‘বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানিতে প্লাস্টিকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ’
Published: 12th, February 2025 GMT
পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনাকে বৈচিত্র্যময় করার যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, প্লাস্টিক পণ্য সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘‘বাস্তবতার নিরীখে আমাদের নীতি নির্ধারণ করা দরকার, যার বিনিময়ে আমরা খারাপ প্লাস্টিককে রোহিত করব ও ভালো প্লাস্টিকের সঙ্গে বাস করব। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভালো প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’’
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ৪ দিনব্যাপী ১৭তম ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক, প্যাকেজিং ও প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফেয়ার অনুষ্ঠানে এ তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘২০২৬ সালের নভেম্বরে আমাদের দেশ এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েট হতে যাচ্ছে। এর ফলে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা যে প্রিফারেনশিয়াল অ্যাক্সেস (অগ্রাধিকার সুবিধা) পাই তা থাকবে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইনসেন্টিভও (প্রণোদনা) দিতে পারব না। এক্ষেত্রে পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে; উৎপাদনশীলতা ও পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ে প্রতিযোগিতা সক্ষম হতে হবে। সক্ষমতা না থাকলে দারুণভাবে বিপদে পড়ে যাব।’’
বাংলাদেশ প্লাস্টিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহ-সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন এক্সপোর্ট কমপিটিটিভনেস ফর জবস প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর শেখ মো.
বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন ও হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইওর্কর্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস যৌথভাবে আয়োজন করছে এ মেলাটি। ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক ফেয়ারে ৮০০টিরও বেশি স্টল থাকছে, যেখানে ১৮টি দেশ থেকে ৩৯০টিরও বেশি ব্র্যান্ড অংশগ্রহণ করছে। চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপান, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে এই মেলায়।
ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আয় বেড়েছে ৩৫২ কোটি টাকা, তবু মুনাফা কমল ৯০ কোটি
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানি রেনাটার মুনাফা কমে গেছে। কোম্পানিটি চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) মুনাফা করেছে ১৬৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের চেয়ে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ৯০ কোটি টাকা বা ৩৫ শতাংশ। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রেনাটা ২৫৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।
গতকাল বুধবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। সেই প্রতিবেদন থেকে কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার এ তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও এই সময়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রেনাটা গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছররের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ৩ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার ব্যবসা বা আয় করেছে। এই আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫২ কোটি টাকা বা প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে কোম্পানিটির তাদের ব্যবসা থেকে আয় করেছিল ২ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। আয় যতটা বেড়েছে তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। রেনাটার চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৩ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার ব্যবসা বা আয়ের বিপরীতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ১ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ২ হাজার ৭৮১ কোটি টাকার আয়ের বিপরীতে কোম্পানিটির উৎপাদন খরচ ছিল ১ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৩১৪ টাকা বা ২১ শতাংশ।
এ ছাড়া কোম্পানির পণ্য বিক্রি, উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ এবং ব্যাংকঋণের সুদ বাদ খরচও আগের বছরের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রেনাটার পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩৪ কোটি টাকায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭০৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এই খাতে কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে ১২৫ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রেনাটার সুদ বাবদ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণের সুদ বাবদ কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে ৪৫ কোটি টাকা বা ৫৬ শতাংশের বেশি।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পণ্য বিক্রি, সরবরাহ ও ঋণের সুদ বাবদ খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ জন্য মুনাফা আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে।
চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের আয়–ব্যয়ের হিসাবও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে রেনাটা। তাতে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি ১ হাজার ৬৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে মুনাফা করেছে ৫৬ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ৯২১ কোটি টাকার ব্যবসা করে ৭২ কোটি টাকার মুনাফা করেছিল।
রেনাটা লিমিটেড শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পুরোনো কোম্পানিগুলোর একটি। এটি ১৯৭৯ সালে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত হয়। সেই হিসাবে এটি শেয়ারবাজারে ৪৬ বছরের পুরোনো একটি কোম্পানি। ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে এটি শেয়ারবাজারে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত। সর্বশেষ গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ৯২ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ৯ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছে। ঢাকার বাজারে গতকাল দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৯১ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি যে মুনাফা করেছে তাতে বাজারে এটির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ২৫–এ। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ারবাজারে যে কোম্পানির পিই রেশিও যত কম সেই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ তত বেশি লাভজনক বা কম ঝুঁকিপূর্ণ।