মোজাম্মেল হককে আহ্বায়ক ও আকাশ আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ রোববার ২১তম সম্মেলন শেষে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গতকাল শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সত্যেন বোস পাঠাগারে ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিদায়ী সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিকের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী। কাউন্সিল শেষে ১১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন সাদেকুল ইসলাম।

নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যরা সদস্য পদে আছেন। তাঁরা হলেন মতিয়ার রহমান, রাজেকুজ্জামান জুয়েল, আহমেদ আরাফ, আসাদুজ্জামান আসাদ, মো.

ইহ্তেশাম মুহিব, ইয়াসির আরাফাত, তফসিরুল্লাহ, তাজবির আহমেদ ও হৃদয় হাওলাদার।

কাউন্সিলে ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস রয়েছে। এসব লড়াইয়ে সংগঠন হিসেবে ছাত্র ফ্রন্ট শিক্ষার্থীদের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে ছিল। বিভিন্ন বিভাগে বাণিজ্যিক সান্ধ্য কোর্স বাতিলের আন্দোলন, ধর্ষণ-নিপীড়নবিরোধী আন্দোলন, ‘গুজরাটের কসাইখ্যাত’ নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনবিরোধী আন্দোলন, গণরুম-গেস্টরুমে নির্যাতনের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে ছাত্র ফ্রন্ট সোচ্চার ছিল। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে এই সংগঠন কর্মসূচিতে ভূমিকা রাখে। জাতীয় শিক্ষাক্রম বাতিল আন্দোলনে সংগঠনের ভূমিকা অনবদ্য।

সালমান আরও বলেন, গত বছর কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন, যা পরবর্তী সময়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপান্তরিত হয়, এতেও ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ, আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদ, সীমান্ত হত্যা বন্ধের আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সংগঠনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস, শিক্ষার অধিকার ও মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রামে ছাত্র ফ্রন্ট তার কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত র ফ রন ট র স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ