৪ বছরে ২৮ হিট, অমিতাভ-ধর্মেন্দ্র নন, তবে কে এই তারকা
Published: 12th, July 2025 GMT
বলিউডের হিট তারকা বলতেই দিলীপ কুমার, রাজেন্দ্র কুমার, রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, শাহরুখ খান, সালমান খান, আমির খান কিংবা হৃতিক রোশনের নাম প্রথমেই আসে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত টানা ২৮টি সফল ছবি দিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন যিনি, সেই নায়ক ছিলেন আর কেউ নন বিনোদ খান্না।
আড়ালের এক তারকা
সত্তরের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় ট্রেড ম্যাগাজিন ট্রেড গাইডের তথ্য অনুযায়ী, বিনোদ খান্না ওই সময় একটিও ফ্লপ না দিয়ে টানা ২৮টি ছবি হিট করেন। তাঁর কোনো ছবি প্রযোজক বা পরিবেশকের লোকসানের কারণ হয়নি। একক নায়ক বা মাল্টিস্টারার—সব ধরনের ছবিতেই ছিল তাঁর দাপুটে উপস্থিতি। তাঁর হিট সিনেমার মধ্যে আছে ‘ইমতেহান’, ‘পাথর অউর পায়েল’, ‘হাথি কি সাফাই’, ‘লাগাম’, ‘আধা দিন আধি রাত’, ‘খুন পসিনা’, ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’, ‘মুকাদ্দর কা সিকান্দার’, ‘খুন কা বদলা খুন’ ইত্যাদি।
ফ্লপ কীভাবে এড়িয়ে গেলেন
ট্রেড গাইডের মূল্যায়নে যেসব ছবিকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ফেলা হতো, সেগুলোকে ধরা হতো ফ্লপ ছবি হিসেবে। তবে বিনোদ খান্নার তালিকায় এমন কোনো ছবি ছিল না। কোনোটি সুপারহিট, কোনোটি মোটামুটি ব্যবসা করেছে, কিন্তু কোনোটিই ফ্লপ হয়নি। তাঁকে সিনেমায় নিয়ে প্রযোজককে লোকসান গুনতে হয়নি।
অন্য তারকাদের কৃতিত্ব
সমালোচকেরা অবশ্য বলেন, ছবিতে অন্য তারকা থাকলে (বিশেষত অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে) ছবিগুলোয় শুধু বিনোদের কৃতিত্ব দিয়ে পুরো সাফল্য মাপা উচিত নয়। ‘হেরা ফেরি’, ‘মুকাদ্দর কা সিকান্দার’-এর মতো ছবিতে অমিতাভও ছিলেন মুখ্য ভূমিকায়। তবু এই সময়ের মধ্যে কোনো ফ্লপ না থাকা এবং একটানা সফলতা নিঃসন্দেহে বিরল এক রেকর্ড।
অমিতাভের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি?
এ কথা অনস্বীকার্য যে বিনোদ খান্না সত্তরের দশকে অমিতাভ বচ্চনের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলেন। পর্দায় তাঁর ব্যক্তিত্ব, সংলাপ বলার ভঙ্গি ও চরিত্রের পরিপক্বতা দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেনীতে বন্যার পানি কমেছে, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন
ফেনীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতর চিহ্ন।
সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি কমে যাওয়ায় নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা নিজ নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে ঘরে কাঁদা থাকায় স্বাভাবিকভাবে বসবাস শুরু করতে আরও দু-তিনদিন সময় লাগবে। কর্দমাক্ত ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গেছে অনেককে।
এদিকে ফেনী থেকে ফুলগাজী পর্যন্ত যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এখনও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে পরশুরাম সড়কে। যেসব এলাকা থেকে পানি সরে গেছে সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে।
বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হতদরিদ্র, দিনমজুর ও প্রান্তিক কৃষকরা। মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সড়ক গুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া তথ্যমতে জানা যায়, মুহুরী নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমার তিন মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ছাগলনাইয়া পয়েন্টে হরিপুর এলাকা হয়ে মুহুরি নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও দাগনভূঁইয়ার কিছু গ্রাম বেশ কয়েকটি এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
এ দিকে গেল রাতে ফেনী শহরের পেট্রোবাংলা এবং আরামবাগ এলাকায় আবার কিছুটা পানি উঠেছিল। তবে সকালে নেমে গেছে। এ বন্যায় ৩৭ হাজার মানুষ পানিতে নিমজ্জিত ছিল। এখনও সাড়ে চার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। ৫০০০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরেছে। এখনও ৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। উপজেলাগুলোতে ১৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের মধ্যে ২২০০ প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার দেওয়া হয়েছে।
ফুলগাজীর মুন্সিরহাট আলী আজম বিদ্যালয় ও কলেজ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চার দিন পর বের হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বলেন, সরকারি কোনো সহযোগিতা পাননি তিনি।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার সময় আমাদের ঘর পানিতে তলিয়ে ছিল। ৪ দিন পর পানি নেমে গেছে। তবে ঘরে কিছু পানি রয়ে গেছে। সেই পানি সেচে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বন্যার সময় পানির জন্য কোথাও যেতে না পেরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরের দমদমার ওপরে ছিলাম। চিড়া-মুড়ি খেয়ে কষ্ট করে কোনোরকম দিন পার করেছি।’
গোসাইপুর গ্রামের বাসিন্দা খোদেজা আক্তার ও পাখি আক্তার বলেন, ‘বন্যার পানি প্রবেশ করে ঘরের সবকিছু নষ্ট করে ফেলেছে। চারদিন শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করেছি। ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। রান্না করার মাটির চুলা বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়ায় টিনের চুলায় রান্না করছি।’
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বন্যায় সর্বশেষ ১১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজীতে ৬৭, পরশুরামে ২৭, ছাগলনাইয়ায় ১৫, ফেনী সদর ও দাগনভূঞায় দুটি গ্রাম।