যশোর শহরের লালদীঘিপাড়ে অবস্থিত বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। আজ সোমবার দুপুরে যশোরের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বর থেকে তাঁরা ঝটিকা মিছিল বের করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ আতিকুর রহমানের (বাবু) নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের দড়াটানায় গিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় নেতা–কর্মীদের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম যশোরে এমন মিছিল হলো। তবে মিছিলের কথা জানেন না বলে জানান যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গোলাম কিবরিয়ার আদালতে আজ ২৫ নেতা–কর্মীর হাজিরার দিন ছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ বলেন, মামলার নিয়মিত হাজিরার অংশ হিসেবে আসামিরা আদালতে হাজিরা দেন। বিচারক তাঁদের হাজিরা মঞ্জুর করেন।

আতিকুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় আমাদের ২৮ দিন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। মিছিলের পর থেকে অজানা অনেক নম্বর থেকে মুঠোফোনে কল আসছে। কেন আওয়ামী লীগের পক্ষে স্লোগান দিয়ে কেন মিছিল করলাম, এটা তারা জানতে চাইছে। নানা ধরনের চাপ আসছে।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেলে যশোর বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় কার্যালয়ের বিভিন্ন মালামাল লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের ৬৩ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন জেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সহসম্পাদক এম এ গফুর। ওই মামলায় আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ