Samakal:
2025-08-10@03:48:38 GMT

এ সময় পোষা প্রাণীর যত্ন

Published: 6th, May 2025 GMT

এ সময় পোষা প্রাণীর যত্ন

গ্রীষ্মের তাপদাহে মানুষের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি বাড়ির পোষা প্রাণীরও কষ্ট হয়। নেহাত বোবা প্রাণী বলে তারা কষ্টটুকু প্রকাশ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে পোষা প্রাণীর যত্নে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেকেই বাড়িতে বিড়াল পালেন। গরমে বিড়ালের স্বাস্থ্যের একটু বেশি যত্ন নিতে হবে। 
বিড়ালের নিয়মিত গোসল
সাধারণত বিড়ালকে মাসে একবার গোসল করানোই যথেষ্ট। তবে গরমকালে সপ্তাহে একদিন গোসল করানো যেতে পারে। গোসল করানোর সময় বিড়ালের জন্য তৈরি করা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিনগুলোয় বিড়ালকে নিয়মিত ব্রাশ করে দিন। গরম কমাতে ভেজা তোয়ালে দিয়ে বিড়ালের গা মুছে দিতে পারেন। শরীর পরিষ্কার থাকলে বিড়াল এ গরমেও আরাম পাবে। 
লোম ছেঁটে দিন
কিছু কিছু বিড়ালের গরম বেশি লাগে। বিশেষ করে লম্বা লোমওয়ালা বিড়াল, বিদেশি বিড়াল, ছোট মুখওয়ালা (যেমন পার্সিয়ান) বিড়াল। গরম এলে এদের লোম ছেঁটে দেওয়াটা উপকারী। এতে তাদের গরম কম লাগবে। চাইলে ট্রিমার ব্যবহার করে নিজে বাড়িতে বসে বিড়ালের লোম ছেঁটে দিতে পারেন। নিজে থেকে সাহস করতে না পারলে আপনার পশু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা বাড়ি এসে বিড়ালের লোম ছেঁটে দেওয়া, নখ কেটে দেওয়া ও কান পরিষ্কার করে দেওয়ার মতো সেবা দেয়। 
ভরদুপুরে বাইরে যেতে দেবেন না
অনেকের বিড়াল বাড়িতে থাকে সবসময়, তাদের ক্ষেত্রে এ দুশ্চিন্তা করতে হবে না। যাদের পোষা বিড়াল বাইরে যাতায়াত করে, তারা এ যাতায়াতের সময়টায় বিড়ালের ওপর লক্ষ্য রাখবেন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সূর্যের উত্তাপ থাকে চড়া, এ সময় বিড়ালকে বাইরে যেতে না দেওয়াই ভালো। 
পানির অভাব হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন 
বিড়াল এমনিতেই পানি পান করতে চায় না। গরমের সময় পানি পান করাটা তাদের জন্য খুব বেশি জরুরি। এ জন্য বিভিন্ন কৌশলে তাকে বেশি বেশি পানি পান করানোর চেষ্টা করুন। যে পাত্র থেকে বিড়াল পানি খায়, সে পাত্রটি পরিষ্কার রাখুন এবং হালকা ঠান্ডা পানি দেওয়ার চেষ্টা করুন। 
অনেক সময় বিড়াল পানির কল থেকে পান করতে পছন্দ করে। সে ক্ষেত্রে পানির কল খুব অল্প করে খুলে রাখুন; যাতে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ে এবং আপনার বিড়াল সেই পানি পান করতে উৎসাহী হয়। 
শুধু পানি পান করতে না চাইলে পানির সঙ্গে অল্প করে টুনার রস মিশিয়ে দিতে পারেন। এ ছাড়া এ সময়টায় শুকনো খাবারের বদলে ভেজা খাবার দিতে পারেন তাকে। এতে পানির চাহিদা অনেকটা পূরণ হয়। 
ঘরের ভেতরে বাতাস চলাচল করতে দিন
পোষা বিড়ালকে আদর করে এয়ার কন্ডিশনারের বাতাসে রাখতে হবে– এমন কোনো কথা নেই। বরং বাড়ির ভেতরে যেন পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে এমন ব্যবস্থা করুন। ফ্যানের বাতাসে বিড়াল আরাম পাবে। খুব বেশি গরম পড়লে ফ্যানের সামনে এক বাটি বরফ রাখতে পারেন, তাতে বাতাস ঠান্ডা হয়ে আসবে। 
গরমে বিড়াল অসুস্থ হয়ে পড়লে
মানুষের মতো বিড়ালেরও হতে পারে হিটস্ট্রোক। আপনার যদি মনে হয় বিড়ালটি গরমে অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তার শরীরের তাপমাত্রা বেশি কিনা লক্ষ্য রাখুন। এ ছাড়া যদি খেয়াল করেন বিড়ালটি জিহ্বা বের করে হাঁপাচ্ছে অথবা তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, তবে অবশ্যই দ্রুত পশু চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে। 

সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ন করত প ন কর ব ড় লক ল কর ন

এছাড়াও পড়ুন:

নদী খননে বাসিন্দাদের কেউ দিয়েছেন ৫০০, কেউ ১০০ টাকা

কোথাও পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে নদী। কোথাও অবৈধ বাঁধ দিয়ে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ। এমন অবস্থা লক্ষ্মীপুরের ভুলুয়া নদীর। প্রায় ২০ বছর ধরে অনেকটা মৃতপ্রায় এ নদীর খনন চলছে স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থায়নে। বাসিন্দাদের কেউ ১০০, কেউ আবার ৫০০ টাকা করে দিয়েছেন নদীটির খননে।

গত ২৪ জুলাই ভুলুয়া নদীর বাঁধ অপসারণ ও খনন শুরু হয়। রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের আজাদনগর স্টিল ব্রিজ এলাকা থেকে এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে নদী খননের কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে সেখান থেকে কোডেক বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার নদী খননের কাজ চলছে। নদীর এ অংশে সবচেয়ে বেশি পলি জমে রয়েছে এবং বাঁধ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত নদী খনন হয়েছে দুই কিলোমিটারের মতো। পর্যায়ক্রমে ৭৬ কিলোমিটার ভুলুয়া নদীর পুরোটা খননের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

খনন কাজের যাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন, তাঁদের একজন কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল্লাহ খালেদ। তিনি বলেন, ‘শুধু অভিযোগ করে বসে না থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজেরাই কাজ শুরু করব। এলাকার প্রতিটি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ ১০০, কেউ ৫০০, কেউ ১০০০ টাকা করে নদী খননের জন্য দিচ্ছেন। কেউ আবার নদী খননের কাজে শ্রম দিচ্ছেন।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ভুলুয়া নদীর প্রস্থ স্থানভেদে ১০০ থেকে ২০০ মিটার। এটি লক্ষ্মীপুরের রামগতি, কমলনগর ও সদর উপজেলা এবং নোয়াখালীর সদর ও সুবর্ণচর উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর জেলা অংশে নদী রয়েছে ৪০ কিলোমিটার। নদীটি লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার ২০টি ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে।

নুরুল্লাহ খালেদ আরও বলেন, ‘ভুলুয়াকে আমরা আবার জীবিত দেখতে চাই। প্রশাসনের সহায়তা পেলে আরও ভালোভাবে কাজটি এগিয়ে নিতে পারব। আমরা চাই, সরকার আমাদের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করুক। অবৈধ দখলদারদের সরিয়ে দিয়ে নদীর গতি ফিরিয়ে দিক।’

দিনমজুরের কাজ করেন কমলনগরের চর কাদিরা গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিন। নদী খননের কাজে তিনিও ১০০ টাকা দিয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদী বাঁচলে এলাকার উপকার হবে, তিনিও উপকৃত হবেন। এতে জলাবদ্ধতা যেমন কমবে, চাষাবাদ করা যাবে, মাছও মিলবে। তাই যতটুকু পেরেছেন, সহযোগিতা করেছেন।

চর মার্টিন এলাকার বাসিন্দা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘নদীটি খননের উদ্যোগ না নিয়ে বসে থাকলে হয়তো একসময় এটিকে আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো না। তাই আমরা নিজেরাই খনন শুরু করেছি। এলাকার সবাই মিলে যতটুকু পারি করব।’

শুধু অভিযোগ করে বসে না থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজেরাই কাজ শুরু করব। এলাকার প্রতিটি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে। কেউ ১০০, কেউ ৫০০, কেউ ১০০০ টাকা করে নদী খননের জন্য দিচ্ছেন। কেউ আবার নদী খননের কাজে শ্রম দিচ্ছেন।নুরুল্লাহ খালেদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, চর কাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ভুলুয়া নদীর প্রস্থ স্থানভেদে ১০০ থেকে ২০০ মিটার। এটি লক্ষ্মীপুরের রামগতি, কমলনগর ও সদর উপজেলা এবং নোয়াখালীর সদর ও সুবর্ণচর উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর জেলা অংশে নদী রয়েছে ৪০ কিলোমিটার। নদীটি লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার ২০টি ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে।

নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়া ও বাঁধ দেওয়ার কারণে এলাকায় পানিনিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। এতে গত বছরের আগস্ট মাসে লক্ষ্মীপুরে বন্যা ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তা, ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেঘনা নদী অনেক বেশি পলি বহন করে, সে পলিতে ভুলুয়া ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া অসংখ্য স্থানে দখল, স্থাপনা নির্মাণ তো আছেই। যার কারণে আমরা গত বছর লক্ষ্মীপুরে জলাবদ্ধতা দেখেছি। ভুলুয়া নদীর দখল ও জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা করা হয়েছে। সেটি অনুমোদিত হলে কার্যক্রম শুরু করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘নদী খননে স্থানীয় মানুষের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা চেষ্টা করব প্রশাসনিক সহযোগিতার মাধ্যমে উদ্যোগটিকে আরও কার্যকর ও টেকসই করতে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ