সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বে মোজাম্মেল-আকাশ
Published: 4th, May 2025 GMT
মোজাম্মেল হককে আহ্বায়ক ও আকাশ আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ রোববার ২১তম সম্মেলন শেষে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
গতকাল শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সত্যেন বোস পাঠাগারে ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিদায়ী সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিকের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী। কাউন্সিল শেষে ১১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন সাদেকুল ইসলাম।
নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যরা সদস্য পদে আছেন। তাঁরা হলেন মতিয়ার রহমান, রাজেকুজ্জামান জুয়েল, আহমেদ আরাফ, আসাদুজ্জামান আসাদ, মো.
কাউন্সিলে ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস রয়েছে। এসব লড়াইয়ে সংগঠন হিসেবে ছাত্র ফ্রন্ট শিক্ষার্থীদের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে ছিল। বিভিন্ন বিভাগে বাণিজ্যিক সান্ধ্য কোর্স বাতিলের আন্দোলন, ধর্ষণ-নিপীড়নবিরোধী আন্দোলন, ‘গুজরাটের কসাইখ্যাত’ নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনবিরোধী আন্দোলন, গণরুম-গেস্টরুমে নির্যাতনের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে ছাত্র ফ্রন্ট সোচ্চার ছিল। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে এই সংগঠন কর্মসূচিতে ভূমিকা রাখে। জাতীয় শিক্ষাক্রম বাতিল আন্দোলনে সংগঠনের ভূমিকা অনবদ্য।
সালমান আরও বলেন, গত বছর কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন, যা পরবর্তী সময়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপান্তরিত হয়, এতেও ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ, আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদ, সীমান্ত হত্যা বন্ধের আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সংগঠনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস, শিক্ষার অধিকার ও মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রামে ছাত্র ফ্রন্ট তার কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত র ফ রন ট র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
কেন শুধু দেখা আর অপেক্ষায় রাশিয়া
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। সশস্ত্র সংঘাতের কারণে অশান্ত দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার মানুষ। কিন্তু এবার ঝুঁকি আরও বেশি। ইসরায়েল নিজেকে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে ফেলেছে। কোনো প্রক্সি বা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে নয়, এবারের সংঘাত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ইরানের সঙ্গে।
স্পষ্ট করে বলতে গেলে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ১৩ জুন শুরু হয়নি। ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দুই দেশ সরাসরি হামলা চালায়। তার আগে কয়েক দশক ধরে তারা মূলত গোয়েন্দা অভিযান, সাইবার আক্রমণ ও আঞ্চলিক প্রক্সিদের সমর্থনের মাধ্যমে ‘ছায়া যুদ্ধ’ পরিচালনা করেছিল। কিন্তু এখন ইসরায়েলের হামলায় সংঘাতটি প্রকাশ্য যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। প্রতি মুহূর্তে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে। এটি ইউক্রেনীয় সংঘাতের মতো হবে না। কারণ, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্ব নেই। তাই স্থল অভিযানের সম্ভাবনা কম। তবে মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র মিত্র হিসেবে পরিচিত ইরানের এ দুঃসময়ে রাশিয়া কেন চুপ আছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। খবর আরটির
পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে মস্কো। তেলের দাম বৃদ্ধি রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হওয়ায় বিশ্বের মনোযোগ ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান থেকে সরে যাবে বলেও তারা ‘নিশ্চিত’। এ ছাড়া তেহরান রাশিয়ার একটি কৌশলগত অংশীদারও এবং ইরানের এই যুদ্ধে থাকা মস্কোর জন্য লাভবান হবে।
ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু হওয়ার পরপরই রাশিয়ার কর্মকর্তারা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির এ পদক্ষেপকে ‘উদ্বেগজনক’ ও ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। রুশ গণমাধ্যমগুলোকে সেই সময় অতটা উদ্বিগ্ন মনে হয়নি। কেউ কেউ তেহরান-তেল আবিব সংঘাতে মস্কোর কী কী লাভ, সেটাও জানাতে শুরু করেছিলেন– বলছে বিবিসি।
সেই সময় রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোর দৃষ্টিতে যা যা ইতিবাচক মনে হয়েছিল, তার মধ্যে আছে– তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, যা রাশিয়ার কোষাগার স্ফীত করবে।
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতারও প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাব গৃহীত হলে রাশিয়া নিজেকে মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী’ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবে। তবুও রাশিয়া কতটা করতে পারবে বা করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। তাই আপাতত, রাশিয়ার সবচেয়ে ভালো পথ হতে পারে ইরানের পাশে থেকে কূটনৈতিক সমর্থন দেওয়া।