নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় আমগাছের ডাল কাটা নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে প্রতিপক্ষের মারধরে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম আবুল কাশেম (৬৫)। আজ বুধবার সকালে উপজেলার কেশারপাড় ক্লাবঘর এলাকায় ওই বৃদ্ধের ওপর হামলা হয়।
নিহত আবুল কাশেম সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় গ্রামের ক্লাবঘর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় মো.

ওয়াসিম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে একটি আমগাছের ডাল কাটা নিয়ে আবুল কাশেমের সঙ্গে এক প্রতিবেশীর ঝগড়া হয়। গ্রামবাসীর মধ্যস্থতা করে দুজনকে শান্ত করেন। এর জেরে ওই প্রতিবেশীসহ কয়েকজন আজ সকাল ছয়টার দিকে আবুল কাশেমের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। আবুল কাশেম তখন স্থানীয় একটি দোকান থেকে নাশতা কিনে ফিরছিলেন।

প্রতিপক্ষের মারধরে তিনি গুরুতর আহত হয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সালমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আবুল কাশেম নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার পর গ্রামে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় মো. ওয়াসিমকে আটক করা হয়।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আমগাছের ডাল কাটা নিয়ে আগের দিনের ঝগড়ার জেরে আবুল কাশেমের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এরপর কাশেমের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় কাশেমের বাম চোখের ওপরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‍মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান। 

তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া

বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত

ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।

তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।

দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।

অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ