নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও হামলার অভিযোগে দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে তাদের জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নড়াইল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা আউড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম পলাশ, মুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও মুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী, আউড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন  আ’লীগ নেতা পলাশ মোল্যা এবং শেখহাটি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন।

জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট নড়াইল শহরের সীমাখালী-ফেরীঘাট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার একটি মিছিলে গুলি, বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি মামলা হয়।

মামলায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাসহ এজাহারভুক্ত ৯০ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় এজাহার নামীয় চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নড়াইল সদর থানার ওসি মো.

সাজেদুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় এজাহার নামীয় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত গ র প ত র কর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে রাতভর অবস্থান এবং মিন্টো রোডের মোড়ে মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভের পর গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত তাঁরা ‘শাহবাগ ব্লকেড’-এর ঘোষণা দিয়েছেন।

একই দাবিতে আজ শনিবার বেলা তিনটায় শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সারা দেশের জুলাই অভ্যুত্থানের স্থানগুলোতেও গণজমায়েত কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনের উদ্যোক্তারা বলেছেন, শাহবাগ থেকে তাঁদের ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থান পর্ব’ শুরু হবে।

গতকাল রাতেও শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। নানা স্লোগান ও বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বানে গত বৃহস্পতিবার রাতে যমুনার সামনে অবস্থানের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। ওই রাতে ও গতকাল শাহবাগের কর্মসূচিতে ইসলামী আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। আছেন ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, খেলাফত ছাত্র মজলিস, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও।

এই বিক্ষোভ চলার মধ্যেই গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনটি দাবির কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। দাবিগুলো হচ্ছে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে এবং জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। এরপর এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ অনেকেই একই পোস্ট দিয়েছেন।

পরে নাহিদ ইসলাম আরেকটি পোস্টে লিখেছেন, শাহবাগের অবস্থান চলমান থাকবে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্লকেড চালু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ আবারও ঢাকা শহরে মার্চ করবে।

এদিকে গতকাল রাত ১১টার দিকে শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচি থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দফা দাবি তুলে ধরে গণজমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, তিন দফা দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আগামীকাল শনিবার (আজ) বেলা তিনটার দিকে শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি পালন করা হবে।

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, সারা ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি যাঁরা আওয়ামী লীগের নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন; পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের স্বজন; মোদিবিরোধী আন্দোলনের শিকার যাঁরা হয়েছেন—সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শাহবাগে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় তিনি সারা দেশে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিটি পয়েন্টেও (স্থান) গণজমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় শাহবাগে সড়ক অবরোধ চলছিল। সেখানে এলইডি স্ক্রিনে জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হচ্ছিল। এর ফাঁকে ফাঁকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে শাহবাগ চত্বরে বিজ্ঞাপন বোর্ডের নিচে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন এনসিপির নেতারা। অন্য দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরাও আলাদা জায়গায় অবস্থান করে স্লোগান দেন। তার আগে সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা সড়কের ওপর মাগরিবের নামাজ আদায় করেন।

বিক্ষোভে ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘এই মুহূর্তে ব্যান চাই, আওয়ামী লীগের ব্যান চাই’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভকারীদের হাতে জাতীয় পতাকাসহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিসংবলিত পোস্টার দেখা যায়। অনেকে মাথায় জাতীয় পতাকা, কেউ কেউ কালেমাখচিত পতাকা বেঁধে এসেছেন। অনেকের হাতেই ছিল কালেমা লেখা পতাকা। ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাথায় সংগঠনের নাম লেখা পতাকা বাঁধা ছিল।

মুফতি মুহাম্মদ জসিমুদ্দিন রহমানী, আসিফ আদনান, ডা. মেহেদী ও তাঁদের অনুসারীদেরও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে মাইকে বক্তব্য চলছে। সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ মাহমুদুর রহমান খানের স্ত্রী মরিয়ম খানম বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা আমাদের প্রাণের দাবি।’

রাত নয়টার দিকে শাহবাগে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে দেরি করলে শুধু শাহবাগ নয়, সারা বাংলা ব্লকেড করে দেবেন তাঁরা। তিনি সরকারের কাছে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশেরও দাবি জানান।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী প্রথম আলোকে বলেন, দলের পক্ষ থেকে নয়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সাধারণ জনতা হিসেবে তিনি শাহবাগে এসেছেন।

শাহবাগ অবরোধ

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট পথনকশা ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। রাত ১০টার পর থেকে তাঁর নেতৃত্বে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে হাসনাতের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির কিছু নেতা-কর্মী যোগ দেন।

পরে রাত একটার দিকে মিছিল নিয়ে যমুনার সামনে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাঁদের সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও ছিলেন। রাত একটার পর হেফাজতে ইসলামের বেশ কিছু নেতা-কর্মী যমুনার সামনে যান। রাত দেড়টার দিকে এবি পার্টির কিছু নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। রাত দুইটার দিকে যান ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা।

যমুনার সামনে রাতভর বিক্ষোভ চলার পর গতকাল সকালে সেখানে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সকাল সাড়ে আটটার দিকে যমুনার সামনে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঘোষণা দেন, জুমার নামাজের পর যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার (মিন্টো রোডের মোড়) সামনে বড় জমায়েত করা হবে।

এ ঘোষণা দেওয়ার সময় জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের নেতা-কর্মীরা হাসনাত ও নাসীরুদ্দীনের সঙ্গে ছিলেন। এ ঘোষণার পর পাঁচটি পিকআপ ভ্যান একত্র করে মঞ্চ তৈরি করা হয়।

দুপুর ১২টার দিকে যমুনার সামনে থেকে মঞ্চের সামনে চলে আসেন আন্দোলনকারীরা। জুমার নামাজের পর থেকে মুসল্লি এবং বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মঞ্চের সামনে জড়ো হতে থাকেন। মঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। বেলা ২টা ৪০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমেই পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আশরাফ উদ্দীন মাহাদী।

এরপর ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর বক্তব্য দেন। ইসলামী যুব মজলিসের সভাপতি তাওহীদুল ইসলাম তুহিনসহ আরও কয়েকজন তরুণ নেতার বক্তব্যের পর বিভিন্ন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্য শুরু হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা কীভাবে পালিয়ে যাচ্ছে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেই প্রশ্ন রাখেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন। তিনি বলেন, তাঁরা প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার শেষে এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিচারের পর একটি সুন্দর-সুষ্ঠু নির্বাচন চান। তাঁরা আগে স্থানীয় নির্বাচন এবং তার পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, আওয়ামী লীগকে যত দিন নিষিদ্ধ না করা হবে, তত দিন তাঁরা ঘরে ফিরে যাবেন না।

‎এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সর্বদলীয় সভা ডাকুন। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিকভাবে, সর্বাত্মকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বাংলাদেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে খোকন চন্দ্র বর্মণ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই।’

জমায়েতে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষকে প্রচণ্ড গরমে কিছুটা স্বস্তি দিতে ভ্রাম্যমাণ গাড়ি ও ট্যাংকে করে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছিল ঢাকা ওয়াসা। বেলা তিনটা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্প্রে ক্যাননে করে কর্মসূচিস্থলে পানি ছিটানো হয়। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে অস্থায়ী মেডিকেল বুথও প্রস্তুত ছিল।

সমাপনী বক্তব্যে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই রাজনৈতিক দল নয়। ইতিহাসের স্তরে স্তরে আওয়ামী লীগের হাতে রক্ত লেগে রয়েছে।...ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবিদদের প্রতি আমাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা রয়েছে। আপনাদের দীর্ঘ দেড় দশকের লড়াই-সংগ্রামকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। একই সঙ্গে এই জিনিসটি আপনাদের কাছে আহ্বান, আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টারটা ৫ আগস্ট ক্লোজ হয়ে গেছে, এটাকে রি-ওপেন করার চেষ্টা কইরেন না।’

হাসনাত আবদুল্লাহ ঘোষণা দেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত তাঁরা শাহবাগে অবস্থান করবেন। এখান থেকে দ্বিতীয় অভ্যুত্থানপর্ব শুরু হবে। গতকাল বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে হাসনাতের এ ঘোষণার পর শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে রওনা হন বিক্ষোভকারীরা। বিকেল পৌনে পাঁচটার পর শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়।

ঢাকার বাইরে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত ও গতকাল চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, কুমিল্লা, নড়াইল, কুড়িগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর এবং রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম নগরে এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন, ছাত্র মজলিস মিছিল-সমাবেশ করে।

খুলনা নগরের শিববাড়ি মোড়ে গতকাল বিকেল চারটা থেকে ব্লকেড কর্মসূচিতে এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। সিলেটে বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাতভর একই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

রংপুরে গতকাল বেলা দুইটার পর জিলা স্কুল থেকে মিছিল বের করা হয়। এতে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, গণ অধিকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও যুবদলের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া গতকাল বিকেলে কুমিল্লা নগরের পুবালি চত্বরে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী। গতকাল দুপুরে নগরের তালাইমারীর বিজয় ২৪ চত্বরে শিক্ষার্থীরা আবারও বিক্ষোভ করেন। সেখানে সংহতি প্রকাশ করেন হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।

একই দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

এ ছাড়া নড়াইল, কুড়িগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরেও গতকাল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ