গ্রীষ্মের তাপদাহে মানুষের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি বাড়ির পোষা প্রাণীরও কষ্ট হয়। নেহাত বোবা প্রাণী বলে তারা কষ্টটুকু প্রকাশ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে পোষা প্রাণীর যত্নে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেকেই বাড়িতে বিড়াল পালেন। গরমে বিড়ালের স্বাস্থ্যের একটু বেশি যত্ন নিতে হবে।
বিড়ালের নিয়মিত গোসল
সাধারণত বিড়ালকে মাসে একবার গোসল করানোই যথেষ্ট। তবে গরমকালে সপ্তাহে একদিন গোসল করানো যেতে পারে। গোসল করানোর সময় বিড়ালের জন্য তৈরি করা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিনগুলোয় বিড়ালকে নিয়মিত ব্রাশ করে দিন। গরম কমাতে ভেজা তোয়ালে দিয়ে বিড়ালের গা মুছে দিতে পারেন। শরীর পরিষ্কার থাকলে বিড়াল এ গরমেও আরাম পাবে।
লোম ছেঁটে দিন
কিছু কিছু বিড়ালের গরম বেশি লাগে। বিশেষ করে লম্বা লোমওয়ালা বিড়াল, বিদেশি বিড়াল, ছোট মুখওয়ালা (যেমন পার্সিয়ান) বিড়াল। গরম এলে এদের লোম ছেঁটে দেওয়াটা উপকারী। এতে তাদের গরম কম লাগবে। চাইলে ট্রিমার ব্যবহার করে নিজে বাড়িতে বসে বিড়ালের লোম ছেঁটে দিতে পারেন। নিজে থেকে সাহস করতে না পারলে আপনার পশু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা বাড়ি এসে বিড়ালের লোম ছেঁটে দেওয়া, নখ কেটে দেওয়া ও কান পরিষ্কার করে দেওয়ার মতো সেবা দেয়।
ভরদুপুরে বাইরে যেতে দেবেন না
অনেকের বিড়াল বাড়িতে থাকে সবসময়, তাদের ক্ষেত্রে এ দুশ্চিন্তা করতে হবে না। যাদের পোষা বিড়াল বাইরে যাতায়াত করে, তারা এ যাতায়াতের সময়টায় বিড়ালের ওপর লক্ষ্য রাখবেন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সূর্যের উত্তাপ থাকে চড়া, এ সময় বিড়ালকে বাইরে যেতে না দেওয়াই ভালো।
পানির অভাব হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন
বিড়াল এমনিতেই পানি পান করতে চায় না। গরমের সময় পানি পান করাটা তাদের জন্য খুব বেশি জরুরি। এ জন্য বিভিন্ন কৌশলে তাকে বেশি বেশি পানি পান করানোর চেষ্টা করুন। যে পাত্র থেকে বিড়াল পানি খায়, সে পাত্রটি পরিষ্কার রাখুন এবং হালকা ঠান্ডা পানি দেওয়ার চেষ্টা করুন।
অনেক সময় বিড়াল পানির কল থেকে পান করতে পছন্দ করে। সে ক্ষেত্রে পানির কল খুব অল্প করে খুলে রাখুন; যাতে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ে এবং আপনার বিড়াল সেই পানি পান করতে উৎসাহী হয়।
শুধু পানি পান করতে না চাইলে পানির সঙ্গে অল্প করে টুনার রস মিশিয়ে দিতে পারেন। এ ছাড়া এ সময়টায় শুকনো খাবারের বদলে ভেজা খাবার দিতে পারেন তাকে। এতে পানির চাহিদা অনেকটা পূরণ হয়।
ঘরের ভেতরে বাতাস চলাচল করতে দিন
পোষা বিড়ালকে আদর করে এয়ার কন্ডিশনারের বাতাসে রাখতে হবে– এমন কোনো কথা নেই। বরং বাড়ির ভেতরে যেন পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে এমন ব্যবস্থা করুন। ফ্যানের বাতাসে বিড়াল আরাম পাবে। খুব বেশি গরম পড়লে ফ্যানের সামনে এক বাটি বরফ রাখতে পারেন, তাতে বাতাস ঠান্ডা হয়ে আসবে।
গরমে বিড়াল অসুস্থ হয়ে পড়লে
মানুষের মতো বিড়ালেরও হতে পারে হিটস্ট্রোক। আপনার যদি মনে হয় বিড়ালটি গরমে অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তার শরীরের তাপমাত্রা বেশি কিনা লক্ষ্য রাখুন। এ ছাড়া যদি খেয়াল করেন বিড়ালটি জিহ্বা বের করে হাঁপাচ্ছে অথবা তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তবে অবশ্যই দ্রুত পশু চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।
সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ন করত প ন কর ব ড় লক ল কর ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’
যে ক্ষণটার জন্য অপেক্ষা ছিল, যে সময়টার জন্য প্রতীক্ষা ছিল তার খুব কাছাকাছি ক্রিকেটাঙ্গন। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম যিনি টেস্ট ক্রিকেটের তিন অঙ্কে পৌঁছতে যাচ্ছেন। ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টেই শততম টেস্টে মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর।
সময় তাই যত ঘনিয়ে আসছে ততই মুশফিকুরকে ঘিরে বাড়ছে উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা ও রোমাঞ্চ। যা ছুঁয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুরের কোচদেরও। যাদের সঙ্গে ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন, তাদের সবার চাওয়া মাইলফলক ছোঁয়া এই সময়টা তিনি উপভোগ করুক প্রাণ খুলে। নিজের আনন্দে খেলুক। শুধু তা-ই নয়, একশ টেস্টেই যেন থমকে না যায় মুশফিকুর ব্যাট। অন্তত এক-দুই বছর তাকে টেস্ট অঙ্গনে দেখতে চান প্রত্যেকে।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের শততম টেস্ট নিয়ে আশরাফুলের উচ্ছ্বাস
লর্ডসে প্রথম, মিরপুরে শততম টেস্ট মুশফিকুর
সোহেল ইসলাম
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘আমাদের দেশে যারা টেস্ট খেলে তাদের টেস্টের সংখ্যা কম। এটা যদি ইংল্যান্ড হইতো বা অস্ট্রেলিয়াতে হতো বা ভারতেরও হতো, ওর যতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, এতদিনে দেড়শ টেস্ট খেলে ফেলতো। সেই হিসাবে ইদানিং আমাদের একটু টেস্ট সংখ্যা বেড়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে। আগে তো অনেক কম হইতো। সেখান থেকে একশটা টেস্ট খেলা মানে বিশাল কিছু।’’
‘‘ওর সফরটা দেখেন আপনি। শুধু একশ টেস্ট বলবেন…ও কতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এমন না যে অযথাই খেলছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিন্তু আপনার পারফর্ম করে খেলতে হয়। আপনি পারফর্ম ছাড়া থাকলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না।’’
‘‘মুশফিকুরকে তার পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে হয়েছে। আমাদের দেশের প্রথম একজন যে একশ টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। এজন্য ও নিজেকে প্রস্তুত রেখেছে। ওই ক্ষুধাটা তার ছিল। ওই জেদটা তার ছিল। আমি আশা করব, যদি দলের চাহিদা থাকে এবং তারও খেলার ইচ্ছা তাহলে যেন আরো খেলা চালিয়ে যায়। আরো বেশিদিন মাঠে থাকে। মানে একশটা টেস্ট যেন শেষ না হয়।’’
মিজানুর রহমান বাবুল
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘মুশফিকুরকে শুভকামনা। একজন পারফেক্ট ব্যাটসম্যান। একজন পারফেক্ট স্পোর্টসম্যান। যাকে আপনি অনুসরণ করলে, যাকে আপনি মেনে চললে, আদর্শ ভাবলে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট যেভাবে চলে, যে ধাঁচে এগিয়ে যায় সেখানে একজনের ক্যারিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে ২০ বছর টিকে থাকা মুশকিল। মুশফিকুর প্রমাণ করেছে যদি আপনার নিবেদন থাকে, ভালো করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি পারবেন।’’
‘‘ব্যাটসম্যান মুশফিকুর সব সময়ই বাংলাদেশ দলের সেরা। মিডল অর্ডারে লম্বা সময় বাংলাদেশকে সার্ভ করেছে। দেখুন তাকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ তাকে রিপ্লেস করতে পারেনি। পারফর্ম করেই সে টিকে আছে এবং খেলে যাচ্ছে। আমি চাই সে সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখুক। এখনো ফিট আছে। অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে। খেলার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এটা হয় না।’’
‘‘শততম টেস্টটায় সেঞ্চুরি লাগবেই, এমনটাই নয়। হলে ভালো। না হলেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। থামলে হবে না। ওর অভিজ্ঞতাটা এই দলের প্রয়োজন এখন। যতদিন খেলতে মন চায় খেলুক। ও তো পারফর্ম না করে আর খেলবে না। তরুণ একজন ক্রিকেটার যদি তার ডেডিকেশন সম্পর্কে জানতে পারে সেটাই হবে বড় পাওয়া।’’
ঢাকা/ইয়াসিন