খুপরি ঘরে যন্ত্রণায় কাতরান স্বামী-স্ত্রী
Published: 18th, February 2025 GMT
টিনের বেড়ার একটি খুপরি ঘর। সেই ঘরে যন্ত্রণায় কাতরান অসুস্থ স্বামী-স্ত্রী। ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার কসবা গ্রামের একটি হতদরিদ্র পরিবারে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে ঘরে ছটফট আর কান্না করছিলেন শমসের আলী (৫৯) ও পারভীন বিবি (৪৫) দম্পতি। শমসের ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। সেই টাকায় সংসার চালাতেন। স্ত্রীর স্তন ক্যানসারের চিকিৎসাও এই টাকাতেই যতটুকু পারতেন, তা দিয়ে করতেন। দেড় বছর আগে কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ বাঁ পায়ে আঘাত পান শমসের। সেই আঘাত থেকে পায়ে ক্ষত তৈরি হয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে তা ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
শমসের আলী বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করে বাড়িতে থেকে নিয়মিত পায়ের ক্ষতের ড্রেসিং করছেন। এর পর থেকে তিনি আর কাজ করতে পারছেন না। বাড়িতে বিছানায় দিন কাটছে।
এই দম্পতির দুই মেয়ে। দুজনের বিয়ে হয়ে গেছে। তাঁরা স্বামীর বাড়ি থেকে মাঝেমধ্যে মা-বাবার খোঁজখবর নেন, খাবার পাঠান। কিন্তু চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য তাঁদের নেই।
আলাপকালে পারভীন বিবি বলেন, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁর স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে। সে সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক দ্রুত চিকিৎসা ও কেমোথেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেন। মাত্র দুটি থেরাপি নেওয়ার পরই জমানো টাকা শেষ হয়ে যায়। চিকিৎসাও বন্ধ হয়ে যায়। পরে আর চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিছানার পাশ থেকে চিকিৎসার কাগজপত্র দেখিয়ে কাঁদতে থাকেন পারভীন বিবি। তিনি বলেন, অসহনীয় যন্ত্রণা অনুভব করেন। ব্যথা হলে সহ্য করতে পারেন না। যন্ত্রণায় ছটফট করেন।
অসুস্থ এই দম্পতি জানালেন, দুজনই এখন শয্যাশায়ী। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না।
অসুস্থ এই দম্পতির বিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁদের চিকিৎসার জন্য সামান্য পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়েছে।
শমসের আলী বলেন, প্রতিদিন ওষুধ কেনা, ড্রেসিংসহ দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। তিন বেলা ভালো করে খেতেই পারেন না। এরপর তো চিকিৎসা করাবেন! মৃত্যুর অপেক্ষা করা ছাড়া তাঁদের আর কিছুই করার নেই। তাঁদের সহায়তা করার জন্য দেশের মানুষের প্রতি আকুল আবেদন জানান তিনি।
প্রতিবেশী হাফিজুর রহমান বলেন, পরিবারটির দুর্দশা দেখে চোখে পানি আসে। তাঁদের কান্নাকাটিতে প্রতিবেশীরা ঘরে থাকতে পারেন না। অসুস্থ এই দম্পতির চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের কাছে গেছেন কয়েকবার। অসুস্থ এই দম্পতির জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।