চট্টগ্রাম মহানগরের বাকলিয়া থানা এলাকার ডাবল মার্ডারে নেতৃত্বদানকারী কুখ্যাত সন্ত্রাসী মো. মেহেদী হাসান প্রকাশ হাসানকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। 

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার অন্তর্গত নলের চরস্থ ভূমিহীন বাজার এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি অস্ত্রসহ এই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আজ রবিবার (৪ মে) দুপুরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। 

বাকলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, বাকলিয়া থানার ডাবল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি এবং হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বদানকারী সশন্ত্র সন্ত্রাসী হাসানকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। 

সর্বশেষ গত ২ মে রাতে নোয়াখালীর হাতিয়ায় এই আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে বাকলিয়া থানার ওসি তদন্ত মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। এদিন রাত সোয়া ১১টার দিকে হাতিয়া থানার অন্তর্গত নলের চরস্থ ভূমিহীন বাজার এলাকা থেকে আসামি হাসানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। 

গ্রেপ্তারের পর আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন পশ্চিম শহীদ নগর সুবহান কন্ট্রাকটরের বাড়িস্থ মেহেদী হাসানের বসত ঘরের ভিতরে অভিযান পরিচালনা করে ডাবল মার্ডারে ব্যবহৃত ২টি ম্যাগাজিন, ২টি গুলিসহ ১টি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। 

প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ দিনগত রাত দুইটার দিকে বাকলিয়া থানার এক্সেস রোড এলাকায় প্রাইভেটকারে এলোপাতাড়ি গুলি করে মো.

আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও মো. বখতিয়ার হোসেন ওরফে মানিক নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। 

এ ঘটনায় ১ এপ্রিল নিহত মোহাম্মদ মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী শারমিনসহ পাঁচজনকে এজাহারনামীয় আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ জানায়, এই আসামির বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, মাদক ও হত্যা সংক্রান্তে মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। উক্ত বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ড বল ম র ড র ব কল য়

এছাড়াও পড়ুন:

চবির বিশেষ ভোজের টোকেনে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ‘অতিথি’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আবাসিকদের শিক্ষার্থী বলা হচ্ছে এবং অনাবাসিকদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, আবাসিকদের জন্য টাকার পরিমাণ কম ধরলেও অনাবাসিকদের জন্য বেশি ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ফরহাদ হোসেন হলে উন্নত ভোজের টোকেন আবাসিকদের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। অপরদিকে, অতিথিদের জন্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা; এই অতিথিরা হলেন হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। শামসুন নাহার হলে আবাসিকদের জন্য ৮০ টাকা, অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা। মিল পদ্ধতি চালু থাকা আমানত হলে আবাসিকদের জন্য ফ্রি হলেও অনাবাসিকদের জন্য ৭০ টাকা। তবে সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্যই ১৫৫ টাকা ধরা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন

চবিতে বিপ্লবী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ

এদিকে, বিজয়-২৪ হলের প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্য ৮০ টাকা উল্লেখ করলেও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থার কথা জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিফ মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের ফিস্ট নিয়ে হলে হলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে, সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক আলাদা করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, প্রশাসনদের ছাত্র বা সন্তান কি শুধু আবাসিকরা? আমরা যারা অনাবাসিক, তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ে এসেছি?”

তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা আমাদের হলে সিট দিতে পারেননি, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয় বন্ধ করুন। আয়োজন করলে সবার জন্য সমান করে আয়োজন করুন। আর সেটা না পারলে আয়োজন বন্ধ করুন।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম শাহ ফেসবুকে লেখেন, “কোনো একটা বিশেষ দিন এলেই দেখা যায়, হল প্রশাসনগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দাঁড় করানোর ভণ্ডামি। ৫ তারিখে আয়োজনকে ঘিরে তারা আবার সেই অতিথি টার্ম সামনে নিয়ে আসছে। ফরহাদ হলে অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজনের টোকেন আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা এবং অতিথিদের জন্য ১৭০ টাকা। বাকি হলগুলোতে বোধহয় তাই করেছে। কিন্তু এই অতিথিগুলোও তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।”

তিনি বলেন, “বাহির থেকে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসবে, তাদের থেকে ৭০ টাকা করে বেশি না নিলে তো হল প্রশাসন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে না। আর আপনাদের যদি সামর্থ্য নাই থাকে, কাউকেই খাওয়ায়েন না। কিন্তু ৫ আগস্টের দিনকে কেন্দ্র করে করা অনুষ্ঠানে প্রিভিলেজড-আনপ্রিভিলেজড বিষয়টা জিইয়ে রাখাটা নিতান্ত নোংরামি লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত।”

এ বিষয়ে শহিদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “এ সিদ্ধান্তটি শুধু ফরহাদ হলের জন্য নয়, অন্যান্য হলেও এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। মূলত উন্নত ভোজের আয়োজনটি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে। তারপরেও কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী বা কারো বন্ধুবান্ধব অংশ নিতে চাইলে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে সব হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ