বিএনপি বিরোধী হলেও, দলটির সমমনা নাগরিক ঐক্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের সুপারিশে একমত হয়েছে। তবে উচ্চকক্ষের ১০৫ আসনের পাঁচটিতে রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন দেওয়ার সুপারিশে দ্বিমত জানিয়েছে মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য। বুধবার জাতীয় সংসদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম সংলাপে ৩৮টি বিষয়ে দ্বিমত করলেও আজকের আলোচনায় মতপার্থক্য অনেকখানি নিরসন হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে কিছু মৌলিক বিষয়ে একমত হবে বলে প্রত্যাশা করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আলাদা অবস্থান অবশ্যই থাকবে। কিন্তু পাশাপাশি সবাইকে কতগুলো মৌলিক জায়গায় একমত হতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলো কিছু কিছু ছাড় দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
৮ এপ্রিল নাগরিক ঐক্য প্রথম দিনের সংলাপে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ বা আইনসভা গঠনের প্রস্তাবের বিপক্ষে মত দিয়েছিল। এছাড়া ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিলেও পুরোপুরি একমত ছিল না। বুধবার দ্বিতীয় দফা আলোচনার পর নাগরিক ঐক্যের নেতারা বলেছেন, ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে প্রথম দিন আলোচনায় ১১৪টির সঙ্গে একমত হলেও পরে দলীয় ফোরামে আলোচনার পরে ১১৮টিতে একমত হয়েছেন তারা।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার বলেন, নাগরিক ঐক্যের অবস্থান হলো- সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে হলেও ঐকমত্যে পৌঁছানো। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদে একমত হয়েছে নাগরিক ঐক্য। ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিলেও একমত হয়েছে।
সাকিব বলেন, নিম্নকক্ষে বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় নাগরিক ঐক্য। নিম্নকক্ষে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে নানান ধরনের ঝামেলা হয়। স্থিতিশীল সরকার পাওয়া যাবে না। তবে উচ্চকক্ষে অবশ্যই সংখ্যানুপাতিক হারে করতে হবে। উচ্চ কক্ষে ১০৫টি আসনের মধ্যে পাঁচ আসন রাষ্ট্রপতি পূরণ করবেন বলে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, এর পক্ষে নয় নাগরিক ঐক্য।
সংলাপের সূচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কমিশনের আলোচনাই যথেষ্ট নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকেও সহযোগী এবং প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একমত হয়ে জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার। নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, মঞ্জুর কাদির, শাহনাজ রানু ও ফেরদৌসী আক্তার সুমি।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, যে ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে। ১৫ মের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শেষ করতে পারবেন। তারপরই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করবেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না: ন্যাটো
ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে জোট একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বিবিসি বাংলা।
হেগে সামিট চলার সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ন্যাটো মহাসচিব। তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে নেটোর অবস্থানের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, ইরান অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না, এই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই একমত হয়েছে জোটের সদস্যরা।
ন্যাটো মহাসচিব বলেন, পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য মিত্ররা বারবার ইরানকে আহ্বান করেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইরান সেখানে গুরুতরভাবে জড়িত। ইরান এমন ড্রোন সরবরাহ করেছে যা রাশিয়া ইউক্রেনিয়ান বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করতে ব্যবহার করছে।