কুষ্টিয়ায় লালন মেলায় এক সাংবাদিককে মারধর করেছে মাদক কারবারিরা। আহত রাজু আহমেদ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১টায় কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় লালন মেলার মাঠে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে তাকে মারধর করা হয়। আহত রাজু অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ঢাকা পোস্ট ও বাংলা এডিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে মেলায় হেলে পড়লো নাগরদোলা, আহত ৫

সাতক্ষীরায় গুড়পুকুর মেলা হচ্ছে না 

আহত রাজু আহমেদ বলেন, ‘‘লালন মেলায় ৩০০টি গাঁজার দোকান বসেছে। সেখানে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করা হয়। লালন মেলার মাঠে সংবাদ সংগ্রহকালে সেখানকার মাদক সিন্ডিকেটের লোকজন আমার ওপর হামলা করে এবং মারধর করে আহত করেছে।’’ এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, ‘‘রাজু লালন মেলার সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় মাদক সিন্ডিকেটের লোকজন তার ওপর হামলা করে এবং মারধর করে আহত করেছে।’’ তারাও এর প্রতিবাদ জানান।

কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু মনি জুবায়েদ রিপন বলেন, ‘‘যারা রাজুকে মারধর করেছে, তাদের দ্রুত আইনের এনে শাস্তি দিতে হবে।’’  

রাজুকে উদ্ধার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা.

হোসেন ইমাম বলেন, ‘‘মারধরে রাজু আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’’ 

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ‘‘সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর

এছাড়াও পড়ুন:

তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার সরিয়ে রাখার চিন্তা

বিগত তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের  আগামী নির্বাচনে দায়িত্বে না রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র  উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

রবিবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কোর কমিটির বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

নতুন ভোটাররা জানে না ভোট কীভাবে দিতে হয়: তসলিম হুসাইন

নবীনবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান রাকসু প্রার্থীর

আলোচনায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি এসেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র  উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।” 

এছাড়া, বৈঠকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার পুনরায় দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 

তিনি বলেন, “কোনো সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

সভায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনি পরিবেশ যেন শান্তিপূর্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকতে হবে। যে কোনো সহিংসতা বা অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। 

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদারে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে থাকবে সিসিটিভি এবং মনিটরিং ব্যবস্থা। বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে পর্যাপ্ত।” 

প্রশিক্ষণের অগ্রগতি তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ ২৮টি ব্যাচে ১৩০টি ভেন্যুতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ব্যাচের ৬,৫০০ সদস্যের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। সব প্রশিক্ষণ ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।” 

আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যেও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জন থাকবেন অস্ত্রসহ এবং বাকি ৪ লাখ ৫০ হাজার জন নিরস্ত্র থাকবেন। আনসার ব্যাটালিয়নের ৩,১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকেও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।” 

সশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহণ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এবারের নির্বাচনে ১ হাজার ১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। এ প্রশিক্ষণ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।” 

সংবেদনশীল পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কতা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে কোনো অস্থিরতা যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিও বর্তমানে শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুর্গাপূজাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে তা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে।” 

মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, “শুধু বাহক নয়, গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।”

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি না দিয়ে কারও এক্সিট নেই: সারজিস আলম
  • মানিকগঞ্জে ৫ লাশ উদ্ধার 
  • জোটে গেলেও শাপলা প্রতীকে নির্বাচন করবে এনএসপি: সারজিস
  • এনসিপি একক অথবা জোটে নির্বাচনে যেতে পারে: সারজিস আলম
  • নিখোঁজের ২ দিন পর ডোবা থেকে প্রবাস ফেরৎ যুবকের মরদেহ উদ্ধার  
  • তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের এবার সরিয়ে রাখার চিন্তা