙল রাবি শিক্ষার্থীর, প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 6th, August 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘ক্যাম্পাসে ওভার স্পিডিং কেন?’, ‘আজ অনিক, কাল আমি! ’, ‘বেপরোয়া গতি বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা মামলা: সাবেক উপাচার্যসহ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মহাসড়কে রবি শিক্ষার্থীদের শেকল ভাঙার গান
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো- আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য তিন কর্মদিবসের মধ্যে বীমার অর্থ প্রদান; পারিবারিক অসচ্ছলতার ভিত্তিতে এককালীন আর্থিক সহায়তা; বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ ও স্পিড ব্রেকার স্থাপন; দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের পাশের রাস্তা এবং স্টেশনবাজার-বিনোদপুর সড়কসহ প্রয়োজনীয় রাস্তা সংস্কার; গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রেডিয়াম রিফ্লেক্টর স্থাপন এবং প্রতিটি সড়কে ফুটপাত নির্মাণ।
এর আগে, সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে চার রাস্তার মোড়ে সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক মল্লিক দুটি দ্রুতগতির বাইকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। তার একটি পা ভেঙে যায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মানববন্ধনে সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তর্পণা দে বলেন, “ক্যাম্পাসে চেকপোস্ট আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বহিরাগতরা এত বেপরোয়া গতিতে চলাফেরা করতে পারে— এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। গাড়িগুলোর গতিসীমা নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি।”
নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, “একজন শিক্ষার্থী হাঁটার সময় বাইকের চাপায় আহত হচ্ছে— এটা কি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য? প্রশাসনের মূল দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অথচ এখানে বারবার তারা ব্যর্থ হচ্ছে।”
পরে শিক্ষার্থীরা দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাবি উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হওয়া হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আরো পড়ুন:
বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় জাবির ৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
হাবিপ্রবিতে ঘুষের অভিযোগে দুদকের অভিযান
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দাবি, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) যারা শিক্ষকের গায়ে হাত দিয়েছে তাদের বহিষ্কার করতে হবে। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন বলেও জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-শিক্ষকদের ওপর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলাকে আমরা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখি। এমন জঘন্য কর্মকাণ্ড কোনো আদর্শবান শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা এবং ছাত্রত্ব বাতিলসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন।”
অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “উপ-উপাচার্যহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, তেমন নিদর্শন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে দেখা যায়নি। যারা এ কার্যকলাপে জড়িত, তাদের ছাত্রত্ব অবিলম্বে বাতিল করা হোক এবং তারা প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুক। আমরা প্রশাসনের দ্রুত ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়া চালানোর দাবি জানাই। যদি তা না হয়, আমরা সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেওয়ার দিকে যেতে বাধ্য হবো।”
এর আগে, রাবিতে কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আগে থেকেই ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।
সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আবার টানা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিনসহ প্রশাসনে থাকা তিনজন কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। পরে জুবেরী ভবনে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে সেখানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাতে জুবেরী ভবনের সামনে থেকে অবরোধ উঠিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। পরে গভীর রাতে হল থেকে বের হয়ে এসে ছাত্রীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তারা মাঝরাত পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
পরে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব মধ্যরাতে বাসার প্রধান ফটকের সামনে এসে ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত। এ নিয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার রাতেই কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এদিন তারা ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় সন্তানদের ভর্তির সুযোগ না দিলে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন তারা। তবে ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাকসু নির্বাচন এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
এ ঘোষণা পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত আছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী