কাজে আসছে না খাগড়াছড়ির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার
Published: 7th, February 2025 GMT
লোকবল না থাকায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রথম শ্রেণির আবহওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি কোন কাজে আসছে না খাগড়াছড়িবাসীর। মাত্র একজন কর্মচারী দিয়ে কোনোমতে চলছে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বৃষ্টিপাত, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, কৃষক ভাইদের কৃষি পূর্বাভাস দেওয়া, আদ্রতাসহ তিন ঘণ্টা অন্তর আবহাওয়ার তথ্য ঢাকা আবহাওয়া অফিসে প্রেরণ ও পার্বত্য অঞ্চলে আবহাওয়া উপযোগী চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে স্থাপন করা হয় এটি।
জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘ ১১ বছরের পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি কেন্দ্রটি। ৮ জন কর্মকর্তা কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র এক জন। বেলুন মেকার রয়েছেন প্রেষণে। তাকে দিয়ে বর্তমানে ৬ ঘণ্টা পর পর আবহাওয়ার বার্তা ঢাকা অফিসে প্রেরণ করা হয়। তার একার পক্ষে এতবড় কেন্দ্রটি চালানো সম্ভব নয়।
২০১৪ সালে আবহাওয়া ভবনের দুটি পাকা ভবন নির্মাণসহ আবহাওয়া পরিমাপক যন্ত্র বসানো হয়। এরপর কেবল উচ্চ পর্যবেক্ষক ও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়। সেই দুইজনও বদলী হয়ে চলে যান অন্যত্র। তবে তারা কবে যোগদান করেছেন, আবার কবে চলে গেছেন তার কোন প্রমাণ পত্রও নেই। জনবল না থাকায় অযত্নে পড়ে আছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও ভবনের আসবাবপত্র। ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে অধিকাংশ যন্ত্রপাতি।
তৎকালীন সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০০৯ সালে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৪ সালে। দীর্ঘ ১১ বছরেও পূর্নাঙ্গভাবে চালু হয়নি কেন্দ্রটি।
দীঘিনালার স্থানীয় সাংবাদিক মো.
একই দাবি করেছেন বোয়ালখালী ইউনিয়সের চেয়ারম্যান চয়ন বিকাশ চাকমা।
এ বিষয়ে জানতে অত্র অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম আবহাওয়া ও ভূ-প্রাকৃতিক কেন্দ্রের উপ-পরিচালক নুরু করিমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কথা বলতে ঊধ্বর্তন কর্মকর্তার অনুমতি নেই। সে কারণে তিনি কোন তথ্য দিতে পারছেন না।
দীঘিনালার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, “দীর্ঘদিন যাবৎ আবহাওয়া অফিসসহ অনেক দপ্তরে কর্মকর্তা নেই। হয়তো শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।”
ঢাকা/রূপায়ন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি প্রতিষ্ঠানটি কি অবহেলায় ধ্বংস হবে
খামার ব্যবসায় এখন আগ্রহী হচ্ছেন অনেক তরুণ উদ্যোক্তা। তাঁদের সাফল্যে বড় সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে সরকারি মুরগি প্রজনন খামার। কিন্তু রাজবাড়ীতে এমন একটি প্রতিষ্ঠান অব্যবস্থাপনা, উদাসীনতা ও পরিকল্পনাহীনতার কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, প্রায় তিন একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ীর সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার একসময় এ অঞ্চলের ডিম, মাংস উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। অথচ এখন তা জরাজীর্ণ অবকাঠামো, জনবলসংকট ও আমলাতান্ত্রিক উদাসীনতায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ১৪ জনের জায়গায় কাজ করেন মাত্র ৫ জন। এ অবস্থায় কোনো সরকারি স্থাপনা টিকে থাকতে পারে না। দুঃখজনক হলো, এই বিপর্যয়ের দায় কেউ নিচ্ছে না, বরং বছরের পর বছর সমস্যা দেখেও চোখ বন্ধ করে আছে কর্তৃপক্ষ।
১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে বন্ধ হয়েছে হ্যাচারি সেবা। এর পর থেকে খামারটি শুধু নামেই ‘প্রজনন’ খামার। কোটি টাকার যন্ত্রপাতি, জেনারেটর, পানির পাম্প থেকে শুরু করে গাড়ি—সবকিছু অব্যবস্থাপনায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শেডগুলো ভেঙে পড়ার উপক্রম, কর্মচারীদের আবাসিক ভবন বসবাসের অনুপযোগী, পানির ট্যাংক ঝুঁকিপূর্ণ, এমনকি পরিত্যক্ত ঘরগুলো এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল।
এদিকে বাজারের তুলনায় কম দামে মুরগির বাচ্চা পাওয়ায় সাধারণ মানুষ এখানে ভিড় করেন। কিন্তু খামারের উৎপাদন সামান্য হওয়ায় অধিকাংশই খালি হাতে ফিরে যান। প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও নিয়মিত বাচ্চা সরবরাহ নিশ্চিত না করলে এই খামার কখনোই পুনরুজ্জীবিত হবে না। অথচ বছরের পর বছর শূন্য পদ পূরণের আবেদন ধুলায় পড়েই থাকে। বরাদ্দ না থাকায় জরাজীর্ণ শেডগুলো সংস্কারও করা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলো শুধু একের পর এক আশ্বাস দিয়ে দায় সারছে। এমনটা চলতে পারে না। জরুরি ভিত্তিতে এই খামারের পূর্ণ সংস্কার, জনবল নিয়োগ, হ্যাচারি আবার চালু এবং নষ্ট যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। রাজবাড়ীর এই গুরুত্বপূর্ণ খামারকে অব্যবস্থাপনার বেদিতে বলি দেওয়া আর চলতে পারে না। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে খামারটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতে আর বেশি সময় লাগবে না।
রাজবাড়ীর এই খামার শুধু মুরগির বাচ্চা উৎপাদনের কেন্দ্রই নয়, স্থানীয় বাজারে মুরগির সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা, দরিদ্র ও মাঝারি কৃষকদের সাশ্রয়ী দামে মুরগির বাচ্চা দেওয়া, যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি—সবকিছুতেই এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সঠিকভাবে চালু হলে এটি জেলার প্রাণিসম্পদ খাতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো আর দেরি না করে বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেবে। যথাযথ সংস্কার, জনবল নিয়োগ ও হ্যাচারি চালুর মাধ্যমে এই খামারকে আবারও লাভজনক ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে।