রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। 

এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘ক্যাম্পাসে ওভার স্পিডিং কেন?’, ‘আজ অনিক, কাল আমি! ’, ‘বেপরোয়া গতি বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

আবু সাঈদ হত্যা মামলা: সাবেক উপাচার্যসহ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মহাসড়কে রবি শিক্ষার্থীদের শেকল ভাঙার গান

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো- আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য তিন কর্মদিবসের মধ্যে বীমার অর্থ প্রদান; পারিবারিক অসচ্ছলতার ভিত্তিতে এককালীন আর্থিক সহায়তা; বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ ও স্পিড ব্রেকার স্থাপন; দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের পাশের রাস্তা এবং স্টেশনবাজার-বিনোদপুর সড়কসহ প্রয়োজনীয় রাস্তা সংস্কার; গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রেডিয়াম রিফ্লেক্টর স্থাপন এবং প্রতিটি সড়কে ফুটপাত নির্মাণ।

এর আগে, সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে চার রাস্তার মোড়ে সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক মল্লিক দুটি দ্রুতগতির বাইকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। তার একটি পা ভেঙে যায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মানববন্ধনে সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তর্পণা দে বলেন, “ক্যাম্পাসে চেকপোস্ট আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বহিরাগতরা এত বেপরোয়া গতিতে চলাফেরা করতে পারে— এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। গাড়িগুলোর গতিসীমা নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি।”

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, “একজন শিক্ষার্থী হাঁটার সময় বাইকের চাপায় আহত হচ্ছে— এটা কি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য? প্রশাসনের মূল দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অথচ এখানে বারবার তারা ব্যর্থ হচ্ছে।”

পরে শিক্ষার্থীরা দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

মাহবুবুর রহমান বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসের মূল ফটকগুলোতে সার্বক্ষণিক চেকিং চলছে। তারপরও এ ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রামের নারীদের মানববন্ধন, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক মাসের বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম প্রায় ‘পুরুষশূন্য’ বলে দাবি করেছেন নারীরা। আজ মঙ্গলবার কড়ইবাড়ি গ্রামের শতাধিক নারী এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষ এলাকাছাড়া। দীর্ঘ সময় তাঁরা এলাকাছাড়া থাকায় তাঁদের সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কড়ইবাড়ি স্ট্যান্ড এলাকায় কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।

গত ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে, ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।

মামলায় ইতিমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আলোচিত তিন খুনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ এখনো গ্রেপ্তার হননি।

আজ দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা জামিলা আক্তার বলেন, তিন খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী ছাড়াও নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কে গত এক মাসের বেশি ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো কড়ইবাড়ি গ্রাম। এ ছাড়া ঘটনাটি নিয়ে একটি পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। যার কারণে গ্রামের পুরুষেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকায় ফিরে আসছেন না।

জায়েদা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি বিনা অপরাধে বাড়িছাড়া। এতে পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা চাই যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদের বিচার হোক। কিন্তু গ্রামের সবাইকে যেন হয়রানি না করা হয়।’

সালমা বেগম বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্রাম পুরুষশূন্য থাকায় চুরি-ডাকাতিরও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রামের সবার মধ্যে। সব মিলিয়ে গ্রামের নারীরা আতঙ্কে আছেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিরীহ একজন মানুষকেও হয়রানি করা হয়নি। তাঁরা শুরু থেকেই মামলাটি নিয়ে সতর্ক। গ্রামবাসীর আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের গ্রামে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া প্রসঙ্গে নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করছি না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিথ্যা ইতিহাসের ওপর জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ
  • পাবিপ্রবি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২৮ নেতাকর্মী বহিষ্কার
  • ইসির প্রস্তাব বাতিল করে আশাশুনিকে স্বতন্ত্র নির্বাচনী আসন করার দাবিতে মানববন্ধন
  • গ্রামের নারীদের মানববন্ধন, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ
  • ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যা: সিসি ক্যামেরা ফুটেজ নিয়ে ধোঁয়াশা, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে ঈদগাহ মাঠে ‘মেলা’ আয়োজন ঘিরে উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশঙ্কা 
  • আওয়ামী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ছবিসহ তালিকা প্রদর্শন করবে রাবি ছাত্রদ
  • ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যার বিচার দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন
  • খেলার মাঠে মার্কেট করছে কাটাখালী পৌরসভা, প্রতিবাদে মানববন্ধন