খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে ছাত্রদল জড়িত নয় বলে দাবি করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই দাবি করে ছাত্রদল কুয়েট শাখা। একই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন থেকে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু আফসান মো.

ইয়াহিয়া। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বয়ান, সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ও ছবি, ভিডিও ফুটেজ পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, সে অনুযায়ী গতকালের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি মিছিল থেকে রাহুল জাবেদ, ইফাজ ও ইউসুফ  নামের তিনজন ছাত্রদল সমর্থকের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে।

ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘সেই মিছিলের ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে যখন ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে মিছিলটির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কতিপয় মিছিলকারী তাঁদের দিকে অতর্কিতে তেড়ে গিয়ে হামলা করেন। ভুক্তভোগীদের বয়ান অনুযায়ী, তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ও মারধর করে কুয়েট গেটের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং গেটের কাছে একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেই দোকানদারকেও হেনস্তা করা হয়। এর জবাবে সেই দোকানমালিকের পরিচিত কিছু স্থানীয় লোকজন সেই মিছিলকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালান। দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে, কুয়েটের গেট হয়ে উঠে এক রণক্ষেত্র। ঘণ্টাখানেক ধরে সেই এলাকায় চলে সহিংসতা। সেই সহিংসতায় জড়িত কতিপয় স্থানীয় দলীয় কর্মীকে (যুবদল) ইতিমধ্যেই বহিষ্কার করা হয়েছে বলে আমরা দেখেছি। তবে তাঁদের কেউই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন এবং ছাত্রদলের ইন্ধনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর কোনো কারণও তাঁদের নেই।’

আরও পড়ুনচিকিৎসাধীন ভিসির পদত্যাগের দাবিতে কুয়েট চিকিৎসাকেন্দ্রের বাইরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান১ ঘণ্টা আগে

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া ছাত্রদল নেতারা বলেন, ওই সহিংসতায় ছাত্রদলের সমর্থকেরা কেবল ভুক্তভোগী বলেই এখন পর্যন্ত জানা গেছে। তাঁদের তিনজনই কুয়েটের সম্মান কোর্সের নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং যেহেতু কুয়েটে ছাত্রদলের কোনো কমিটি গঠিত হয়নি এবং এখন পর্যন্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে সদস্য ফরম পূরণ কার্যক্রমও শুরু হয়নি, সেহেতু তাঁরা তিনজন ছাত্রদলের নিবন্ধিত কর্মীও নন। তাই তাঁদেরকে কেন্দ্র করে ঘটা কোনো ঘটনা ‘ছাত্রদলের হামলা’ শীর্ষক ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হবে সর্বৈবভাবে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি কাজ।

আরও পড়ুনথমথমে কুয়েট, রামদা হাতে ভাইরাল যুবদল নেতাকে বহিষ্কার৩ ঘণ্টা আগে

ছাত্রদল নেতারা দাবি করেন, ফরম পূরণ কার্যক্রম শুরু না হলেও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শে উজ্জ্বীবিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত বলে তাঁরাসহ আরও কিছু শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার উদ্দেশ্যে চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত করেন ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারের পেছনে লুকানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতির ধারক–বাহক ইসলামী ছাত্রশিবিরের গুপ্ত কর্মীরা ও ক্যাম্পাসে রয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীরা। ছাত্রদল কুয়েট ক্যাম্পাসে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না করলেও এসব গুপ্ত ষড়যন্ত্রকারীদের ইন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে ওই ‘মব’ মিছিলটির আগের ছাত্রদলের রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে ক্যাম্পাসে বিশাল ব্যানার টানানো হয় এবং মিছিল থেকে বিনা উসকানিতে ছাত্রদলের উল্লিখিত সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, এসব ঘটনা চলাকালে এবং পরে কোনরূপ তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই স্থানীয় জনতার সঙ্গে কুয়েট শিক্ষার্থীদের এই ন্যক্কারজনক সহিংসতাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ছাত্রদলের হামলা’ বলে পুরো ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে যত বেশি তথ্য উন্মোচিত হচ্ছে, তত আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ন্যক্কারজনক এই ঘটনার সত্য রূপ পুরোই ভিন্ন।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, সহসভাপতি হাবিবুল বাশার ও সাফি ইসলাম,  জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুমসহ স্থানীয় খুলনার ছাত্রদলের নেতারা।

আরও পড়ুনকুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দাবি না মানা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা১৫ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র দ র ওপর ঘটন র স র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

তিন বাহিনীর প্রধান ও দুই গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের

তিন সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) প্রধান এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

এ প্রস্তাবের ওপর আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরু হয়েছে।

এর আগে গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে একটি ধারণাপত্র তাঁরা রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছেন। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া কেবল প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে ঐকমত্য কমিশন আরও কিছু নিয়োগে রাষ্ট্রপতির স্বাধীন ক্ষমতার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে।

তিন বাহিনীর প্রধান ও দুই গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগের ক্ষমতার বিষয়টির পাশাপাশি আরও ৯টি নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। অ্যাটর্নি জেনারেল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও সদস্য, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস্ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ও সদস্য।

গতকালের বৈঠক শেষে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, এসব প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর বিবেচনার জন্য দেওয়া হয়েছে। যদি এসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়, তাহলে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তা কার্যকর করতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে কমিশনের আজকের বৈঠকে আলোচনার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ভোট দেব না’—এই ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করতে পারেন নারীরা: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
  • নেতা হতে আসিনি, সেবা করতে মাঠে আছি : মুজাহিদ মল্লিক
  • ছাত্রত্বের ভুয়া পরিচয় দেন সভাপতি, কমিটি ঘোষণার দিন শর্ট কোর্সে ভর্তি হন সম্পাদক
  • তিন বাহিনীর প্রধান ও দুই গোয়েন্দাপ্রধান নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়ার প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের