ঢাকার সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) একটি বাস মেরামতের ব্যয় সংক্রান্ত অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে তদন্ত কমিটি গঠনের পর ২ মাস পার হলেও প্রতিবেদন জমা দেওয়া নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভূমি) মো.

মোজাহিদ খান এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী এইচএম তাইফ-উর আকবর এই ঘটনায় জড়িত। তবে অভিযুক্ত এ দুই কর্মকর্তা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের অক্টোবরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বাস মেরামতের বিল যাচাই করতে গিয়ে পণ্যের দামে অসঙ্গতি দেখতে পান। পরবর্তীতে তিনি নিজ উদ্যোগে স্থানীয় দোকান থেকে নতুন কোটেশন সংগ্রহ করে বিলের সঙ্গে অমিল পান। সবমিলিয়ে তিনি প্রায় ৪০ হাজার টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পান।

আরো পড়ুন:

কুবির নতুন ক্যাম্পাসের জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ, তথ্য চেয়েছে দুদক

মেধার ভিত্তিতে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ হবে: কৃষি উপদেষ্টা 

২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর মতিউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তবে অভিযোগ জমা দেওয়ার দীর্ঘ ৬ মাস পর গত ৫ মে অভিযুক্ত মোজাহিদ খান তার অফিসে গিয়ে তাকে গালাগালি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

ভুক্তভোগী মতিউর রহমান বলেন, “দামের গড়মিল দেখে আমি অভিযোগ করি। এরপর মোজাহিদ ভাই আমার অফিসে এসে আমাকে গালাগালি করেন, মারতে আসেন। আমি নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে তার হাত চেপে ধরি।”

তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সঠিক বিচারের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে। আমি চাই সঠিক সিদ্ধান্ত আসুক। যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে অভিযোগ জানাব।”

এ ঘটনার পর গত ৮ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির সভাপতি করা হয় উপ-রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মাদ মুকাম্মেলকে। কমিটির সদস্য সচিব অর্থ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আহসানউল্লাহ এবং সদস্য বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু রায়হানকে করা হয়।

কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও এখনো তা জমা পড়েনি। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে ২ মাসেরও বেশি সময়। এতে তদন্তের স্বচ্ছতা ও অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মোজাহিদ খান রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাসের মেরামতের প্রাথমিক বাজেটের বাইরে অতিরিক্ত যন্ত্রাংশের প্রয়োজন পড়ে। উপাচার্য স্যারের নির্দেশে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করিয়েছি। হিসাব দেখেছেন অন্য একজন। মতিউর ভাইয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা ছিল ভুল বোঝাবুঝি। পরে আমি তার কাছে ক্ষমাও চেয়েছি।”

তিনি দাবি করেন, “আমি ২৬ বছর ধরে এখানে কাজ করছি। এর আগে আমার বিরুদ্ধে কখনো এমন অভিযোগ ওঠেনি।”

অন্যদিকে, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এইচ এম তাইফ-উর আকবর বলেন, “বাজারে গিয়ে পণ্যের দাম যাচাই করে কম দামের ফ্যান কিনেছি। সব কাগজপত্র প্রস্তুত আছে। মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শুধু দুজনকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম।”

তদন্ত কমিটির সভাপতি আবু মুহাম্মাদ মুকাম্মেল বলেন, “বাজেট, এস্টিমেট ও ক্রয়ের অডিট চলছে। স্টোর কমিটির সঙ্গেও বসার পরিকল্পনা রয়েছে। ঈদের আগেই প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সম্ভব হয়নি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের বক্তব্য পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ কর মকর ত ম র মত কম ট র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো আসাদুজ্জামান নূরকে

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

দুদক ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আজ কারাগার থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে দুদক তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে। অপর দিকে এ মামলায় আসাদুজ্জামান নূরের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত আগামী ১২ অক্টোবর জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানির দিন ঠিক করেন। পরে আদালত আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর এ মামলায় আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো আসাদুজ্জামান নূরকে
  • শোকজের সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুত করার দাবি ইবি অধ্যাপকের
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক জহুরুল ইসলামকে চাকরি থেকে অপসারণ
  • পদ স্থগিত নেতার পক্ষে বিবৃতির বিষয় অস্বীকার করে শোকজের জবাব বিএনপির দুই নেতার
  • ইবির আইন বিভাগের শিক্ষককে চাকরিচ্যুত
  • গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূলমন্ত্রেই: মঈন
  • ১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় জমি কিনবে ক্রাউন সিমেন্ট
  • টিকটকের অ্যালগরিদমের নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে
  • পোশাককর্মীর এক মোবাইল ফোন উদ্ধারে গিয়ে ১৪৮টি জব্দ
  • কর্মী ভিসায় ট্রাম্পের ফি আরোপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কোন দেশ