গরমে চট্টগ্রাম নগরের আমিন জুট মিল এলাকায় রেললাইন বেঁকে গেছে। প্রাথমিকভাবে সংস্কার করার পর ট্রেন চলাচল শুরু হলেও গতি কমানো হয়েছে। এখন চলাচল করছে ১০ কিলোমিটার গতিতে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রেলওয়ে সূত্র বলছে, পৃথিবীর উপরিভাগে যত তাপমাত্রা থাকে, রেললাইনে তার চেয়ে ১০ বা ১২ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা তৈরি হয়। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়টাতেই রেললাইন বেশি গরম হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, নগরের ষোলশহর ও আমিন জুট এলাকার মধ্যবর্তী অংশে আমিন জুট এলাকায় গরমে প্রায় ২০০ মিটার রেললাইন বেঁকে যায়। বেলা ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর রেলওয়ের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রেললাইন সংস্কারের কাজ শুরু করেন। তবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক সংস্কারের কাজ শেষ হয়। তবে কাল বুধবার পুরোপুরি সংস্কার করা হবে। রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রাম নগরগামী শাটল ট্রেন চলাচল কিছুক্ষণের জন্য ব্যাহত হয়েছিল।

রেলওয়ের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) এ বি এম কামরুজ্জামান আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রথম আলোকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে রেললাইন বেঁকে গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে সংস্কার করা হয়েছে। এখন আপাতত গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল করতে বলা হয়েছে।

রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রেললাইন বেঁকে যাওয়ার খবর পেয়ে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণকক্ষে জানানো হয়। পরে তা সংস্কার করা হয়েছে। এখন ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক আছে। তবে এই পথ দিয়ে ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। রেললাইন বেঁকে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নগরগামী বিকেল পৌনে ৫টার ট্রেন ৫টায় ছেড়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স ক র কর র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ