চট্টগ্রাম নগরে নেতৃত্বশূন্য যুবদল, হতাশ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা
Published: 22nd, September 2025 GMT
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের কমিটি। এক বছর পার হলেও নতুন কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে নগরে সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে দলটি। কমিটি না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
নেতা-কর্মীরা জানান, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কমিটি থাকলে দলের প্রার্থীদের জন্য ওয়ার্ড, থানা কমিটিসহ তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা চালানো সহজ হতো। এখন কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে।
দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগেই কমিটি ঘোষণার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতাদের পছন্দের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।
২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি ও মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মাথায় ঘোষণা করা হয় ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল।
২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি ও মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মাথায় ঘোষণা করা হয় ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল।কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মহানগর যুবদলের শীর্ষ দুই পদের জন্য প্রার্থীদের রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা নেওয়া হয়। পদ পেতে আগ্রহী অর্ধশতাধিক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেন। প্রার্থীরা এতে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রামে নিজের ভূমিকা–সম্পর্কিত তথ্য উল্লেখ করেছেন। পরের মাসের শেষের দিকে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।
আহ্বায়ক পদ পেতে রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেওয়া কয়েকজন হলেন নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল হোসেন ও সাবেক সহসভাপতি শাহেদ আকবর প্রমুখ।
সদস্যসচিব পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন নগর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এর মধ্যে এমদাদুল হককে গত ১২ জুলাই দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে তিনি দাবি করেছেন, পদপ্রত্যাশী হওয়ায় মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। কমিটির শীর্ষ পদের জন্য আরও আলোচনায় আছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ। নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পদে না থাকলেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সামনেও করব।’
নির্বাচনের আগেই কমিটি আসবে। সৎ, ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন হবে।—মীর হেলাল উদ্দীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপিনগর যুবদলের তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, বর্তমানে কোনো কমিটি না থাকলেও তাঁরা দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু সাংগঠনিক কাজকে এগিয়ে নিতে নেতৃত্বের প্রয়োজন। বিশেষ করে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে নেতৃত্ব থাকা দরকার। কমিটি থাকলে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষের প্রার্থীর জন্য ভোট চাইতে সুবিধা হবে। এরই মধ্যে বিএনপির একটি সহযোগী সংগঠন উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কমিটি না থাকায় যুবদল পিছিয়ে রয়েছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে দলকে এগিয়ে রাখতে নির্বাচনের আগে কমিটি ঘোষণা করা দরকার জানিয়ে নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি শাহেদ আকবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে কমিটি থাকলে দলের কাজ আরও গতিশীল হবে।’
নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচন যেহেতু কয়েক মাস পরে। আশা করা যায় এর আগেই কমিটি ঘোষণা হতে পারে।’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই কমিটি আসবে। সৎ, ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন হবে।’
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কমিটির যাচাই-বাছাই প্রায় শেষ। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। আরও কয়েকটি জেলার কমিটিও পরিকল্পনায় রয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ নগর য বদল র ম হ ম মদ শ হ দ প রথম আল ক দল র স ব ক সদস য র কম ট র র জন য পর য য় র কম ট বছর র ব এনপ গঠন ক হওয় য়
এছাড়াও পড়ুন:
‘বৈচিত্র্য’ মূল শক্তি সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের
আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন একজন নারী প্রার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, রাকসুর ৬৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো নারী ভিপি পদে লড়ছেন। এই নারী শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে রাকসু নির্বাচনে লড়ছে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল।
২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন। রাকসুতে সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান। এ প্যানেলে পাহাড়ি, সনাতন ধর্মাবলম্বী, নারী, কবি, সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন ক্লাব সংগঠনের পরিচিত মুখ রাখা হয়েছে। নারী ভিপি প্রার্থীসহ এই বৈচিত্র্য প্যানেলটির ‘মূল শক্তি’ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এ প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়ছেন ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাজন আল আহমেদ ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে সাবেক সমন্বয়ক মাহাইর ইসলাম।
প্যানেলের শক্তিতাসিন খান ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক বিভিন্ন ক্লাব-সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। জিএস প্রার্থী রাজন বিজ্ঞান অনুষদে পরিচিত মুখ। এজিএস মাহাইর সাবেক সমন্বয়কের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে কবি ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত। এ ছাড়া প্যানেলে তিনজন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্যকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শীত কুমার ওরাং, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অমিত তঞ্চঙ্গ্যা, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যা।
শীত কুমার ওরাং একজন সংগ্রামী মানুষ। তিনি চা–শ্রমিক ছিলেন। ভালো ফুটবলার হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন গোপাল রায়। গোপাল ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ, তিনি শিল্প-সাহিত্য চর্চা করেন। প্যানেলে আরও দুজন নারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব করবেন। তাঁরা হলেন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে সামসাদ জাহান ও সহমহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদে নাদিয়া হক। সামসাদও ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ।
এ ছাড়া এ প্যানেল থেকে সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. লাদেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে সরোয়ার জাহান, সহমিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মুনান হাওলাদার, সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে শরিফুল ইসলাম, সহবিতর্ক ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে আর রাফি সিরাজী, সহপরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে এস এম রিজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন ফেরদৌস শরিফ, ইমাম হোসাইন, হাফিজুরুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ আল মুয়াজ।
আরও পড়ুনরাকসু নির্বাচনে বামদের প্যানেলে নারী একজন, শক্তি ‘ধারাবাহিক লড়াই’১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫অপূর্ণাঙ্গ প্যানেলরাকসুর ২৬ পদের মধ্যে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ ১৯টি পদে প্রার্থিতা দিয়েছে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁরা প্রার্থিতা দিতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাকসু নির্বাচনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তোফায়েল আহমেদ। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে তাসিনদের প্যানেল। তোফায়েল বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের সভাপতি ও সায়েন্স ক্লাবের সহসভাপতি।
এ বিষয়ে তাসিন খান বলেন, ‘আমরা যেসব মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা এক জোট হয়েছি, সে রকম মতাদর্শের কাউকে বাকি পদগুলোতে পাইনি। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করতে পারিনি।’
আরও পড়ুনগান, গম্ভীরা, চিঠি—রাকসু নির্বাচনের প্রচারণায় অভিনব যত কৌশল৪ ঘণ্টা আগে