বাংলাদেশে মাইক্রোসফট চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা
Published: 7th, May 2025 GMT
অলিম্পিয়াড আদলে জাতীয় পর্যায়ে ১০ মে থেকে প্রথমবার মাইক্রোসফট অফিস স্পেশালিস্ট বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপের সূচনা (এমওএস) হবে। রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ক্যাটেগরিতে প্রতিযোগিতা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস প্রফেশনালস, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি রয়েছে প্রতিযোগিতার তালিকায়।
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩০০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবেন। চলছে গ্রুমিং পর্ব। বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ তিন জনকে বিজয়ী করা হবে। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ের জন্য বাছাই করা হবে সেরা ১০ জনকে।
জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবেন মাইক্রোসফট সনদ পাওয়ার সুযোগ। অন্যদিকে, এলএস (লং লিস্টেড) প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা তিন জন জায়গা পাবে গালা রাউন্ডে। তার আগে হবে বিশেষ গ্রুমিং পর্ব। চূড়ান্ত বিজয়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। পুরস্কার হিসেবে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র সফর ও ২০ লাখ টাকা প্রাইজমানি । বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ীর পাবেন যথাক্রমে আট হাজার, চার হাজার ও দুই হাজার ডলার।
ব্যক্তিগত ইমেইল ও ফোন নম্বর দিয়ে ক্যারিয়ার গঠনের ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ভি-টিউটরের ওয়েবে নিবন্ধন করে বাংলাদেশের ১৩ থেকে ২২ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। অংশগ্রহণকারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকলেও নিবন্ধন ফি হিসেবে ৩০০ টাকা দিতে হবে। দ্বিতীয় রাউন্ড শেষ হবে ২১ মে। জাতীয় রাউন্ড হবে ২৩ মে। চূড়ান্ত পর্ব হবে ২৪ মে।
বুধবার সকালে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত উপস্থাপন করেন ভি টিউটরের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চিফ লার্নিং অফিসার কাজী শামীম। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোশতাক জহির প্রতিযোগিতার লোগো উন্মোচন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ (এমডিপি) চেয়ারম্যান ড.
তরুণ প্রজন্মকে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে ডিজিটাল দক্ষতায় পারদর্শী ও বৈশ্বিক মানের করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোশতাক জহির বলেন, তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগসূত্রে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ভবিষ্যতে শিক্ষাগত যোগ্যতার তুলনায় দক্ষতাকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে। এআই প্রযুক্তির মতো ভবিষ্যতমুখী সফটস্কিল রপ্ত করতে হবে। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে সব সময় এমন উদ্যোগের পাশে থাকব। ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান ও উচ্চশিক্ষার জন্য তরুণদের বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জনে ডিজিটাল দক্ষতায় প্রস্তুত ও সার্টিফাইড করা প্রয়োজন,যা বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে গ্লোবাল আইটি প্রতিযোগিতায় নেতৃত্ব দিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেদোয়ান হক বলেন, ৩৭তম বিসিএসে এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়, যা ব্রুনাইয়ের জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। এমন প্রবণতা আমাদের জনশক্তিকে অকার্যকর করে তুলছে। নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে আমাদের, বদলাতে হবে চিন্তাধারা।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের ডিন ড. ওয়াসিফ রেজা বলেন, দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ দৃশ্যমান পরিবর্তন আনবে। তরুণদের প্রযুক্তি খাতে সুদক্ষ করে গড়ে তোলার পথে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
মেঘনা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কাজী মোহাম্মদ মোহিউদ্দিন বলেন, বর্তমান পৃথিবীতে শুধু জ্ঞান নয়, দক্ষতা বা স্কিলস সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তরুণরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে।
চিফ ইয়ুথ অ্যাডভাইজার কাজী মুস্তাক জহির বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত বড়দের জন্য ৫০ হাজার ও ছোটদের জন্য দুই লাখের বেশি প্রযুক্তিভিত্তিক ইভেন্ট আয়োজন করেছে। তরুণরাই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। তারাই আগামী দিনের প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটাবে। যার জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট ইউন ভ র স ট য় পর য য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)